সোমবার, ৮ই জুলাই ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
২৩শে আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সন্ত্রাসীকে আড়াল করার প্রচেষ্টায় কঠোর সমালোচনার শিকার চীন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ০১:১৮ অপরাহ্ন, ২৪শে জুন ২০২৩

#

মুম্বাই হামলার মাস্টারমাইন্ড পাকিস্তান ভিত্তিক লস্কর-ই-তৈয়বা (এলইটি) নেতা সাজিদ মীর

পাকিস্তান ভিত্তিক লস্কর-ই-তৈয়বা (এলইটি) নেতা সাজিদ মীরকে কালো তালিকাভুক্ত করার সিদ্ধান্তে বাধা প্রদান করেছে চীন। মুম্বাইয়ের ২৬/১১ পরিকল্পনার অন্যতম সন্ত্রাসী এই সাজিদ মীর। চীনের এ কার্যক্রমের ব্যাপক নিন্দা জানায় ভারত। ভারত জানায়, জাতিসংঘ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দিকে লক্ষ্য রেখে সন্ত্রাসবাদের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় যেখানে কাজ করতে চাইছে, সেখানে ক্ষুদ্র ভূ-রাজনৈতিক স্বার্থের কারণে জাতিসংঘের এ কাজে বাধা দিচ্ছে চীন।

যুক্তরাষ্ট্র এবং ভারত একত্রে ১২৬৭ আল কায়েদা নিষেধাজ্ঞা কমিটির অধীনে মীরকে বৈশ্বিক সন্ত্রাসী হিসেবে কালো তালিকাভুক্ত করতে চাইলে চীন গত মঙ্গলবার এ প্রস্তাব অবরুদ্ধ করে। এ প্রস্তাবের অধীনে মীরের সমস্ত সম্পদ জব্দ হতো এবং তার বিরুদ্ধে ভ্রমণ ও অস্ত্র নিষেধাজ্ঞাও জারি হতো।

ভারতের সিনিয়র কূটনৈতিক এবং যুগ্ম সচিব প্রকাশ গুপ্ত, যিনি নয়াদিল্লিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের  জাতিসংঘের রাজনৈতিক বিভাগের প্রধান হিসেবে দায়িত্বরত, তিনি নিউইয়র্কে জাতিসংঘের কাউন্টার টেরোরিজম বিষয়ক উচ্চ পর্যায়ের সম্মেলনে বক্তৃতাকালে একটি অডিওবার্তা শুনান, যেখানে সাজিদ মীর ফোনে তাজ হোটেলে বিদেশি পর্যটকদের উপর হামলা চালাতে এবং হত্যা করতে সন্ত্রাসীদের নির্দেশনা দিচ্ছিলেন।

তিনি বলেন, মুম্বাই সন্ত্রাসী হামলার মাস্টারমাইন্ড সাজিদ মীরকে ভারত, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং আরও কয়েকটি দেশের জাতীয় আইনে নিষিদ্ধ সন্ত্রাসী হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। কিন্তু এ ঘটনা জাতিসংঘে উত্থাপন করা হলে নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য তাতে আপত্তি জানান, যদিও বেশিরভাগ দেশই এ সিদ্ধান্তের পক্ষে ছিল।

তিনি জাতিসংঘের রাজনৈতিক প্রতিনিধিদের বলেন, যদি তুচ্ছ ভূ-রাজনৈতিক কারণে একজন কুখ্যাত সন্ত্রাসীকে আন্তর্জাতিকভাবে নিষিদ্ধ না করা যায়, তবে সন্ত্রাসবাদ দমনের চ্যালেঞ্জ আরও কঠিন হয়ে পড়বে।

যেখানে এ সন্ত্রাসীর বিরুদ্ধে প্রমাণ রয়েছে এমন অবস্থায় কোনও কারণ ছাড়াই এ সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করা কি আদৌ সমীচীন, বলে প্রশ্ন করেন তিনি।

দুঃখ প্রকাশ করে তিনি বলেন, মুম্বাই হামলার ১৫ বছর পরেও পাকিস্তান এসব সন্ত্রাসীদের বিচারের আওতায় আনে নি।

নিউইয়র্ক এবং মুম্বাইয়ের সন্ত্রাসী হামলার মাঝে সংযোগ স্থাপন করে তিনি বলেন, নিউইয়র্কের ৯/১১ সন্ত্রাসী বোমা হামলা বিশ্বব্যাপী সন্ত্রাসবিরোধী স্থাপত্যের দৃশ্যপটকে বদলে দিয়েছিল, অন্যদিকে ২৬/১১ মুম্বাই সন্ত্রাসী হামলা বিশ্বের সম্মিলিত বিবেককে নাড়া দিয়েছিল। 

সীমান্তের ওপার থেকে দশজন সন্ত্রাসী প্রশিক্ষণ নিয়ে সীমানা পেরিয়ে ভারতে চলে আসে এবং তিন দিনের ধ্বংসযজ্ঞে ১৬৬ জন নিরীহ ব্যক্তিদের হত্যা করে, যার মধ্যে ২৬ জনই ছিলেন বিদেশি নাগরিক।

এলইটি-র প্রধান অপারেটর, মীর ভারতের মোস্ট ওয়ান্টেড সন্ত্রাসীদের একজন। আশ্চর্যের বিষয়, কয়েক বছর আগে পাকিস্তান কর্তৃপক্ষ মীরকে মৃত ঘোষণা করেছিল। যাইহোক, যখন যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্যান্য পশ্চিমা দেশগুলো পাকিস্তান থেকে তার মৃত্যুর প্রমাণ খুঁজতে শুরু করে, তখন ইসলামাবাদে তাকে জীবিত খুঁজে পায় এবং যথাযথভাবে গ্রেফতার করে।

গত বছরের জুনে, মীরকে পাকিস্তানের একটি সন্ত্রাসবিরোধী আদালতে সন্ত্রাসে অর্থায়নের মামলায় ১৫ বছরেরও বেশি সময়ের জন্য কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

এন/আই. কে. জে/

Important Urgent

খবরটি শেয়ার করুন