কথিত আছে, কিশোরগঞ্জের পাগলা মসজিদে মানত করলে মনের বাসনা পূর্ণ হয়। এমন ধারণা থেকেই ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাই এখানে দান করে থাকেন। ঠিক এমনটা আশা করেই প্রতিবন্ধী মেয়ের সুস্থতা কামনায় পাগলা মসজিদের দানবাক্সে প্রার্থনামূলক চিঠি দিয়েছেন এক অসহায় মা।
কিশোরগঞ্জ জেলা প্রশাসক ও পাগলা মসজিদ কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ এবং জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখের উপস্থিতে শনিবার (৯ই ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ৭টায় মসজিদের ৯টি দানবাক্স খুলে ২৩ বস্তা টাকা পাওয়া যায়। বাক্সগুলো খুলে দেখা যায়, সেখানে রয়েছে বৈদেশিক মুদ্রা ও সোনার গয়নাও। এর সঙ্গে মনবাসনা কামনা করে অনেক চিঠিও পাওয়া গেছে।
অনেকগুলো চিঠির মধ্যে একটি চিঠিতে অসহায় এক মা লিখেছেন, ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম। হে আল্লাহ রাব্বুল-আলামিন তুমি আমার মেয়ে আলিশা ইসলামকে সুস্থ করে দাও। হে আল্লাহ তুমি তাকে বসার তৌফিক দাও। হাঁটার তৌফিক দাও। তুমি তার চোখের সমস্যা, মাথার সমস্যা ভালো করে দাও। হে আল্লাহ, তুমার কাছে আমি আমার মেয়ের সুস্থ জীবন ভিক্ষা চাই, আর ৫টা বাচ্চার মতো আমার মেয়ে যেনো স্বাভাবিক থাকে। তুমি আল্লাহ আমাকে সন্তান দান করছো তার জন্য শুকরিয়া। আলহামদুলিল্লাহ।’
উল্লেখ্য, প্রতি তিন মাস পরপর পাগলা মসজিদের দান বাক্সগুলো খোলা হয়। শনিবার সেগুলো খোলার পর বাক্সগুলোয় পাওয়া ২৩ বস্তা টাকা এখন গণনার কাজ চলছে। এতে প্রায় ২২০ জনের একটি দল অংশ নিয়েছে। দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত ৩ কোটি ২৫ লাখ টাকা ব্যাংকে জমা দেয়া হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, এবার আগের সব রেকর্ড ভেঙে টাকা প্রাপ্তির নতুন রেকর্ড হবে।
এর আগে চলতি বছরের ১৯ আগস্ট মসজিদের আটটি দানবাক্স খোলা হয়েছিল। তখন ২৩ বস্তায় রেকর্ড ৫ কোটি ৭৮ লাখ ৯ হাজার ৩২৫ টাকা ছাড়াও বৈদেশিক মুদ্রা, সোনার গয়না ও হীরা পাওয়া গিয়েছিল। তার আগে ৬ মে রমজানের কারণে চার মাস পর দানবাক্স খোলা হয়েছিল। তখন ১৯টি বস্তায় রেকর্ড ৫ কোটি ৫৯ লাখ ৭ হাজার ৬৮৯ টাকা ছাড়াও বৈদেশিক মুদ্রা, সোনার গয়না ও হীরা পাওয়া যায়। এছাড়া চলতি বছরের ৭ জানুয়ারি ৩ মাস ১ দিন পর দানবাক্স খুলে ২০টি বস্তায় ৪ কোটি ১৮ লাখ ১৬ হাজার ৭৪৪ টাকা ছাড়াও বৈদেশিক মুদ্রা, সোনার গয়না ও হীরা পাওয়া যায়।
ওআ/
খবরটি শেয়ার করুন