বুধবার, ১৭ই জুলাই ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
১লা শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পুঁইশাক যেভাবে চাষ করলে লাভবান হবেন

নিউজ ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ১২:৩৭ অপরাহ্ন, ১৮ই ডিসেম্বর ২০২৩

#

ছবি-সংগৃহীত

পুঁই এক প্রকার লতা জাতীয় উদ্ভিদ। পুঁই গাছের পাতা ও ডাঁটি শাক হিসেবে খাওয়া হয় বলে সচরাচর একে পুঁই শাক হিসাবে উল্লেখ করা হয়। সঠিক পদ্ধতিতে পুঁই শাক চাষ করলে অধিক লাভবান হওয়া যায়।

গ্রীষ্মমণ্ডলীয় অঞ্চলে পুঁইশাক জন্মে। গরম ও আর্দ্র আবহাওয়া এবং রোদ পুঁইশাক গাছের পছন্দ। কম তাপমাত্রায় গাছের বৃদ্ধি ও ফলন কম হয়। সব ধরনের মাটিতেই পুঁইশাক জন্মে। বাণিজ্যিকভাবে পুঁইশাক চাষের ক্ষেত্রে দো-আঁশ, বেলে দো-আঁশ ও এঁটেল মাটিযুক্ত জমি বেছে নিতে হবে।

পুঁইশাক চাষে কিভাবে চারা তৈরি করবেন :

সারিতে বুনলে প্রতি শতকে ৮-১০ গ্রাম বীজ লাগবে। ছিটিয়ে বুনলে বীজের পরিমাণ বেশি লাগবে। পুঁইশাকের বীজ বপনের জন্য ১৮ থেকে ২০ সেন্টিগ্রেড তামপাত্রা প্রয়োজন। তাই শীতের সময় যখন তাপমাত্রা কম থাকে সেই সময় বীজ বপন করা ভালো। সাধারণতঃ গ্রীষ্মকালে এর চাষ ভালো হয়।

বীজ ২৪ ঘণ্টা পানিতে ভিজিয়ে রেখে পরে জমিতে বুনতে হয়। কখনও কখনও বেডে চারা তৈরি করা হয়। ফেব্রুয়ারি থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত চারা তৈরির জন্য বেডে বা পলিব্যাগে বীজ বোনা হয়। চারা দু সপ্তাহের হলে সেগুলো তুলে মূল জমিতে লাগানো যায় বা ফাঁকা জায়গা পূরণ করা যায়। সারিতে বুনলে প্রতি শতকে ৮-১০ গ্রাম ও হেক্টর প্রতি ১.৫-২.৫ কেজি বীজ লাগবে।

উপযুক্ত জমি তৈরি ও চারা রোপন :

জমির আগাছা পরিস্কারের পর ৫ থেকে ৬টি চাষ ও মই দিয়ে জমির মাটির উত্তমরূপে তৈরি করতে হবে। চারা উৎপাদন করে ১৫-২০ দিনের চারা লাগানো যায়। পুঁই শাকের চারা রোপণের জন্য সারি থেকে সারি ১ মিটার এবং প্রতি সারিতে ৫০ সেন্টি মিটার দূরে দূরে চারা রোপণ করতে হয়।

পুঁইশাক চাষে সার প্রয়োগ/ব্যবস্থাপনা :

ইউরিয়া ছাড়া সব সারই জমি তৈরির সময় প্রয়োগ করতে হবে। চারার বয়স ১০-১২ দিন হলে ইউরিয়া সার প্রথম কিস্তি ৩০-৪০ দিন পর এবং প্রথমবার ফলন তোলার পর বাকি দুই কিস্তি এই মোট তিন কিস্তিতে উপরি প্রয়োগ করতে হবে।

গোবর ও টিএসপির অর্ধেক জমি তৈরীর সময় এবং বাকি অর্ধেক চারা রোপণের সময় গর্তে প্রয়োগ করতে হবে। পুঁইশাক চাষে শতক প্রতি সারের মাত্রা হল গোবর ৬০ কেজি, সরিষার খৈল ৫০০ গ্রাম, ইউরিয়া ৮০০ গ্রাম টিএসপি ৪০০ গ্রাম এবং এমওপি ৪০০ গ্রাম।

আরো পড়ুন: বিশ্ববিদ্যালয় গ্র্যাজুয়েট হয়েও মেলেনি চাকরি, মাশরুম চাষে আয় ৬ লাখ টাকা

পুঁইশাক চাষে সেচ ও পানি নিষ্কাশন :

বর্ষায় সাধারণত সেচ দেয়ার প্রয়োজন পড়ে না। মাটিতে রস না থাকলে অবশ্যই সেচ দিতে হবে। প্রায়ই মাটি আলগা করে দিতে হবে।

পুঁইশাক চাষে আগাছা ও নিড়ানি : আগাছা পরিষ্কার করতে হবে। ফলন বেশি পেতে হলে বাউনি দিতে হবে। পুঁইশাক গাছের গোড়ায় কখনই পানি জমতে দেয়া যাবে না। তাহলে গাছের গোড়া পচে যেতে পারে।

আবার অনেক বৃষ্টিপাত হলে দেখা যায় যে গোড়ার মাটি ধুয়ে যায়। তাই বৃষ্টির পর গাছের গোড়ায় মাটি দিয়ে চেপে দিতে হবে। চারা ২৫-৩০ সেন্টিমিটার উঁচু হলে আগা কেটে দিতে হবে, এতে গাছ ঝোপালো হয়।

পোকামাকড় ও রোগদমন : পুঁইশাকে পাতার বিটল বা ফ্লি বিটল ছাড়া আর কোনো পোকা তেমন ক্ষতি করে না। এই পোকা পুঁইশাকের পাতা ছোট ছোট ছিদ্র করে ফেলে।

সারকোস্পোরা পাতার দাগ পুঁইশাকের একটি মারাত্মক রোগ। এছাড়াও আরও কয়েকধরনের রোগ পুঁইশাক গাছে দেখা দিতে পারে। ছত্রাকনাশক স্প্রে করে এসব রোগ নিয়ন্ত্রণ করা যায়।

পুঁইশাক গাছের ডগা মাঝে মাঝে কেটে দিতে হবে। এতে শাক খাওয়াও হয় আবার গাছে নতুন ডগাও বের হয়। পুঁইশাকের ফলন প্রতি শতকে ২০০ থেকে ২৮০ কেজি এবং হেক্টোর প্রতি ৫০ থেকে ৭০ টন ।

এসি/ আই. কে. জে/


পুঁইশাক চাষ

খবরটি শেয়ার করুন