সোমবার, ৮ই জুলাই ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
২৩শে আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মোদীর যুক্তরাষ্ট্র সফরকে ঐতিহাসিক বললেন বিশ্লেষকরা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ১০:২০ অপরাহ্ন, ২৫শে জুন ২০২৩

#

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর প্রথম সফর ছিল অত্যন্ত আড়ম্বরপূর্ণ। তিনদিনের সফরে প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘে যোগব্যায়াম থেকে শুরু করে হোয়াইট হাউসে অভ্যর্থনা এবং রাষ্ট্রীয় নৈশভোজ উপভোগ করেন। ২২ জুনের আনুষ্ঠানিক নৈশভোজে মিডিয়ার আকর্ষণ থাকলেও এর আগের দিন রাষ্ট্রপতি এবং তার পরিবারের সাথে নৈশভোজ উপভোগ করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। 

ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে খুশি করার ক্ষেত্রে চেষ্টার কোনও ত্রুটি রাখেনি মার্কিন প্রশাসন। প্রশাসনের কর্মকর্তারা এ সফরকে ঐতিহাসিক হিসেবে অভিহিত করেছেন। 

তবে সবকিছু বাদ দিয়ে এ সফর নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি ভারতেরও কিছু উদ্বেগ ছিল। বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল রাষ্ট্র হলেও জনবলকে দক্ষ করা ভারতের জন্য একটি বিশাল বড় চ্যালেঞ্জ। 

ওয়াশিংটনে পৌঁছানোর পর, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ন্যাশনাল সায়েন্স ফাউন্ডেশনে ফার্স্ট লেডি জিল বাইডেনের সাথে একটি দক্ষতা উন্নয়ন উদ্যোগে যোগ দেন। এই উদ্যোগের লক্ষ্য আমেরিকান কমিউনিটি কলেজ এবং ভারতীয় পলিটেকনিকের মধ্যে সহযোগিতার মাধ্যমে বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ এবং দক্ষতা উন্নয়নের প্রচার করা।

বেসামরিক এবং প্রতিরক্ষা উভয় ক্ষেত্রেই ভারতের দেশীয় শিল্পকে শক্তিশালী করার জন্য ভারতের দাবি ছিল। ২০২৩ সালের জানুয়ারীতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র-ভারত উদ্যোগ ক্রিটিক্যাল অ্যান্ড এমার্জিং টেকনোলজি (আইসিইটি) কে অনুসরণ করে, উভয় দেশের প্রতিরক্ষা বিভাগ ২১ জুন 'ইন্ডিয়া-ইউএস ডিফেন্স অ্যাক্সিলারেশন ইকোসিস্টেম' (ইন্দোস-এক্স) চালু করে। ইন্দোস-এক্স শিক্ষাবিদ, গবেষক, প্রাইভেট কোম্পানি এবং প্রতিরক্ষা খাতে স্টার্ট-আপগুলোর মধ্যে সহযোগিতা সহজতর করার লক্ষ্য রাখে।

সফরের সময় দুটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিরক্ষা সরবরাহের ঘোষণাও করা হয়। জেনারেল ইলেক্ট্রিক এরোস্পেস, ভারতের পাবলিক সেক্টর এন্টারপ্রাইজ হিন্দুস্তান এরোনটিক্স লিমিটেড (এইচএএল) এর সাথে ইন্ডিয়ান এয়ার ফোর্স লাইট কমব্যাট এয়ারক্রাফট এমকে-২ প্রোগ্রামের জন্য ফাইটার জেট নির্মাণে একটি চুক্তিতে স্বাক্ষর করে। 

মার্কিন নৌবাহিনী এবং চারটি ভারতীয় শিপইয়ার্ডের মধ্যে চুক্তির ঘোষণা দুই দেশের মধ্যকার বিশ্বস্ততাকেও তুলে ধরে। ২০২২ সালের আগস্টে প্রথমবারের মতো মার্কিন নৌবাহিনীর একটি জাহাজ মেরামতের জন্য ভারতের চেন্নাইয়ের লারসেন এন্ড টুব্রো শিপইয়ার্ডে আসে।

২০০৮ সাল থেকেই ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে প্রতিরক্ষা বাণিজ্য ক্রমান্বয়ে বেড়ে চলেছে। ভারত এখন তার তিনটি সশস্ত্র প্রতিরক্ষা বাহিনির জন্য ৩০ টি ড্রোন কিনতে ইচ্ছুক।

ভারত আর্টেমিস অ্যাকর্ডস স্বাক্ষর করেছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে, ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা (ইসরো) এবং নাসা ২০২৪ সালে একজন ভারতীয় মহাকাশচারীকে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে পাঠাতে একসঙ্গে কাজ করবে।

একদিকে যেমন বাইডেন প্রশাসন চিপ উৎপাদনকে শক্তিশালী করতে চায়, অন্যদিকে মোদীও ভারতের মধ্যে চিপ উৎপাদনকে উৎসাহিত করতে চাইছেন। মাইক্রোন টেকনোলজি ইনকর্পোরেটেড, অর্থাৎ বৃহত্তম ইউএস মেমরি-চিপমেকার এই কোম্পানিটি ভারতীয় জাতীয় সেমিকন্ডাক্টর মিশনের সহযোগিতায় গুজরাটে একটি চিপ পরীক্ষা এবং প্যাকেজিং প্ল্যান্ট স্থাপনের পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে৷ এ কাজে মাইক্রোন ৮০০০ লাখ মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করতে প্রস্তুত এবং ভারত সরকার অবশিষ্ট ২৭.৫ কোটি মার্কিন ডলার প্রদান করবে। উপরন্তু, ভারতীয় কোম্পানিগুলো কলোরাডো, সাউথ ক্যারোলিনা এবং ওহিও-এর মতো আমেরিকান রাজ্যে ২০ কোটি মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছে।

আই. কে. জে/


Important Urgent

খবরটি শেয়ার করুন