সোমবার, ২৩শে ডিসেম্বর ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
৯ই পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

প্রতিষ্ঠিত হলো মেডিকেল রিপ্রেজেন্টেটিভদের ট্রেড ইউনিয়ন করার অধিকার

নিজস্ব প্রতিবেদক

🕒 প্রকাশ: ০১:১৬ অপরাহ্ন, ২রা ডিসেম্বর ২০২৩

#

সম্প্রতি এক রিট পিটিশনের রায়ে বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠিত হলো মেডিকেল রিপ্রেজেন্টেটিভদের ট্রেড ইউনিয়ন করার অধিকার। বাংলাদেশের অর্থনীতিতে ঔষধ শিল্প একটি লাভজনক ও সফল শিল্প হিসেবে ভূমিকা পালন করে আসছে। বাংলাদেশ ঔষধ শিল্প সমিতির এক তথ্য মতে, ঔষধ শিল্পে যারা কাজ করেন তাদের মধ্যে  প্রায় ৬৫ শতাংশ কর্মচারী হচ্ছেন মেডিকেল রিপ্রেজেন্টেটিভ। সারাদেশে ২৬৯টি ফার্মাসিটিক্যালস কোম্পানিতে আড়াই লক্ষাধিক মেডিকেল রিপ্রেজেন্টেটিভ কর্মরত আছেন। কিন্তু এই বিপুল পরিমাণ শ্রমিক-কর্মচারীর অধিকার আদায়ের জন্য কোনো শ্রমিক সংগঠন কিংবা শ্রম মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিবন্ধিত কোনো ট্রেড ইউনিয়ন ছিল না।

২০২০ সালে বহুজাতিক কোম্পানি সানোফি বাংলাদেশ লিমিটেড (বর্তমানে সাইনোভিয়া ফার্মা) এর  কিছু তরুণ মেডিকেল রিপ্রেজেন্টেটিভ  এবং কর্মকর্তা-কর্মচারী মিলে দেশব্যাপী তাদের একটি নিবন্ধিত ট্রেড ইউনিয়ন গঠন করেন যা "সানোফি বাংলাদেশ লিমিটেড ওয়ার্কার্স-এমপ্লয়িস এসোসিয়েশন" নামে পরিচিত (রেজিস্ট্রেশন নম্বর বি-২২০৭)। এটি বাংলাদেশের ফার্মা ইন্ডাস্ট্রিতে মেডিকেল রিপ্রেজেন্টেটিভদের অধিকার আদায়ের জন্য শ্রম মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রথম কোনো নিবন্ধিত ট্রেড ইউনিয়ন।

তবে ট্রেড ইউনিয়নটিকে এর জন্মের শুরু থেকেই কোম্পানির ম্যানেজমেন্টের রোষাণলে পড়ে নানান ঘাত-প্রতিঘাত ও প্রতিকূলতা পার করতে হচ্ছে। এর মধ্যে ২০২১ সালে সানোফি বাংলাদেশ লিমিটেড তার ব্যবসা বাংলাদেশ থেকে গুটিয়ে নেওয়ার উদ্দেশ্যে অন্য একটি কোম্পানির কাছে তাদের ৫৫% শেয়ার হস্তান্তর করে। এই সময়ে শ্রমিক-কর্মচারীরা যখন নিজেদের অধিকার আদায়ের জন্য আন্দোলন শুরু করেন তখন কোম্পানির ম্যানেজমেন্ট হাইকোর্টের নির্দেশে উক্ত ট্রেড ইউনিয়নটির কার্যক্রমের উপর স্থিতাবস্থা নিয়ে আসেন।

এই অবস্থায় দীর্ঘ আইনি প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে ৩০ নভেম্বর, ২০২৩ বৃহস্পতিবার সানোফি বাংলাদেশ লিমিটেডের মেডিকেল রিপ্রেজেন্টেটিভদের গঠিত উক্ত ট্রেড ইউনিয়নের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে কোম্পানি কর্তৃক দায়েরকৃত একটি রিট পিটিশনের চূড়ান্ত শুনানি শেষে হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি ভীষ্মদেব চক্রবর্তী এবং বিচারপতি মোঃ আক্তারুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত একটি দ্বৈত বেঞ্চ রুল ডিসচার্জ করে দিয়েছেন। অর্থাৎ কোম্পানি কর্তৃক দায়েরকৃত ইউনিয়নের কার্যক্রমের উপর স্থগিতাদেশ উঠিয়ে দিয়েছেন। একইসঙ্গে উক্ত ট্রেড ইউনিয়ন কর্তৃক দায়েরকৃত অপর একটি রিট পিটিশনের রুল অ্যাবসোলিউট করে সংশ্লিষ্ট শ্রম পরিচালককে সাইনোভিয়া ফার্মার যৌথ দরকষাকষি প্রতিনিধি (সিবিএ) নির্ধারণ করার লক্ষ্যে নির্বাচন করার নির্দেশনা দিয়েছেন। এটাকে ফার্মাসিউটিক্যালসের ইতিহাসে একটি যুগান্তকারী রায় এবং এই রায়ের ফলে বাংলাদেশের অবহেলিত ও কোম্পানি কর্তৃক নির্যাতিত মেডিকেল রিপ্রেজেন্টেটিভদের ট্রেড ইউনিয়ন করতে আর কোনো বিধিনিষেধ থাকলো না  বলে জানান সংশ্লিষ্টরা। এর ফলে প্রতিষ্ঠিত হলো মেডিকেল রিপ্রেজেন্টেটিভদের ট্রেড ইউনিয়ন করার অধিকার।

উক্ত মামলাগুলোর পিটিশনকারী (সাধারণ সম্পাদক, সানোফি বাংলাদেশ লিমিটেড ওয়ার্কার্স এমপ্লয়িস এসোসিয়েশন, বি-২২০৭) হিসেবে সঞ্জীব চক্রবর্তী মামলার আইনজীবী ব্যারিস্টার ইউসুফ আলী ও এডভোকেট গোবিন্দ বিশ্বাসের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। পাশাপাশি এই ট্রেড ইউনিয়নের নির্যাতিত ৪৫০ জন সদস্যসহ সহকর্মীদের তার পাশে থেকে শক্তি ও সাহস যোগানোর জন্য কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানান তিনি।

আই. কে. জে/ 

মেডিকেল রিপ্রেজেন্টেটিভ

সুখবর এর নিউজ পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

খবরটি শেয়ার করুন