একদিকে ক্রেতা সংকট অপরদিকে অতিরিক্ত গরমে হিলি স্থলবন্দরের গুদাম গুলোতে থাকা অধিকাংশ পেঁয়াজ পঁচে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এতে বিপাকে পড়েছেন স্থলবন্দরের আমদানিকারকরা। বাধ্য হয়ে ১০ থেকে ১২ টাকা কেজি দরে এসব পেঁয়াজ বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা।
সোমবার (৪ সেপ্টেম্বর) হিলি স্থলবন্দরে খোঁজ নিয়ে জানা যায় বেশি দামের আশায় মজুদ করে রাখায় এসব পেঁয়াজ নষ্ট হয়ে গেছে। অবশ্য কিছুটা গরম ও ক্রেতা সংকটের কারণেও নষ্ট হয়েছে। তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক ব্যবসায়ী জানিয়েছেন, মূলত একটু বেশি দামে বিক্রির আশায় রেখে দেয়া হয়েছিল। এ কারণে গরমে পেঁয়াজ নষ্ট হয়ে গেছে।
এদিকে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে ইন্দোর ও নাসিক জাতের এই দুই জাতের পেঁয়াজ আমদানি অব্যাহত আছে। আর বন্দরের পাইকারি বাজারে ভালোমানের ইন্দোর জাতের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা আর নাসিক জাতের পেঁয়াজ ৫৬ টাকা কেজি দরে। আর বন্দরের বিভিন্ন আমদানিকারকের গুদামে একটু ভালোমানের পেঁয়াজ ৪২ থেকে ৪৪ টাকা আর নিম্নমানের পেঁয়াজ ২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। বিভিন্ন গুদামে পেঁয়াজ বাছাইয়ের কাজ করছেন লেবাররা।
হিলি বন্দরের গুদাম ম্যানেজার বাবু হোসেন বলেন, ‘ভারতে পেঁয়াজ কিনে ৫ ট্রাকে লোড করার সময় বৃষ্টি হয়েছে। তারপর পেঁয়াজের মান খারাপ, এরপর প্রচন্ড গরম। সব মিলিয়ে গুদামে পেঁয়াজ নামিয়ে বাছাই করা হচ্ছে। ভালো মানের গুলো ৫০ টাকা, নিম্ন মানের গুলো ৪০ টাকা আর পচাগুলো ১২ টাকা আবার কোনোটি ১৫ থেকে ২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছি।
খুচরা ক্রেতা আনিছুল ইসলাম বলেন, ‘অতিরিক্ত গরমে পেঁয়াজ পচে নষ্ট হচ্ছে। আমি নিম্নমানের কিছু পচা পেঁয়াজ ২০ টাকা কেজিতে ১০ বস্তা কিনেছি। এগুলো নিজ গ্রামে নিয়ে গ্রামের মেয়েদের নিয়ে বাছাই করে বিক্রি করবো।’
হিলি স্থলবন্দরের পেঁয়াজ আমদানিকারক নাজমুল ইসলাম বলেন, ‘সে দেশে বন্যার কারণে পেঁয়াজের উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় সরবরাহ কমেছে। এদিকে রফতানি নিরুৎসাহিত করতে ভারতের কৃষি পণ্যের মূল্য নির্ধারণি সংস্থা গত ১৯ আগস্ট (শনিবার) ভারত সরকার পেঁয়াজ রফতানির ক্ষেত্রে ৪০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে। আবার পরের শুক্রবার (২৫ আগস্ট) রাতে ভারতীয় পেঁয়াজ রফতানিকারকরা জানান, পেঁয়াজ রফতানিতে এবার ২০৫ মার্কিন ডলার শুল্কায়ন মূল্য নির্ধরন করেছে সে দেশের সরকার। এদিকে আমদানি অব্যাহত রেখেছেন আমদানিকারকরা।
আমদানিকারক নাজমুল ইসলাম আরও বলেন, ‘আমদানিকৃত এসব পেঁয়াজ নিয়ে আমরা বিপাকে পড়েছি। এর কারণ হলো পচনশীল পণ্য হওয়ায় অতিরিক্ত গরমে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এ ছাড়া দাম বেড়ে ওঠার কারনে ক্রেতা সংকট দেখা দিয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘এক ট্রাকে পেঁয়াজ আমদানি হয় ৩২ টন এর মধ্যে প্রায় ২৫ টন ভালো আর বাকিটা নিম্ন মানের। এর মধ্যে কিছু ৪৫ টাকা কেজি দরে, আর বাঁকি গলো পচা। এ গুলো ১০-২০ টাকা কেজিতে বিক্রি করছি।’
হিলি স্থলবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন মল্লিক প্রতাপ বলেন, ‘ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি অব্যহত আছে। কোনো দিন ৩০ ট্রাক কোন দিন আবার ৫৫ ট্রাক। আমরা ব্যবসায়ীদের সুবিদার্থে কাস্টমের সকল প্রকার কার্যক্রম শেষে পেঁয়াজ গুলো দ্রুততার সাথে খালাস করে বাজারজাত করতে পারে, তার সব ব্যবস্থা গ্রগন করে রেখেছি।’