ফাইল ছবি
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বানচাল এবং নির্বাচনি পরিবেশ বিনষ্টের গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। তিনি বলেন, ‘বিএনপির রাজনীতি বিদেশি প্রভুদের কৃপানির্ভর। জনগণ, গণতন্ত্র এবং কল্যাণকর রাজনীতির প্রতি বিএনপির ন্যূনতম বিশ্বাস থাকলে এ দেশের গণতন্ত্রে কোনও সংকট সৃষ্টি হতো না।’
সোমবার (২ অক্টোবর) আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়ার সই করা এক বিবৃতিতে এসব কথা বলেন তিনি। এতে বিএনপি নেতাদের ‘দুরভিসন্ধি ও উসকানিমূলক বক্তব্যের’ নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক।
তিনি বলেন, ‘তারা অতীতের ধারাবাহিকতায় গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধে অবস্থান করে নির্বাচন ও নির্বাচনি প্রক্রিয়াকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে চায়। একইসঙ্গে দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং উন্নয়নের চলমান অভিযাত্রাকে ব্যাহত করতে চায়।’
বিবৃতিতে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিগত দিনে দেশের সাংবিধানিক বিধান অনুযায়ী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। আগামীতেও সেই ধারাবাহিকতায় পবিত্র সংবিধানের বিধান অনুযায়ীই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ২০১৪ সালে বিএনপি নির্বাচন বানচালের লক্ষ্যে সারাদেশে আগুনসন্ত্রাসের মাধ্যমে শত শত নিরীহ মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করেছিল।’
তিনি বলেন, ‘নির্বাচন প্রতিরোধের নামে বিএনপি ৩ হাজারের বেশি মানুষ পুড়িয়েছিল, ৫ শতাধিক ভোটকেন্দ্র ও স্কুলসহ সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান জ্বালিয়ে দিয়েছিল। এজলাসে বসা বিচারককে বোমা মেরে হত্যা ও আইনজীবীকে হত্যা করেছিল, রেল লাইন উপড়ে ফেলেছিল, হাজার হাজার গাছ কেটে ও রাস্তা কেটে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির মাধ্যমে মধ্যযুগীয় কায়দায় নারকীয় ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছিল।’
কোনও রাজনৈতিক দল দেশের মানুষের ওপর এমন প্রতিহিংসামূলক আচরণ করতে পারে? সেই প্রশ্ন রেখে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘‘বিএনপির কর্মকাণ্ডে তা বিশ্ববাসী অবাক বিস্ময়ে প্রত্যক্ষ করেছিল। ২০১৮ সালের নির্বাচনে তাদের নেতা দুর্নীতির বরপুত্র সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি তারেক রহমান লন্ডনে বসে রমরমা মনোনয়ন বাণিজ্যে মেতে ওঠেছিল। ৩০০ আসনে প্রায় ৭৫০ জনকে মনোনয়ন প্রদান করেছিল। আজ তারা যখন বলে ‘নির্বাচন হতে দেবো না’, তখন দেশের মানুষ স্পষ্টতই বুঝতে পারে— দেশের জনগণ, গণতন্ত্র, সংবিধান ও আইন কোনও কিছুর প্রতি বিএনপির দায়বদ্ধতা নেই।’’
বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘বিএনপি একটি অবৈধ রাজনৈতিক দল। অসাংবিধানিক ও অবৈধভাবে বন্দুকের নলের মুখে ক্ষমতাদখলকারী স্বৈরশাসক জিয়াউর রহমানের হাতে গড়া বিএনপির রাজনৈতিক ইতিহাস গণবিরোধী, অসাংবিধানিক ও বেআইনি কর্মকাণ্ডের ইতিহাস। ক্ষমতাকে কেন্দ্রবিন্দু করেই পরিচালিত হয়ে আসছে বিএনপির রাজনীতি। হ্যাঁ বা না ভোটের প্রহসন, জাতিকে কারফিউ মার্কা গণতন্ত্র উপহার, ১৫ ফেব্রুয়ারির ভোটারবিহীন নির্বাচন, সাদেক-রউফ-আজিজ মার্কা নির্বাচন কমিশন প্রস্তুত, ১ কোটি ২৩ লাখ ভুয়া ভোটার সৃষ্টি এবং একুশে আগস্টের মতো গণহত্যার মধ্য দিয়ে বিরোধীদলকে নিশ্চিহ্ন করে ক্ষমতাকে নিষ্কণ্টক করার অপচেষ্টাসহ এমন কোনও অপকর্ম নেই, যা বিএনপি সংঘটিত করেনি।’
বিএনপি কখনও জনকল্যাণ এবং মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা ও ভাগ্যোন্নয়নের রাজনীতি করেনি, দাবি করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সেজন্য বিএনপির রাজনীতি বিদেশি প্রভুদের কৃপা-নির্ভর। জনগণ, গণতন্ত্র এবং কল্যাণকর রাজনীতির প্রতি বিএনপির ন্যূনতম বিশ্বাস থাকলে এ দেশের গণতন্ত্রে কোনও সংকট সৃষ্টি হতো না।’
বিবৃতিতে বলা হয়, আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পবিত্র সংবিধান অনুযায়ী যথা সময়েই অনুষ্ঠিত হবে। কোনও অপশক্তিই এই নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করতে পারবে না। অসাংবিধানিক ও বেআইনিভাবে নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করার যেকোনও ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় দেশের জনগণ ঐক্যবদ্ধ। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে উন্নয়ন অগ্রগতি ও সমৃদ্ধির অভিযাত্রাকে সুমুন্নত রেখে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে আমরা বদ্ধপরিকর।’
একে/