ছবি: সংগৃহীত
রান্নায় ব্যবহৃত এক সাধারণ উপকরণ হলো তোকমা। অনেকে একে বলেন বিলাতি তোকমার বীজ। সুগন্ধী এ ভেষজ ব্যবহার করা হয় এর কড়া, মিষ্টি ও হালকা ঝালযুক্ত স্বাদের জন্য। ইতালি, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম ও ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলের রান্নায় তোকমার ব্যবহার বেশি।
ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদন বলছে, তোকমা শুধু রান্নায় নয়, এটি দিয়ে তৈরি পানীয়ও বেশ উপকারী। তোকমা বীজ পানিতে ভিজিয়ে রেখে এ পানীয় তৈরি করা হয়। তোকমা বীজ ছোট ও কালো এবং পানিতে ভেজালে চিয়া বীজের মতো নরম ও আঠালো রূপ নেয়। তোকমা বীজের পানি প্রায়ই বিভিন্ন ফল, মিষ্টান্ন এবং বিভিন্ন ভেষজের সঙ্গে মিশিয়ে পানীয় তৈরি করা হয়।
তোকমা বীজের পানীয় স্বাস্থ্যকর ও পুষ্টিকর। এর বেশ কিছু স্বাস্থ্যগত উপকারী গুণ রয়েছে—হজমে সহায়তা করে, ওজন কমাতে সহায়তা করা, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে, ত্বকের স্বাস্থ্যে উন্নতি করে এবং শরীরে ঠান্ডা ও সতেজ ভাব আনে।
তোকমা বীজে রয়েছে ফাইবার, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, আয়রন ও ম্যাগনেশিয়ামের মতো খনিজ এবং উপকারী ফ্যাটি অ্যাসিড। তোকমা বীজে ভিটামিন ‘কে’-এর মতো পুষ্টি উপাদানসহ খনিজ (ক্যালসিয়াম) এবং আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট আছে।
তোকমা বীজের পানি দেহে তরলের ঘাটতি পূরণ করে। শরীরের বিপাকক্রিয়া ঠিক রাখার জন্য সঠিক মাত্রার হাইড্রেশন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
তোকমা বীজে রয়েছে মিউসিলেজ। এটি একধরনের জেলজাতীয় পদার্থ, যা পানিতে ভেজালে ফুলে ওঠে। এই জেলজাতীয় পদার্থ অন্ত্রের কার্যক্রম নিয়মিত করে খাবার হজমে সাহায্য করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।
তোকমা বীজের ফাইবার পাকস্থলীতে পূর্ণতার অনুভূতি বাড়ায়। এর ফলে অতিরিক্ত খাবারের চাহিদা কমে। এ ছাড়া খাবার হজমে এবং প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান শোষণে সাহায্য করে, এতে সঠিক ওজন বজায় রাখা সম্ভব হয়।
রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে তোকমা বীজের ইতিবাচক প্রভাব রয়েছে। তোকমা বীজ রক্তপ্রবাহে শর্করা সরবরাহের গতি কমিয়ে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রার বাড়া-কমা নিয়ন্ত্রণ করে।
তোকমা বীজে উপস্থিত পলিফেনলের মতো অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট হৃদ্রোগের ঝুঁকি কমায়। এগুলো রক্তে কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ ও হৃৎপিণ্ডের সঠিক কার্যক্রম বজায় রাখতে সাহায্য করে।
তবে মনে রাখা জরুরি, তোকমা বীজের পানির নির্দিষ্ট স্বাস্থ্যগত সুফলের ওপর গবেষণা সীমিত। অন্য যে কোনো খাবারের মতোই এ পানীয় পরিমিত পরিমাণে গ্রহণ করা উচিত। স্বাস্থ্যগত কোনো জটিলতা থাকলে খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আনার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
জে.এস/
খবরটি শেয়ার করুন