মঙ্গলবার, ২৭শে আগস্ট ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
১১ই ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

২৫ বিঘা জমিতে হলুদ চাষে অর্ধকোটি টাকা লাভের আশা রবিউলের

নিউজ ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ১১:০৯ পূর্বাহ্ন, ৮ই অক্টোবর ২০২৩

#

ছবি-সংগৃহীত

টেলিভিশন ও সংবাদপত্রে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনের কৃষি খামার দেখে ও তার নির্দেশনা ‘দেশের কোথাও এক ইঞ্চি জমিও যেন পড়ে না থাকে’ এমন কথায় অনুপ্রাণিত হয়ে লিজ নিয়ে অনাবাদি ২৫ বিঘা জমিতে মসলা জাতীয় ফসল হলুদ চাষ করেছেন রবিউল ইসলাম (রবি)।

২৫ বিঘা জমির এই হলুদ থেকে এবার অর্ধকোটি টাকা লাভের আশা করছেন ঠাকুরগাঁওয়ের যুবক ব্যবসায়ী ও কৃষি উদ্যোক্তা মো. রবিউল ইসলাম।

সরেজমিনে দেখা যায়, অনাবাদি ফসলি জমিতে হলুদ গাছের সমারোহে আশপাশের প্রকৃতি সবুজে ভরে উঠেছে। বাতাসে দোল খাচ্ছে পাতাগুলো। আর হলুদ ক্ষেতে পরিচর্যায় কাজ করছেন ২৫-৩০ জন নারী পুরুষ।

কেউ বা আবার অন্যান্য ফসল বাদালা ক্ষেতের পরিচর্যায় দিনভর ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রায় ২৫ জন নারী-পুরুষ শ্রমিক। তাছাড়া পুকুরে মাছ চাষে কাজ করছেন ৪ জন পুরুষ।

সদর উপজেলার দক্ষিণ ঠাকুরগাঁওয়ের আকচা ইউনিয়নের মুন্সিপাড়া গ্রামের মৃত গিয়াসউদ্দিনের ছেলে রবি।

জানা যায়, তিনি ব্যবসার পাশাপাশি গত বছর অনাবাদি দেড় বিঘা জমিতে বগুড়া পাটনাই জাতের হলুদ চাষ করেছিলেন। এতে তার এক বিঘা জমিতে হলুদের ফলন হয়েছিল ১৬০ মণ। তাতে এবার তিনি ৩৫ বিঘা জমি লিজ নেন। তার মধ্যে শুধু ২৫ বিঘা জমিতে চাষ করছেন হলুদ।

চলতি বছরের বৈশাখ মাসে এসব জমিতে রোপণ করেন হলুদ। মাত্র সাড়ে চার মাসে হলুদের গাছপালা গত বছরের তুলনায় দ্বিগুণ গ্রোথ ও চেহারা ভালো হওয়ায় এবার তিনি বিঘায় প্রায় ২০০ মণ ফলনের আশা করছেন।

এছাড়াও তিনি বাকি জমিগুলোতে বাদাম, আদা, ফুলকপি, মূলা, আখ ছাড়াও পুকুরে মাছ চাষ করেছেন। তার এমন কার্মকাণ্ড স্থানীয় উদ্যোক্তা ও চাষিদের মাঝে বেশ সাড়া জাগিয়েছে।

তার এমন উদ্যোগের ফলে আয়ের উৎস খুঁজে পেয়েছেন ৫০ থেকে ৬০টি পরিবার। এতে শ্রমিকরা কাজ করে আয়ও করছেন ভালো।

তার খামারে কাজ করা স্থানীয় শ্রমিক আহসান হাবীব, রাজা, স্মৃতি রাণী সেনসহ অন্যান্যরা বলেন, আগে আমরা কাজ পেতাম না। এখন রবিউল ভাইয়ের বিভিন্ন ফসলের ক্ষেতে ও পুকুরে প্রতিদিন ৫০-৬০ জন মানুষ কাজ করছি। এতে তার উছিলায় আমরা আয় করে সংসার চালাতে পারছি।

তার কৃষি চাষাবাদ দেখে এখন স্থানীয় কৃষকরাও উদ্বুদ্ধ হয়ে আগামীতে মসলা জাতীয় ফসল চাষে আগ্রহী হচ্ছেন।

অন্যদিকে স্থানীয় কৃষক আব্দুল মজিদ, নজরুল ইসলাম, আব্দুল হাকিম বলেন, আমাদের এই দিকে আগে তেমন হলুদ, আদা ও বাদাম চাষ হতো না। অনাবাদি জমিতেও যে হলুদ আদা ও বাদামের চাষ ভালো হয় তাও আমাদের জানা ছিল না। রবিউলের মাধ্যমে তা জানতে পারি। তাই আগামীতে আমরাও এসব চাষ করার চিন্তাভাবনা করছি।

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় ও তার বাসভবনে কৃষি খামার বিভিন্ন পত্রিকায় ও টেলিভিশনে দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে ব্যবসার পাশাপাশি এমন চাষাবাদ শুরু করেন বলে জানান রবি।

তিনি বলেন, কৃষির মতো ব্যবসায়েও এতোটা লাভবান হওয়ার সম্ভবনা নেই। তাই আমি এবার ৩৫ বিঘা জমি লিজ নিয়ে চাষাবাদ করি। এর মধ্যে অনাবাদি ২৫ বিঘা জমিতে হলুদ ও এক বিঘা জমিতে আদা চাষ করেছি। আর বাকি জমিতে বাদাম, কপি, মূলা আখ চাষ করেছি। হলুদ চাষে ২৫ বিঘাতে সব মিলিয়ে আমার প্রায় ২০-২৫ লাখ টাকা খরচ হবে।

আমরা কৃষকরা যদি ফসলের ন্যায্য মূল্য পাই তাহলে খরচ বাদ দিয়ে শুধু এই মৌসুমে হলুদ থেকে অর্ধকোটি টাকা এবং অন্যান্য ফসল ও পুকুরের মাছ থেকে অর্ধকোটি টাকা মোট ১ কোটি টাকা লাভ হবে ইনশাআল্লাহ।

আরো পড়ুনঃ হাজারো মানুষের কর্মসংস্থান ঝিনাইদহে, ৫৩৮ কোটি টাকার ড্রাগন উৎপাদন

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালকের তথ্য মতে, এ জেলার মাটি উর্বর ও উঁচু এবং মাঝারি উঁচু হওয়ায় সবজি ও ফলের চাষ অনেক ভালো হয়।

এসি/ আই.কে.জে

হলুদ

খবরটি শেয়ার করুন