শিল্পীর কল্পনায় আয়না গ্রহ। ছবি: রয়টার্স
এই প্রথম আয়না গ্রহের সন্ধান পেয়েছেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। এই গ্রহের ওপর পড়া আলো এত বেশি প্রতিফলিত হয় যে গ্রহটিকে মহাশূন্যে ‘বিশাল একটি আয়না’র মতো দেখায়। এ জন্য এটিকে ‘আয়না গ্রহ’ বলা হচ্ছে।
এলটিটি৯৭৭৯বি নামে গ্রহটি সূর্যের মতো এর নক্ষত্রের কক্ষপথে প্রতি ১৯ ঘণ্টায় একবার প্রদক্ষিণ করে। দেখে মনে হয়, টাইটানিয়াম ও সিলিকেট দিয়ে তৈরি ধাতব মেঘ গ্রহটিকে মালা পরিয়ে দিয়েছে।
এই গ্রহ আমাদের মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সিতেই অবস্থিত। পৃথিবী থেকে এই গ্রহের দূরত্ব ২৬৪ আলোকবর্ষ। এই গ্রহের ওপর পড়া আলোর ৮০ শতাংশই এটি প্রতিফলিত করে। এতে গ্রহটি মহাবিশ্বের সবচেয়ে প্রতিফলিত প্রাকৃতিক বস্তুতে পরিণত হয়েছে।
অ্যাস্ট্রোনমি অ্যান্ড অ্যাস্ট্রোফিজিকস জার্নালে এই আবিষ্কারের বিষয়টি প্রকাশিত হয়েছে। এই গবেষণার সহলেখক জ্যোতির্বিজ্ঞানী অধ্যাপক জেমস জেনকিনস বলেন, ‘এটি মহাশূন্যে অতিকায় একটি আয়না।’
পৃথিবীর ব্যাসের চেয়ে এই গ্রহের ব্যাস ৪ দশমিক ৭ গুণ বড়। এটি নিজ নক্ষত্রকে বুধ গ্রহের চেয়েও আরও কাছ থেকে প্রদক্ষিণ করে। আমাদের সৌরজগতে বুধ সবচেয়ে কাছ থেকে সূর্যকে প্রদক্ষিণ করে থাকে। পৃথিবী থেকে সূর্যের যত দূরত্ব, সে হিসাবে এই গ্রহ নিজ নক্ষত্রের ৬০ গুণ নিকটবর্তী।
চাঁদ ছাড়া পৃথিবীর রাতের আকাশে সবচেয়ে উজ্জ্বল বস্তু হলো শুক্র। এটি আমাদের সৌরজগতের সবচেয়ে প্রতিফলিত প্রাকৃতিক বস্তু। এই গ্রহ সালফিউরিক অ্যাসিডের বিষাক্ত মেঘে আবৃত। শুক্র আগত আলোর প্রায় ৭৫ শতাংশ প্রতিফলিত করে। আর পৃথিবী প্রতিফলিত করে প্রায় ৩০ শতাংশ আলো।
নিজ নক্ষত্র থেকে তীব্র সৌর বিকিরণের ফলে এলটিটি৯৭৭৯বির পৃষ্ঠের তাপমাত্রা প্রায় ১ হাজার ৮০০ সেন্টিগ্রেড, যা গলিত লাভার চেয়েও বেশি। এ ধরনের তাপমাত্রায় পৃথিবীর মতো জলবাহী মেঘের বায়ুমণ্ডল অনেক আগেই উধাও হয়ে যেত।
আরো পড়ুন: সৌরজগতের বাইরে গ্রহের সন্ধান দিল কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা
গবেষকেরা মনে করছেন, এই গ্রহের মেঘগুলো টাইটানিয়াম ও সিলিকেটের সংমিশ্রণে তৈরি ধাতব। এ দুটি উপাদানেই পৃথিবীর ভূত্বকের বেশির ভাগ শিলা তৈরি।
অধ্যাপক জেনকিনস বলেন, ‘এমনকি আমাদের ধারণা, এসব মেঘ ড্রপলেটে পরিণত হতে পারে এবং গ্রহটির বায়ুমণ্ডলের কিছু অংশে টাইটানিয়াম বৃষ্টিও হয়ে থাকতে পারে।’
সূত্র: দ্য টেলিগ্রাফ, যুক্তরাজ্য
এম এইচ ডি/
সৌর জগত মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সি জ্যোতির্বিজ্ঞানী সূর্য নক্ষত্র মেঘ টাইটানিয়াম
খবরটি শেয়ার করুন