শুক্রবার, ৫ই জুলাই ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
২১শে আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

যে দেশে প্রেমিকার হাত ধরে রাস্তায় হাঁটলেই শাস্তি হয়

নিউজ ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ১০:২৬ অপরাহ্ন, ২৭শে অক্টোবর ২০২৩

#

এদেশের নিয়ম-কানুনের সঙ্গে পরতে পরতে মিল রয়েছে সুকুমার রায়ের ‘একুশে আইন’-র। আবোল-তাবোলের ছড়াটির মতোই সেখানে প্রকাশ্যে কোনও প্রেমিকার হাত ধরলেই ছুটে আসে পেয়াদা। কালো রঙের গাড়ি নিয়ে রাস্তায় বের হলে আর রক্ষে নেই। দিতে হয় বিপুল জরিমানা। সঙ্গে উপরি পাওনা হাজতবাস!

মধ্য এশিয়ার তুর্কমেনিস্তানের আইন-কানুন সত্য়িই সর্বনেশে। এক সময় সোভিয়েত রাশিয়ার অন্তর্গত ছিল এই দেশ। ১৯৯১-তে রাশিয়া ভেঙে যাওয়ার সময় স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে কাস্পিয়ান সাগরের তীরের এই দেশ। যার রাজধানী হল আশগাবাত।

কয়েক বছর আগেই গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে নাম ওঠে তুর্কমেনিস্তানের রাজধানীর। সেখানকার অধিকাংশ বাড়ি সাদা মার্বেল পাথরে তৈরি হওয়ায় এই তকমা পেয়েছে আশগাবাত। বিশ্বের সেরা সাজানো-গোছানো শহর হিসেবেও খ্যাতি রয়েছে এর।

সৌন্দর্যানের জন্য আশগাবাতে রয়েছে ঝর্নার সবচেয়ে বড় কমপ্লেক্স। এছাড়া দুনিয়ার সবচেয়ে লম্বা পতাকা দণ্ডও রয়েছে এই শহরে। তার পরও খুব কম পর্যটকই এই দেশটিতে বেড়াতে আসেন। এর পিছনে রয়েছে অদ্ভুতুড়ে কিছু আইন।

তুর্কমেনিস্তানের আইন অনুযায়ী রাজধানীর সাদা মার্বেল পাথরের তৈরি বাড়িতে কাউকে থাকতে দেওয়া হয় না। বাড়িগুলি সরকারি বা বেসরকারি অফিস হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে এমনটাও নয়। শহরে অতিরিক্ত জনসমাগম হলে বাড়বে দূষণ। সেই যুক্তিতে বাড়িতে বসবাস বা অফিস খোলার অনুমতি বাতিল করেছে প্রশাসন।

গত বছরের মার্চে তুর্কমেনিস্তানের প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেন সেরদার বেরদিমুহাম্মদ। কুর্সিতে বসার পরই নারী-পুরুষের প্রকাশ্য়ে মেলামেশা বন্ধ করতে কড়া আইন পাশ করেন তিনি। এর পর থেকেই প্রকাশ্য়ে কোনও মেয়ের হাত ধরে ঘোরা নিষিদ্ধ হয়েছে মধ্য এশিয়ার এই দেশে।

প্রসঙ্গত, বেরদিমুহাম্মদের বাবাও ছিলেন তুর্কমেনিস্তানের প্রেসিডেন্ট। কালো রং একদম সহ্য করতে পারতেন না তিনি। ফলে রাস্তায় কালো রঙের গাড়ি চলাচল বন্ধ করতে নতুন আইন পাশ করেন তিনি। রাতারাতি সমস্ত কালো রঙের গাড়ি বাতিল হওয়ায় বেজায় বিপাকে পড়েন গাড়ি মালিকরা। বিপুল টাকা খরচ করে গাড়ির রং বদলাতে হয়েছিল তাঁদের।

সোভিয়েত রাশিয়া ভেঙে স্বাধীন তুর্কমেনিস্তান তৈরির পর সেদেশের প্রথম প্রেসিডেন্ট হন সাপারমুরাত নিয়াজভ। দেশ থেকে রুশ প্রভাব পুরোপুরি মুছে ফেলতে একাধিক পদক্ষেপ করেন তিনি। যার মধ্যে অন্যতম ছিল রুশ নামগুলি মুছে ফেলা।

ক্ষমতায় এসেই রাজধানী আশগাবাতে সোনায় মোড়া নিজের মূর্তি তৈরি করেন প্রেসিডেন্ট নিয়াজভ। এর জন্য খরচ হয়েছিল কোটি কোটি টাকা। যা প্রভাব ফেলেছিল তুর্কমেনিস্তানের অর্থনীতিতে। যদিও বিষয়টি গ্রাহ্যই করেননি তৎকালীন প্রেসিডেন্ট।

ওআ/ আই.কে.জে/


দেশ প্রেমিকা

খবরটি শেয়ার করুন