শুক্রবার, ৫ই জুলাই ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
২১শে আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিশু মোবাইল ফোন ছাড়া খাবার খায় না? কী করবেন

লাইফস্টাইল ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ০২:২৬ অপরাহ্ন, ১৮ই নভেম্বর ২০২৩

#

ছবি: সংগৃহীত

এখনকার শিশুরা মোবাইল ফোনে ভিডিও দেখতে দেখতে খাবার খায়। যখন তারা খাবার খেতে চায় না তখন এই পদ্ধতিতেই অভিভাবকরা তাদের খাওয়ান। শিশু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই 'স্ক্রিন অ্যাডিকশন'-এর কারণে শিশুদের ক্ষুধা লাগার প্রবণতা কমছে। তাদের ভাষায়, শিশুরা যখন মোবাইল ফোনে মনোযোগ দেয়, তখন তাদের খাওয়ার ইচ্ছা তৈরি হয় না। এই কারণে তারা হয় কম খায় নয়তো বেশি খায়। খাওয়ার প্রতি আগ্রহ পায় না। 

বিশেষজ্ঞদের মতে, অতিরিক্ত মোবাইল আসক্তির ফলে শিশুরা অপুষ্টিতে ভোগে। কারও কারও মধ্যে স্থূলতাও দেখা দেয়।  অন্যদিকে, যেসব শিশু খেতে ইচ্ছুক কিন্তু মোবাইল ফোন নিয়ে ব্যস্ত থাকার কারণে কখন পেট ভরে তা বলতে পারে না, তখন তাদের বাবা-মা তাদের খুব বেশি খাওয়ান। স্ক্রিন আসক্তি ’শিশুর ক্ষুধা ও তৃপ্তি বোঝার ক্ষমতা নষ্ট করে দেয়। যার কারণে শিশুরা নানা সমস্যার সম্মুখীন হয়। যেমন-

গ্রোথ হরমোনের উপর প্রভাব 

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সমস্ত ইলেকট্রনিক ডিভাইস নীল আলো নির্গত করে যা স্বাভাবিক ঘুমের হরমোন মেলাটোনিনের ওপর চাপ দেয়। বেশিরভাগ মানুষের বৃদ্ধির হরমোন রাতে বেশি সক্রিয় থাকে। কিন্তু যখন শিশু রাতে কম ঘুমায়, তখন সে পুরোপুরি বিকশিত হতে পারবে না। কম ঘুমের কারণেও তারা খিটখিটে হয়ে পড়ে। অতিরিক্ত মোবাইল আসক্তি শিশুদের ঘুমের উপর প্রভাব ফেলে।

আরো পড়ুন : মানসিকভাবে শক্তিশালী মানুষের বিশেষ কিছু বৈশিষ্ট্য

পাঁচটি ইন্দ্রিয় বিকশিত হয় না 

শিশুরোগ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শিশুরা এখন ছোটবেলা থেকেই ইলেকট্রনিক গ্যাজেট এবং ডিজিটাল মিডিয়ার সংস্পর্শে আসছে। জীবনের প্রথম পাঁচ বছরে দেখা, শ্রবণ, অনুভূতি, গন্ধ এবং স্বাদ সহ পাঁচটি ইন্দ্রিয়ের বিকাশ প্রয়োজন। কিন্তু ইলেকট্রনিক গ্যাজেট এবং মোবাইল শিশুদের দৃষ্টি ও শ্রবণশক্তির ক্ষতি করে। এটি তাদের জীবনে স্বল্পমেয়াদী এবং দীর্ঘমেয়াদী উভয় প্রভাব ফেলে। এর স্বল্পমেয়াদী প্রভাবগুলির মধ্যে রয়েছে ঘুমের সময় হ্রাস এবং বিরক্তি। একই সময়ে, দীর্ঘমেয়াদী প্রভাবগুলির মধ্যে রয়েছে শিশুদের আচরণগত সমস্যা, মনোযোগ দিতে অসুবিধা, স্কুলের কর্মক্ষমতার উপর প্রভাব এবং মনোযোগ ঘাটতির সমস্যা।

মানসিক বিকাশ

যেসব শিশু শৈশবে গ্যাজেটের প্রতি আসক্ত হয়ে পড়ে, তারা মানসিক বিকাশ প্রক্রিয়ায় পিছিয়ে থাকে। যার কারণে শিশুরা হাইপার অ্যাক্টিভিটি এবং মনোযোগের ঘাটতির মতো রোগে ভোগে।

আচরণ সংক্রান্ত সমস্যা বাড়ে

অনেক গবেষণায় দেখা গেছে, শিশুদের খাওয়ার সময় মোবাইল ফোন ব্যবহার করা তাদের মধ্যে স্থূলতা, ক্ষুব্ধতা এবং আচরণ সংক্রান্ত সমস্যা বাড়ায়। মোবাইল ফোনের অত্যধিক ব্যবহার তাদের একাগ্রতা এবং বিকাশকে বাধাগ্রস্ত করে| 

যেভাবে শিশুদের মোবাইল থেকে দূরে রাখা যাবে-

১. মোবাইল এবং টিভি দেখার সময় ঠিক করুন এবং কঠোরভাবে প্রয়োগ করুন।

২. খাওয়ার সময় বা ঘুমানোর আগে কখনই শিশুদের মোবাইল ফোন দেবেন না। এই সময় শিশুদের সঙ্গে কথা বলুন।

৩. শিশুদের জন্য যে নিয়মগুলি সেট করুন না কেন, সেগুলি নিজেই অনুসরণ করুন।

৪. গল্প বলা, বোর্ড গেমস, নানা কাজকর্মে শিশুদের নিযুক্ত করুন।

শিশুদের বোঝানো, খাওয়ানো বা প্রলুব্ধ করার জন্য কখনই মোবাইল ফোন ব্যবহার করবেন না।

এস/ আই. কে. জে/


মোবাইল শিশু

খবরটি শেয়ার করুন