প্রতীকী ছবি
রুবলের দরপতন ঠেকাতে রাশিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংক ৩ দশমিক ৫ শতাংশীয় পয়েন্ট হারে নীতি সুদহার বাড়িয়েছে। গত ১৭ মাসের মধ্যে রুবলের সর্বোচ্চ দরপতনের কারণে দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এই সিদ্ধান্ত। ব্রিটিশ গণমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান এর এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
এই সপ্তাহের সোমবার (১৪ আগস্ট) সকালে ডলারের বিপরীতে রুবলের মান ১০০ পেরিয়ে গেলে রাশিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ এক বিশেষ সভা আহ্বান করে। সেখানে তারা নীতি সুদহার ৮ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে ১২ শতাংশে উন্নীত করার সিদ্ধান্ত নেয়। ১০০ হচ্ছে মনস্তাত্ত্বিকভাবে গ্রহণযোগ্য মান; রুবলের বড় দরপতন হলে রাশিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নড়াচড়া শুরু হয়, এবার ঠিক তা–ই হয়েছে।
রাশিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলেছে, বাজারে পণ্যের দাম স্থিতিশীল রাখতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মূল্যস্ফীতির বিভিন্ন সূচক গত তিন মাসে ৭ শতাংশের ওপরে উঠেছে, যদিও রাশিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মূল্যস্ফীতির লক্ষ্যমাত্রা ৪ শতাংশ।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, বাজারের তেজ কমাতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তাঁরা এ–ও বলছেন, পশ্চিমাদের অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা থাকলে আর্থিক খাতে স্থিতিশীলতা রক্ষা করা কঠিন হবে।
শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের রুশ অর্থনীতিবিষয়ক অধ্যাপক কনস্ট্যান্টিন সোনিন গার্ডিয়ানকে বলেন, ‘পুতিনের মৃত্যু বা ক্ষমতা ত্যাগ করার আগপর্যন্ত রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ চলবে, সেই সঙ্গে রাশিয়ার বাজেট ঘাটতিও বাড়তে থাকবে। সে কারণে রুবলের মান ধারাবাহিকভাবে কমছে।’
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর এলভিরা নাবিউলিনা যুদ্ধ শুরুর পর পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা মোকাবিলা করে রুবলের দর ধরে রেখেছিলেন। অর্থনীতিও একেবারে খারাপ করেনি। কিন্তু এখন তিনি রুবলের দরপতন ঠেকাতে পারছেন না।
চলতি বছর এ পর্যন্ত রুবলের ২৫ শতাংশ দরপতন হয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই দেশটিতে মূল্যস্ফীতির হার বাড়ছে এবং আরও বাড়বে। এই বাস্তবতায় রাশিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংক চলতি বছরের বাকি সময়ের জন্য বিদেশি মুদ্রা কেনা বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এতে রাশিয়ার মুদ্রাবাজারের অস্থিতিশীলতা কমবে। বিদেশি মুদ্রা কেনা হলে সাধারণত স্থানীয় মুদ্রার সরবরাহ বৃদ্ধি পায়; পরিণামে তার মান পড়ে যায়।
এদিকে স্বল্প মেয়াদে রুবলের দরপতন রাশিয়ার জন্য মন্দ নয় বলে মনে করেন অনেকে। রাশিয়া বিদেশি মুদ্রায় অনেক দেশের কাছে তেল বিক্রি করছে; রুবলের দরপতন মানে রপ্তানি আয় বাড়বে। কিন্তু মুদ্রার দরপতনের কারণে অর্থনীতি ও মানুষের মধ্যে ভীতি তৈরি হতে পারে, বাড়তে পারে মূল্যস্ফীতির হার।
এম.এস.এইচ/
খবরটি শেয়ার করুন