সোমবার, ৮ই জুলাই ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
২৩শে আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মসজিদে নামিরা থেকে হজের খুতবা শুরু, দেখুন সরাসরি

ধর্ম ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ০৪:১৭ অপরাহ্ন, ২৭শে জুন ২০২৩

#

ছবি: সংগৃহীত

‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইকা লা শারিকা লাকা লাব্বাইক, ইন্নাল হামদা ওয়াননি’মাতা লাকা ওয়াল মুলক, লা শারিকা লাক’ ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে উঠেছে আরাফার প্রান্তর। এরই মধ্যে আরাফায় মসজিদে নামিরা থেকে ইসলামের মর্মবাণী তুলে ধরে শুরু হয়েছে হজের খুতবা।

হজের প্রথম ফরজ হলো ইহরাম বাঁধা। আর দ্বিতীয় ফরজ আরাফার ময়দানে অবস্থান। ইহরাম বাঁধার পর হজের এই অবশ্যপালনীয় কাজ সম্পাদনে এরই মধ্যে পাহাড়ঘেরা আরাফার ময়দানে অবস্থান করছেন লাখ লাখ হজযাত্রী।

আজ (মঙ্গলবার) স্থানীয় সময় দুপুর সাড়ে ১২টায় (বাংলাদেশ সময় সাড়ে ৩টায়) মসজিদে নামিরা থেকে হজযাত্রীদের উদ্দেশে খুতবা শুরু হয়। খুতবা দিচ্ছেন সৌদি আরবের সর্বোচ্চ উলামা পরিষদের সদস্য শায়খ ড. ইউসুফ বিন মুহাম্মদ বিন সাঈদ।

হজের খুতবা দেয়া হচ্ছে আরবিতে। তবে অনুবাদ করে তা আরও ২০ ভাষায় সম্প্রচার করা হচ্ছে। ভাষাগুলো হলো: ইংরেজি, বাংলা, ফরাসি, ফার্সি, উর্দু, হাউসা, রাশিয়ান, তুর্কি, চীনা, মালয়, সোয়াহিলি, স্প্যানিশ, পর্তুগিজ, আমহারিক, জার্মান, সুইডিশ, ইতালীয়, মালয়ালম, বসনিয়ান ও ফিলিপিনো।

এ নিয়ে টানা চতুর্থবারের মতো বাংলা ভাষায় হজের খুতবা শোনা যাচ্ছে। এবার খুতবার বাংলা অনুবাদ করছেন ড. খলীলুর রহমান ও আ ফ ম ওয়াহিদুর রহমান। তাদের সঙ্গে আরও রয়েছেন মুবিনুর রহমান ফারুক ও নাজমুস সাকিব। তারা সবাই সৌদির বিখ্যাত উম্মুল কুরা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করছেন।


মানারাতুল হারামাইন অ্যাপ, আল কোরআন চ্যানেল ও আস সুন্নাহ চ্যানেলসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ইউটিউব, ফেসবুক ও টুইটারে খুতবাটি শোনা যাচ্ছে।

এছাড়া ওয়েবসাইট থেকে বিগত বছরের খুতবা শোনার ব্যবস্থা রয়েছে। মক্কা ও মদিনার পবিত্র দুই মসজিদের জেনারেল প্রেসিডেন্সি বিভাগের তত্ত্বাবধানে অনুবাদের পুরো কার্যক্রম পরিচালিত হয়। এ বছর বিশ্বের ৩০ কোটির বেশি মানুষ লাইভ সম্প্রচারিত খুতবাটি শুনবে বলে আশা করা হচ্ছে। করোনা মহামারি-পরবর্তী এবার ইতিহাসের সবচেয়ে বড় হজ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সৌদি আরবের হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, করোনার বিধিনিষেধ পুরোপুরি উঠে যাওয়ায় এবার আগের বছরের তুলনায় বহু পরিমাণে বেড়েছে হজযাত্রীর সংখ্যা।

করোনা মহামারির কারণে ২০২০ সালে হজ করার সুযোগ পেয়েছিলেন মাত্র ১০ হাজার মানুষ। আর ২০২১ সালে ৫৯ হাজার। গত বছর এ সংখ্যা ছিল ১০ লাখ। এর মধ্যে প্রায় সাড়ে ৮ লাখই ছিল বিশ্বের অন্যান্য দেশ থেকে।

 গত রোববার (২৫ জুন) মক্কায় কাবাঘর প্রদক্ষিণ করেন হজযাত্রীরা। এরপর ৮ জিলহজ তথা গত সোমবার (২৬ জুন) সকাল থেকে শুরু হয় হজের মূল আনুষ্ঠানিকতা। এদিন কেউ হেঁটে আবার কেউ বাসে করে মিনায় জড়ো হন। মিনা পরিণত হয় তাঁবুর শহরে।

 মক্কার মসজিদুল হারাম থেকে মিনার দূরত্ব পাঁচ কিলোমিটারের মতো। এখানে খোলা আকাশের নিচে ২৫ লাখ বর্গমিটার জায়গাজুড়ে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত লক্ষাধিক তাঁবু টানানো হয়।

 সোমবার (২৬ জুন) সারা দিন ও দিবাগত সারা রাত মিনায় অবস্থান করেন হজযাত্রীরা। এ সময় সেখানে মহান আল্লাহর মেহমানরা ইবাদত-বন্দেগিতে মশগুল ছিলেন তারা।

 এরপর ৯ জিলহজ তথা মঙ্গলবার (২৭ জুন) ফজরের দুই রাকাত নামাজ আদায়ের পর তারা মিনা থেকে ১০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থিত ঐতিহাসিক আরাফার ময়দানে জড়ো হতে থাকেন।

আরাফার ময়দানে অবস্থান করাই হজের মূল কাজ। চার বর্গমাইল আয়তনের এই বিশাল সমতল মাঠের দক্ষিণ দিকে মক্কা হাদা তায়েফ রিং রোড, উত্তরে সাদ পাহাড়। সেখান থেকে আরাফা সীমান্ত পশ্চিমে আরও প্রায় পৌনে এক মাইল বিস্তৃত।

 মুসলিমদের অতি পবিত্র এই ভূমিতে যার যার মতো সুবিধাজনক জায়গা বেছে নিয়ে তারা ইবাদত করেন। এর মধ্যেই হজের খুতবা শুরু হয়। হজযাত্রীরা সেই খুতবা শুনছেন এবং এরপর জোহর ও আসরের নামাজ পড়বেন।

 এরপর সূর্যাস্ত পর্যন্ত তারা আরাফার ময়দানে অবস্থান করে আল্লাহ তায়ালার জিকির-আসকার ইবাদতে দোয়ায় মশগুল থাকবেন। এর পর মুজদালিফার উদ্দেশে আরাফার ময়দান ত্যাগ করবেন।

মুজদালিফায় গিয়ে মাগরিব ও এশার নামাজ এশার ওয়াক্তে একত্রে পড়বেন এবং সারা রাত অবস্থান করবেন। মিনায় জামরাতে নিক্ষেপ করার জন্য ৭০টি পাথর এখান থেকে সংগ্রহ করবেন।

মুজদালিফায় ফজরের নামাজ পড়ে আবারও মিনার দিকে রওনা হবেন। ১০ জিলহজ তথা বুধবার (২৮ জুন) মিনায় পৌঁছার পর হজযাত্রীদের পর্যায়ক্রমে কয়েকটি কাজ সম্পন্ন করতে হয়।

আরো পড়ুন: রাজধানীর পশুর হাটগুলোয় উঠেছে প্রচুর গরু

প্রথমত, মিনাকে ডান দিকে রেখে দাঁড়িয়ে শয়তানকে পাথর নিক্ষেপ করতে হয়। দ্বিতীয়ত, আল্লাহর উদ্দেশে পশু কোরবানি করা। অনেকেই মিনায় না পারলে মক্কায় ফিরে গিয়ে পশু কোরবানি দেন। তৃতীয়ত, মাথা ন্যাড়া করা।

হজের তৃতীয় ও শেষ ফরজ তাওয়াফে জিয়ারাহ করা তথা কাবা শরিফ তাওয়াফ করা। এরই মধ্য দিয়ে হজের আনুষ্ঠানিকতা শেষে মেতে উঠবেন ঈদের আনন্দে।

এম/ আই. কে. জে/


মসজিদে নামিরা হজ খুতবা

খবরটি শেয়ার করুন