শুক্রবার, ৫ই জুলাই ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
২১শে আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চিকিৎসা নিতে নিজেই হাসপাতালে এলো অসুস্থ বানর

ডেস্ক নিউজ

🕒 প্রকাশ: ০৩:৫২ অপরাহ্ন, ৪ঠা সেপ্টেম্বর ২০২৩

#

ছবি: সংগৃহীত

অসুস্থ শরীর নিয়ে সেবা পেতে মানুষ হাসপাতালে যায়, সেটাই স্বাভাবিক ঘটনা। তবে অবাক করার মতো এক ঘটনা ঘটেছে চট্টগ্রাম জেলার সীতাকুণ্ড উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। হাসপাতালটিতে মানুষের মতো করে নিজেই গিয়ে হাজির হয়েছে এক বানর। তাও একবার দুবার না, নিয়ম করে তিনবার হাসপাতালে আসে বানরটি।

বন্যপ্রাণী বানরকে এভাবে চিকিৎসা সেবা নিতে আসতে দেখে চিকিৎসকসহ সবাই বেশ অবাকই হয়েছেন।

শনিবার (২ সেপ্টেম্বর) বিকেলে শরীরের বিভিন্ন স্থানে ক্ষত নিয়ে  প্রথমবার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এলাকায় আসে বানরটি। চিকিৎসকরা তাকে পরম যত্নে প্রাথমিক চিকিৎসা দেন। চিকিৎসা নিয়ে বানরটি হাসপাতাল লাগোয়া বাগানের দিকে চলে যায়।

রবিবার সকালে ফের হাসপাতালে হাজির হয় বানরটি। চিকিৎসকরা ব্যান্ডেজ খুলে আবার নতুন করে বানরটিকে ব্যান্ডেজ দেন। চিকিৎসা শেষে বানরটি আবারও বাগানের দিকে চলে যায়। এখানেই শেষ নয়, সোমবার সকালে ফের হাসপাতালে এসে হাজির বানরটি। উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা নুরুদ্দিন রাশেদ ও স্বাস্থ্যকর্মীরা তৃতীয় দিনের মতো বানরটিকে চিকিৎসাসেবা দেন।

স্থানীয়রা জানান, বেশ কিছুদিন আগে সীতাকুণ্ড বন থেকে একটি বানর লোকালয়ে চলে আসে। প্রায় এক মাস যাবত বানরটি বিভিন্ন জায়গায় দেখা যাচ্ছিল। গত তিন দিন ধরে বানরটি ক্ষত নিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে আসছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. নুর উদ্দিন রাশেদ বলেন, “একমাস আগে বানরটি হাসপাতালের পাশে দৌড়াদৌড়ি করছিল। এরপর আর দেখিনি। গত শনিবার বিকেলে ডিউটি শেষ করে হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় বারান্দায় বানরটি বসে থাকতে দেখি। দেখা যায় তার শরীরে ক্ষত রয়েছে। তখন সঙ্গে সঙ্গে ক্ষত স্থানে ড্রেসিং করে দিলে সেটি চলে যায়। রবিবার বিকেলে ডিউটি শেষে বেরিয়ে যাওয়ার সময় আবারও বারান্দায় প্রাণীটিকে বসে থাকতে দেখি। পরে বানরটির ক্ষত স্থানে ব্যান্ডেজ করে ছেড়ে দিই। সোমবারও বানরটি একইভাবে হাসপাতালে আসে।”

তিনি আরও বলেন, “যন্ত্রণায় কাতর বানরটির শরীরের পেছনের অংশের ক্ষতে পচন ধরছে। কোথাও বৈদ্যুতিক শকে প্রাণীটির এমন অবস্থা হয়েছে বলে ধারণা করছি।”

বন্যপ্রাণীর চিকিৎসার জন্য প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার কার্যালয়ের পশুচিকিৎসকরা এগিয়ে আসেননি বলে অভিযোগ উঠেছে। তারা বলেছে এটি বনবিভাগের দায়িত্ব।

অন্যদিকে বন বিভাগ বলছে, যেহেতু বানর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রয়েছে। সেহেতু পশুচিকিৎসকরা বানরটির চিকিৎসা দিতে পারেন।

জানতে চাইলে সীতাকুণ্ড উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা তাহমিনা আরজু ইউএনবিকে বলেন, “স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে বলা হয়েছে অসুস্থ বানরের প্রাথমিক চিকিৎসা করা হয়েছে। দেখি আমরা কাল গিয়ে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের পক্ষ থেকে পুরোপুরি সুস্থ হতে চিকিৎসা দেওয়া হবে।”

উপকূলীয় বন বিভাগের সীতাকুণ্ড রেঞ্জ কর্মকর্তা কামাল উদ্দিন বলেন, “অসুস্থ প্রাণীর চিকিৎসার বিষয়টি দেখবে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার কার্যালয়। কিন্তু তারা কোনো দায় নিচ্ছে না। প্রাণীটি নিজে থেকে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসছে।”

সূত্র: ইউএনবি

ওআ/

চিকিৎসক হাসপাতাল বন্যপ্রাণী

খবরটি শেয়ার করুন