ছবি-সংগৃহীত
বিগত বছরগুলোর মতো চলতি বছরেও দুর্গাপূজা উপলক্ষে শুক্রবার (২২ সেপ্টেম্বর) পশ্চিমবঙ্গে গেছে বাংলাদেশের ইলিশ। প্রথম ধাপে কলকাতারে বাজারে পৌঁছেছে ৭০ টন ইলিশ। এসব মাছের ওজন এক কেজি থেকে সোয়া কেজি, সর্বনিম্ন ৮০০ গ্রাম। সাইজ অনুযায়ী, পাইকারি বাজারে প্রতি কেজি মাছের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১ হাজার ৪০০ রুপি থেকে ১ হাজার ৭০০ রুপি।
বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি হওয়া এসব মাছ মিলছে পশ্চিমবঙ্গের অন্যতম বৃহত্তম পাইকারি মাছের বাজার ‘হাওড়া ফিস মার্কেট’- এ। এখান থেকেই খুচরা ব্যবসায়ীদের হাত ধরে পৌঁছে যাবে পশ্চিমবঙ্গবাসির হেঁসেলে। তবে কলকাতার খুচরা মাছ ব্যবসায়ীদের মতে গতবারের তুলনায় ইলিশের দাম অনেকটাই বেশি।
যে ইলিশ গতবার পাইকারি দাম ৮০০-৯০০ টাকা কেজি ছিল। এবার প্রায় দ্বিগুণ। কলকাতার ফিশ ইম্পোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক আনোয়ার মাকসুদ জানিয়েছেন, প্রথমদিন, তাই দাম বেশি। পরবর্তী পর্যায়ে কিছুটা হলেও কমতে পারে। তবে বাংলাদেশের রপ্তানিকারকরা জানাচ্ছেন, দাম একই থাকবে।
তাদের অভিমত, এবার কলকাতার মাছের বাজার ভালো না। এর প্রধান কারণ, দুর্গাপূজা এখনও একমাস বাকি। আরও কিছুটা পরে এলে বাজার উঠত। ফলে লাভ তো দূরের কথা, সব বাবদ খরচ তুলতে পারলেও অনেক হবে।
ফিশ ইম্পোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক আনোয়ার মাকসুদ বলেন, প্রথমদিন ১২টি গাড়িতে মোট ৭০ মেট্রিক টন মাছ এসেছে। দাম বেশি থাকলেও কলকাতায় বাংলাদেশের ইলিশের চাহিদা আছে। ফলে মাছের বাক্স খোলার আগে থেকেই ক্রেতা এবং খুচরা ব্যবসায়ী বাজারে এসে হাজির। দরদাম করছেন তারা।
তবে রপ্তানির দিন ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত ধার্য করা হলেও, বাংলাদেশে নিষেধাজ্ঞা জারি হওয়ার কারণে ভারতে শেষ মাছের গাড়ি যাবে ১১ অক্টোবর।
এ বিষয়ে মাকসুদের অভিমত, আমরা এ বিষয়ে ভেবে দেখার আবেদন জানিয়েছি বাংলাদেশ সরকারকে। দেখা যাক কি হয়। তবে আমরা আশাবাদী। বিগত কয়েকবছর ধরে পশ্চিমবঙ্গে ইলিশ উৎপাদন কম হয়। এখানে গুজরাট আর মিয়ানমার ভরসা। তবে বাঙালির কাছে বাংলাদেশের ইলিশ আলাদা প্রাপ্তি। তাই দাম বাড়লেও মোটামুটি চাহিদা আছে।
কলকাতার দমদম এলাকার অমৃত বাজারের খুচরা মাছ ব্যবসায়ী রতন জানিয়েছেন, দাম বাড়লেও ক্রেতা আছে অনেক। তাই তিনি, হাওড়া মার্কেট থেকে ৮০০ কেজি ইলিশ কিনেছেন কেজি প্রতি ১৪৫০ রুপি দিয়ে।
উত্তর ২৪ পরগণার রানাঘাট বাজারের ব্যবসায়ী বাবলু দাস বলেছেন, দাম বেশি থাকার কারণে পাঁচ পাল্লা (২৫ কেজি) নিলাম। আগামীদিনে দাম একটু কমতে পারে। তখন বেশি করে তুলব। তাছাড়া পূজা এখনও দেরি আছে। আর এখন তো প্রায় মাসের শেষ। সব বুঝে আমাদের ব্যবসা করতে হয়।
কলকাতার গড়িয়াহাটের খুচরা মাছ ব্যবসায়ী সুজন প্রতিবছরের মতো এবারও প্রথমদিনেই হাজির হয়েছেন হাওড়া মাছ বাজারে। তার অভিমত, শনি ও রোববার সাপ্তাহিক ছুটি। বেশি দাম দিয়ে ইলিশ কিনলেও মাছ থাকবে না। এর অন্য কারণ হিসেবে তিনি বলছেন, কলকাতার সব বাজারে এখন ইলিশের আকাল।
তবে আগামী সপ্তাহ থেকে গুজরাট এবং মিয়ানমারের বড় সাইজের ইলিশ ঢুকবে। তখন একটু দাম পড়তে পারে বাংলাদেশের ইলিশের।
বাংলাদেশের মাছ রপ্তানিকারক সেভেন স্টার ফিস প্রসেসিং কোম্পানির জাহিদ জানিয়েছেন, বাজার মন্দের ভালো। আজ প্রথমদিন। দেখা যাক সামনের দিনগুলো কি হয়।
আরো পড়ুন: বালকের বুদ্ধিমত্তায় বাঁচলো শতাধিক ট্রেনযাত্রী
এসি/ আই. কে. জে/