ফাইল ছবি (সংগৃহীত)
প্রায় দেড় দশক পর প্রথম উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে বাংলাদেশের কাছে কাশ্মীর নিয়ে ভারতের সঙ্গে দ্বন্দ্বের প্রসঙ্গ তুলে ধরেছে বলে দাবি পাকিস্তানের। গত বৃহস্পতিবার (১৭ই এপ্রিল) ঢাকায় অনুষ্ঠিত দুই দেশের পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের বৈঠকে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রসচিব আমনা বালুচ কাশ্মীর ইস্যু উত্থাপন করেন বলে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, অবৈধভাবে অধিকৃত ভারতীয় জম্মু ও কাশ্মীরের (আইআইওজেকে) পরিস্থিতি সম্পর্কেও বাংলাদেশকে অবহিত করেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্রসচিব। জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব ও কাশ্মীরের জনগণের আকাঙ্ক্ষার আলোকে এ বিরোধের দ্রুত সমাধানের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
তবে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যে বিবৃতি দিয়েছে, তাতে পাকিস্তানের পক্ষ থেকে ভারতীয় জম্মু ও কাশ্মীরের প্রসঙ্গ তোলার কোনো উল্লেখ নেই। অন্যদিকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে একাত্তরে গণহত্যার জন্য ক্ষতিপূরণসহ বেশ কিছু বিষয় বৈঠকে উত্থাপন করা হলেও সেগুলোর উল্লেখ পাকিস্তানের বিবৃতিতে ছিল না।
বৈঠকে দুই পক্ষই দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থা (সার্ক) পুনরুজ্জীবনের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেয়। পাকিস্তানের বিবৃতিতে বলা হয়, বহুপক্ষীয় ইস্যুগুলোর আলোচনার ক্ষেত্রে দুই পক্ষই মূলনীতিসহ সার্ক পুনরুজ্জীবিত করার প্রয়োজনীয়তার কথা পুনর্ব্যক্ত করেছে।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতেও সার্কের অধীনে সহযোগিতা জোরদারে একসঙ্গে কাজ করার গুরুত্বের কথা তুলে ধরা হয়েছে।
প্রায় ১৫ বছর পর দুই দেশের মধ্যে প্রথম উচ্চপর্যায়ের বৈঠক ছিল পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের বৈঠক। বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে নেতৃত্ব দেন পররাষ্ট্রসচিব জসীম উদ্দিন। এ মাসেই পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দারের ঢাকা সফরের কথা রয়েছে। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে আরও বেশ কিছু বিষয় বৈঠকে উত্থাপন করা হলেও সেগুলোর উল্লেখ পাকিস্তানের বিবৃতিতে নেই।
বৈঠকে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর গণহত্যার জন্য দুঃখপ্রকাশ, যুদ্ধের ক্ষতিপূরণ, ১৯৭০ সালের ঘূর্ণিঝড় ভোলার ত্রাণ অর্থের হস্তান্তর, আটকে পড়া পাকিস্তানিদের প্রত্যাবাসন ও সম্পদ বণ্টনের মতো বহু পুরোনো ইতিহাসভিত্তিক বিষয় তুলে ধরেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রসচিব।
বাংলাদেশের বিবৃতিতে বলা হয়, দুই দেশের মধ্যে সুদৃঢ় ও মজবুত সম্পর্কের ভিত্তি গড়ে তোলার স্বার্থে দীর্ঘদিনের ঐতিহাসিক বিষয়গুলোর দ্রুত নিষ্পত্তির আহ্বান জানানো হয়েছে। তবে পাকিস্তানের বিবৃতিতে ১৯৭১ সালের গণহত্যাসংক্রান্ত কোনো বিষয়ের উল্লেখ ছিল না।
এইচ.এস/
খবরটি শেয়ার করুন