শুক্রবার, ৫ই জুলাই ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
২১শে আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

যুক্তরাষ্ট্রে আজ সব ফোনে বেজে উঠবে সতর্কসংকেত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ০৩:২১ অপরাহ্ন, ৪ঠা অক্টোবর ২০২৩

#

ফাইল ছবি

যুক্তরাষ্ট্রের পূর্বাঞ্চলে বসবাসরত মানুষের মুঠোফোনে বুধবার (৪অক্টোবর) স্থানীয় সময় বেলা ২টা ২০ মিনিটে সে দেশে উচ্চ স্বরে সতর্কসংকেত বেজে উঠতে পারে। তবে দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার জানিয়েছে, এতে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।

সিএনএনের খবরে জানানো হয়েছে, আজ বুধবার (৪অক্টোবর) বিকেলে ইমারজেন্সি অ্যালার্ট সিস্টেম (ইএএস) ও ওয়্যারলেস ইমারজেন্সি অ্যালার্ট (ডব্লিউইএ) প্রযুক্তির পরীক্ষামূলক ব্যবহার করা হবে। দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার জানিয়েছে, ইমারজেন্সি অ্যালার্ট সিস্টেম (ইএএস) ব্যবহার করে সব রেডিও ও টেলিভিশনে সতর্কতা পাঠানো হবে, আর ওয়্যারলেস ইমারজেন্সি অ্যালার্ট (ডব্লিউইএ) ব্যবহার করে সতর্কতা পাঠানো হবে মুঠোফোনে।

এক বিবৃতিতে ফেডারেল ইমার্জেন্সি ম্যানেজমেন্ট এজেন্সি (এফইএমএ) জানিয়েছে, ফেডারেল কমিউনিকেশন কমিশনের (এফসিসি) সহযোগিতায় এ পরীক্ষা চালানো হবে। উদ্দেশ্য, জরুরি অবস্থায় জনগণকে সতর্ক করার ক্ষেত্রে এ ব্যবস্থা যথেষ্ট কি না, তা পরীক্ষা করা, বিশেষ করে জাতীয় পর্যায়ের জরুরি পরিস্থিতিতে।

পরীক্ষার অংশ হিসেবে, আজ বুধবার যুক্তরাষ্ট্র সময় বেলা ২টা ২০ মিনিটে প্রায় সব মুঠোফোনে একটি সতর্কসংকেত ও বার্তা যাবে। বার্তায় লেখা থাকবে: এটি জাতীয় জরুরি সতর্কতা ব্যবস্থার পরীক্ষামূলক ব্যবহার, পরবর্তীকালে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণের প্রয়োজন নেই।

ফেডারেল ইমার্জেন্সি ম্যানেজমেন্ট এজেন্সি জানিয়েছে, বার্তাটি কোন ভাষায় যাবে, তা নির্ভর করবে মুঠোফোনের সেটিংসে কোন ভাষা নির্বাচন করা হয়েছে, তার ওপর। এ সতর্কসংকেতের আওয়াজ সাধারণ শব্দ থেকে অনেকটাই আলাদা হবে, যাতে সবাই এ শব্দ শুনতে পারে। সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে প্রতিবন্ধী—সবাই এ বার্তা পাবেন।

এফইএমএ জানায়, প্রায় ৩০ মিনিট সময়ের মধ্যে পরীক্ষাটি চলবে। এ সময়ের মধ্যে নেটওয়ার্ক টাওয়ারের আশপাশে যতগুলো চালু মুঠোফোন থাকবে, সেসব ফোনে এ বার্তা যাবে।

একই সময়ে এ পরীক্ষার অংশ হিসেবে সব রেডিও ও টেলিভিশনও পরীক্ষামূলক জরুরি সতর্কবার্তা সম্প্রচার করবে। এ বার্তার মেয়াদ প্রায় এক মিনিট। এতে বলা হবে, ‘এটি ফেডারেল ইমার্জেন্সি ম্যানেজমেন্ট এজেন্সি কর্তৃক জারি করা জরুরি সতর্কতাব্যবস্থার পরীক্ষা। এটা নিছক পরীক্ষামূলক মহড়া, এর জন্য জনগণের কোনো ব্যবস্থা গ্রহণের প্রয়োজন নেই।’

এফইএমএ বলেছে, মুঠোফোনে বা রেডিও ও টিভির মাধ্যমে এটি শোনার পর কেউ যেন আতঙ্কিত না হয়।

বুধবারের মহড়া যুক্তরাষ্ট্রের ইমারজেন্সি অ্যালার্ট সিস্টেমের সপ্তম পরীক্ষা—রেডিও ও টেলিভিশন মাধ্যমে এ বার্তা পাঠানো হবে। তবে রেডিও ইমারজেন্সি অ্যালার্ট ব্যবস্থার এটি তৃতীয় পরীক্ষা, মুঠোফোনের ক্ষেত্রে দ্বিতীয়।

ইমারজেন্সি অ্যালার্ট সিস্টেম ও ওয়্যারলেস ইমারজেন্সি অ্যালার্ট—এই দুই মাধ্যমে সর্বশেষ এ পরীক্ষা করা হয়েছে ২০২১ সালে। তার আগে ২০১১ সালে ইমার্জেন্সি অ্যালার্ট সিস্টেমের প্রথম পরীক্ষা চালানো হয়।

এ ধরনের পরীক্ষার ক্ষেত্রে অতীতে বড় ধরনের ভুলের ইতিহাস আছে যুক্তরাষ্ট্রে। এর মধ্যে সবচেয়ে বাজে ঘটনাটি ২০১৮ সালে হাওয়াইতে ঘটেছিল। সেই রাজ্যের জরুরি পরিস্থিতি ব্যবস্থাপনাসংক্রান্ত এক কর্মকর্তা ভুল বাটনে চাপ দেওয়ার কারণে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলার হুমকির বিষয়ে ভুয়া সতর্কতা ছড়িয়ে পড়ে। এতে সেই রাজ্যে ব্যাপক আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। শেষ পর্যন্ত সেই কর্মীকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছিল।

এদিকে চলতি বছরের শুরুর দিকেও এমন একটি ভুল হয়েছিল। ফ্লোরিডায় রাজ্য জরুরি ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তারা ভোর ৪টা ৪৫ মিনিটে ভুল করে রাজ্যের বাসিন্দাদের মুঠোফোনে পরীক্ষামূলক জরুরি সতর্কবার্তা পাঠিয়ে দিয়েছিলেন। এরপর তাঁরা ক্ষমাও চেয়েছিলেন।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা পরে বলেছিলেন, পরীক্ষামূলক সতর্কতাটি কেবল টেলিভিশনে সম্প্রচারের উদ্দেশ্যে পাঠানো হয়েছিল, মানুষকে ঘুম থেকে জাগানোর লক্ষ্যে নয়। সফটওয়্যার কোম্পানির কারণেই এ ধরনের ভুল হয়েছিল, পরে অবশ্য সেই সফটওয়্যার কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি বাতিল করে ফ্লোরিডা রাজ্য সরকার।

একে/

যুক্তরাষ্ট্র পরীক্ষামূলক সতর্কসংকেত

খবরটি শেয়ার করুন