সোমবার, ২১শে জুলাই ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
৬ই শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ

*** ৪৮তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষার ফল প্রকাশ, উত্তীর্ণ ৫২০৬ *** খাদ্যে বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত নেতানিয়াহু *** বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক: গোপালগঞ্জে প্রশাসন চাইলে রক্তপাত এড়ানো যেত *** পাকিস্তানকে উড়িয়ে ৯ বছর পর জিতল বাংলাদেশ *** এক ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রী, সংসদ নেতা ও দলীয় প্রধান হওয়ার বিষয়ে তিন দলের ভিন্ন প্রস্তাব *** এত ‘নির্দোষ, নিরপরাধ, নিষ্পাপ’ সরকার আমি দেখিনি: দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য *** গণগ্রেপ্তারের অভিযোগ এনে কোটালীপাড়ায় বিএনপির সংবাদ সম্মেলন *** গোপালগঞ্জে জারি করা কারফিউ ও ১৪৪ ধারা প্রত্যাহার *** পাকিস্তানকে দাঁড়াতেই দিলেন না তাসকিনরা *** শুটিংয়ে আহত হননি শাহরুখ

ম্যাম, আমি বেগম রোকেয়া হয়ে উঠতে পারিনি

সাহিত্য ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ০৭:১৭ অপরাহ্ন, ১৫ই অক্টোবর ২০২৩

#

শ্রদ্ধেয় বেগম রোকেয়া আপা, 

আজ আপনি নেই। কিন্তু আজও নিপীড়িত রোকেয়া হয়ে আমরা বেঁচে আছি হাজারও রোকেয়া। দুঃখ, কষ্ট আর বঞ্চনায় জরাগ্রস্ত হয়ে আপনাকে এই চিঠিখানা লিখছি। 

প্রিয় আপা, আমি আমার ছোট্ট জীবনের কিছু গল্প আপনাকে শোনাতে চাই। আমি যখন ক্লাস সেভেনে পড়ি আমার লেখাপড়া দেখে এক ম্যাম বলেছিলেন, ‘তুমি একদিন বেগম রোকেয়া হয়ে জ্ঞানের আলোয় আলোকিত করবে তোমার চারপাশ’। আদর করে আমাকে বেগম রোকেয়া বলেই ডাকতেন। আমার বেশ ভালোই লাগতো। দেখতে দেখতে আমি প্রথম হয়ে অষ্টম শ্রেণীতে উঠলাম।

হঠাৎ একদিন মা বললো তোর বাবা তো অসুস্থ, সে তো আর ঠিক মতো কাজও করতে পারে না। আমি তোর পড়ালেখার খরচ কিভাবে চালাবো বরং ভালো পাত্র দেখে তোর বিয়ে দিয়ে দিই। আমি ভাবলাম তবে তাই করি। বাবা মায়ের ভালোতেই আমার ভালো। তবে কি আমি আর স্কুলে যেতে পারবো না! ছুটন্ত ঘোড়ার মত আর ছুটতে পারবো না! এই নানা রকম ভাবনাগুলো যেন পিছু ছাড়ছে না। 

অতঃপর আমার বিয়ে হয়ে গেলো। আমি চললাম আমার শ্বশুরবাড়ি। বিয়ের পরদিন বাপের বাড়ি এসেছি, আমার সব সহপাঠিরা আমাকে দেখতে এসেছে। সবাই দেখছে যে, ক্লাসের ফার্স্ট গার্ল কিভাবে স্কুল বাদ দিয়ে নিজের জীবন জলাঞ্জলী দিলো।

আমি ওদের দেখে আর ঠিক থাকতে পারলাম না। অঝোরে কাঁদলাম। কাঁদতে কাঁদতে অজ্ঞান হয়ে গেলাম। আমার মনে হতে লাগলো আমার ব্রেন ছিঁড়ে ছিঁড়ে পড়ছে।

বার বার মনে হচ্ছে আমি কি আর স্কুলে যেতে পারবো না। আমার চারপাশ অন্ধকার লাগতে শুরু করলো। বাড়ি থেকে আমাকে ডাঃ এর কাছে নিয়ে গেলো। ডাঃ পরীক্ষা করে বললো আমার মনে ও ব্রেনে আঘাত লেগেছে। অর্থাৎ পাগল।

সবশেষে আমার ডিভোর্স হয়ে গেলো। আমার সেই প্রিয় ম্যাম আমাকে দেখতে এসেছিল। ম্যাম আমি আপনার স্বপ্ন পূরণ করতে পারিনি। নারী জাগরনের অগ্রদূত বেগম রোকেয়া হতে পারিনি। জ্ঞানের আলোয় আলোকিত করতে পারিনি আমার চারপাশ। এখন আমার সবদিকই অন্ধকার। 

তাই আমি হয়েছি আজ পাগলী রোকেয়া। 

আরও পড়ুন : স্যার, আজও আপনার বেতের বাড়ির কথা ভুলিনি!

এস/  আই.কে.জে

চিঠি বেগম রোকেয়া আপা অন্ধকার

সুখবর এর নিউজ পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

খবরটি শেয়ার করুন