সোমবার, ৮ই জুলাই ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
২৩শে আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সড়কের ডিভাইডারে ব্যাতিক্রমী শাক-সবজি চাষ

নিউজ ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ০৯:২৪ অপরাহ্ন, ২০শে নভেম্বর ২০২৩

#

ছবি-সংগৃহীত

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের দুই লেনের মাঝে ১২ ফুট প্রশস্ত ডিভাইডার (মিডিয়ান) আছে। এ ডিভাইডারে ফুল ও ঔষধিসহ বিভিন্ন গাছ রোপণ করেছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ)। যা এরই মধ্যে বড় হয়েছে। এসব গাছ থেকে মহাসড়কের যাত্রীরা পাচ্ছেন বিনোদন ও অক্সিজেন। আর পরিবহন চালকরা পাচ্ছেন গাছের ছায়ায় শীতল সড়ক।

এদিকে ডিভাইডারে লাগানো গাছের ফাঁকে ফাঁকে খালি জায়গায় চাষ হচ্ছে বিভিন্ন জাতের শাক, সবজি ও নানা জাতের ফসল। এ যেন পিচঢালা কালো সড়কে লাল-সবুজের হাসি। মাটির উর্বরতা ভালো হওয়ায় চমৎকার ফলনে কৃষকদের আয়ও বেড়েছে। সাধারণ মানুষ পাচ্ছে তরতাজা শাক সবজি।

দেশের এক ইঞ্চি জায়গাও আবাদহীন থাকবে না। প্রধানমন্ত্রীর এমন ঘোষণাকে কাজে লাগিয়ে ফেনীর কৃষকরা সড়কের মিডিয়ানে শাক সবজি চাষাবাদ করে যাচ্ছেন। বিষয়টিকে ইতিবাচক দেখেই কৃষকদের সহযোগিতার আশ্বাস দিচ্ছে কৃষি বিভাগ।

সড়ক ও জনপথ বিভাগ জানায়, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ফেনী অংশে ২৭ দশমিক ৪০ কিলোমিটার সড়ক রয়েছে। কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার পর মোহাম্মদ আলী থেকে চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ের আগে ধুমঘাট ব্রিজ পর্যন্ত মধ্যবর্তী স্থানটি ফেনী জেলার অংশ। মহাসড়কের এ অংশের দুই লেনের মাঝখানে ১২ থেকে ২০ ফুট পর্যন্ত খালি জায়গা রয়েছে।

ওই জায়গায় সড়ক কর্তৃপক্ষ মাটি ভরাট করে বিভিন্ন জাতের ঔষধি গাছ, ফুল গাছ ও প্রয়োজনীয় গাছ রোপণ করেছে। এসব গাছ থেকে মহাসড়কের যাত্রীরা পাবেন বিনোদন ও অক্সিজেন। আর পরিবহন পাবে গাছের ছায়ায় শীতল সড়ক।

সড়ক বিভাগের লাগানো গাছের নিচে পরিত্যক্ত জায়গায় স্থানীয় কৃষকরা চাষাবাদ শুরু করেছেন। তারা ওই মিডিয়ানে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে মরিচ, মুলা, পালং শাক, লাল শাক, মিষ্টি কুমড়া, লাউ, শিম, ঢেঁড়স, ধনেপাতাসহ শীতকালীন বিভিন্ন সবজির চাষাবাদ করছেন। দূর থেকে দেখলে মনে হয় পিচ ঢালা কালো মহাসড়কের মাঝে যেন লাল-সবুজের মিতালী।

সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, ফেনী সদর উপজেলা অংশে মহাসড়কের ছনুয়া, লেমুয়া, ফরহাদ নগর, ফাজিলপুর ইউপির বিভিন্ন গ্রামে মহাসড়কের মিডিয়ানে বিভিন্ন প্রকারের ফসলে ভরে গেছে। দৃশ্যটি মহাসড়কের সৌন্দয্য বহুগুণে বাড়িয়ে দিয়েছে। 

আশপাশের কৃষক ও ভূমিহীন ব্যক্তিরা পরিত্যক্ত এ মিডিয়ানকে উৎপাদনে কাজে লাগিয়ে স্থানীয়দের তরতাজা শাকসবজি সরবরাহ করছেন। নিজেদের পরিবারের চাহিদা মিটিয়ে বিক্রি করে কিছু নগদ টাকাও আয় করছেন। সড়কের মিডিয়ানে শাকসবজি চাষ করতে পেরে খুশি কৃষকরা।

মহাসড়কের ফাজিলপুর ইউপির কৃষক আহমেদ করিম জানান, সড়কের মাঝখানে খালি জায়গায় ভরাট করা মাটিগুলো ফসল উৎপাদনের জন্য খুবই উর্বর। তাই আশপাশের কৃষকরা শীতকালীন নানা শাকসবজি উৎপাদন করেছেন। এতে করে একদিকে স্থানীয়রা তরতাজা শাকসবজি পাচ্ছেন; অন্যদিকে গরিব কৃষকদের আয় রোজগার হচ্ছে। এটি একটি ভালো দিক।

কালিদহ ইউপির মাইজবাড়িয়া এলাকার কৃষক ছালেহ আহাম্মদ বলেন, রাস্তার পাশেই আমার ঘর। ভিটে ছাড়া আর কোনো জায়গা নেই। তাই রাস্তার মাঝখানের খালি জায়গায় গত ২ বছর শীতকালে চাষাবাদ করি। এ বছর শীতকালীন সবজি মুলা, পালং শাক, লাল শাক, মিষ্টি কুমড়া ও ধনেপাতার চাষ করেছি। 

আরো পড়ুন: বন মোরগের খামার করে পাহাড়ি দম্পতির ভাগ্যবদল

এরই মধ্যে কিছু লাল শাক ও মুলা শাক বিক্রি করেছি। নিজের হাতে লাগানো শাকসবজি দিয়ে পরিবারের চাহিদা মিটাচ্ছি। আশপাশের মানুষ সকালে এসে শাকসবজি কিনে নেয়। নিজেকে উৎপাদনে জড়াতে পেরে ভালো লাগছে। কিছু আয়ও হচ্ছে।

এসি/ আই.কে.জে/



সবজি চাষ সড়কের ডিভাইডার

খবরটি শেয়ার করুন