ছবি: সংগৃহীত
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরাইলের বর্বর বোমাবর্ষণের প্রতিবাদে ও নিপীড়িত ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি প্রকাশে ইন্দোনেশিয়ায় বিক্ষোভ-সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। রাজধানী জাকার্তার এই বিক্ষোভ-সমাবেশে অংশ নিয়েছে দেশটির প্রায় ২০ লাখ মানুষ।
এছাড়া ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি প্রকাশ করে বড় বিক্ষোভ হয়েছে পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদ, যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসি ও জার্মানির রাজধানীবার্লিনেও। ইসরাইল-ফিলিস্তিন সংঘাত শুরু হওয়ার পর থেকেই বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মতো ইন্দোনেশিয়ায় নিয়মিত বিক্ষোভ-প্রতিবাদ অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
এরই ধারাবাহিকতায় রোববার (৫ নভেম্বর) দেশটির রাজধানী জাকার্তার ন্যাশনাল মনুমেন্ট (মোনাস) চত্বরে বিক্ষোভ-সমাবেশ আয়োজন করা হয়। এটা ছিল গত এক মাসের মধ্যে সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ-সমাবেশ।
পর্যবেক্ষক ও আয়োজকরা বলছেন, সকালেই লোকে লোকারণ্য হয়ে ওঠে জাকার্তার মোনাস চত্বর। এই বিক্ষোভে অন্তত ২০ লাখ মানুষ অংশ নেয়। বিক্ষোভ-সমাবেশের বেশ কিছু ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে রীতিমতো ভাইরাল হয়ে গেছে।
স্ট্রেইট টাইমসের প্রতিবেদন মতে, প্রধানত সাদা পোশাক ও ফিলিস্তিনি স্বাধীনতা আন্দোলনের প্রতীক সাদা-কালো রঙের কুফিয়াহ পরে ইন্দোনেশীয়রা এই বিক্ষোভ-সমাবেশে অংশ নেয়।
এ সময় তাদের হাতে ছিল ফিলিস্তিনের পতাকা ও নানা প্রতিবাদী বক্তব্য ও স্লোগান লেখা ব্যানার-প্ল্যাকার্ড। গাজা অবরোধ ও ইসরাইলি হামলা বন্ধের দাবি জানিয়ে তারা ‘আল্লাহু আকবার’ ও ‘ফ্রি প্যালেস্টাইন’ স্লোগান দেয়।
মোনাস স্কয়ার তথা ন্যাশনাল মনুমেন্ট চত্বরে বিশাল মঞ্চ তৈরি করা হয়। এছাড়া বিক্ষোভ-সমাবেশের পুরো এলাকাজুড়ে বসানো হয় বড় বড় টিভি স্ক্রিন। সেসব স্ক্রিনে দেখানো হয় গাজায় ইসরাইলের নির্বিচার ও বর্বর হামলা ও ফিলিস্তিনিদের হত্যাযজ্ঞের দৃশ্য।
বিক্ষোভ-সমাবেশ বক্তব্য রাখেন দেশটির মুসলিম নেতারা। তারা অবিলম্বে গাজায় হামলা বন্ধ, ফিলিস্তিনে ইসরাইলের যুদ্ধাপরাধ তদন্তের পাশাপাশি ইসরাইলি পণ্য বয়কটের ডাক দেন।
এ সময় পুরো এলাকাজুড়ে ধ্বনিত হয়, ‘ইসরাইলিরা নিপীড়ক, তাদের বিরুদ্ধে লড়াই কর’ স্লোগান। আরও শোনা যায়, ‘ফিলিস্তিনিদের পাশে আছে ইন্দোনেশিয়া’।
শান্তিপূর্ণ এই বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করে দেশটির সর্বোচ্চ ইসলামি কর্তৃপক্ষ ইন্দোনেশিয়ান উলেমা কাউন্সিল। এতে অন্যান্য মুসলিম সংগঠনগুলোর পাশাপাশি বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান ধর্মীয় সংগঠনগুলোও অংশ নেয়।
গত এক মাসেরও বেশি সময় ধরে গাজা উপত্যকায় বর্বর হামলা ও হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে আসছে ইসরাইল। তাদের হামলায় এখন পর্যন্ত ৯ হাজার ৫০০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। যাদের অর্ধেকেরও বেশি নারী ও শিশু।
এছাড়া প্রায় ৮ হাজার ৫০০ আবাসিক ভবন ও ৪০ হাজার আবাসন ইউনিট ধ্বংস হয়েছে। এর মধ্যে ৫৫টি মসজিদ, তিনটি বিশ্ববিদ্যালয়, তিনটি গির্জা এবং ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পাঁচটি ভবন রয়েছে।
এছাড়াও ইসরাইলির আগ্রাসনে স্বাস্থ্যসেবা খাতে ১০৫টি চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান, ১৬টি হাসপাতাল, ৩২টি প্রাথমিক চিকিৎসা কেন্দ্র ও ২৭টি অ্যাম্বুলেন্স ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আর ২ লাখ ২০ হাজার অন্যান্য ইউনিটের ক্ষতির পাশাপাশি ৮৮টি সরকারী সদর দফতর এবং ২২০টি স্কুল ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।
এসকে/
খবরটি শেয়ার করুন