শুক্রবার, ১০ই অক্টোবর ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
২৫শে আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ

*** মাহফুজ-সারজিসরা গণ–অভ্যুত্থানের প্রকৃত নায়ক নন, যা বললেন মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম *** মানুষের শরীরে শূকরের যকৃৎ, চীনা চিকিৎসকদের সাফল্য *** দায়মুক্তি পাচ্ছেন ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ৮টি ধারার মামলার আসামিরা *** নোবেল না পেলে ট্রাম্পের প্রতিক্রিয়া কী হবে—শঙ্কিত নরওয়ে *** অবশেষে গাজায় শান্তির আভাস, শান্তিচুক্তি সই *** সেফ এক্সিটকে সন্দেহের চোখে দেখছে বিএনপি, বিব্রত কোনো কোনো উপদেষ্টা *** থেমেছে ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান–কামানের গর্জন, ২ বছর পর শান্তির ঘুমে গাজাবাসী *** জামায়াতে ৪৩ শতাংশ নারী—এটা খুশির খবর, কিন্তু তাদের দেখা যায় না: শারমীন মুরশিদ *** তহবিলসংকটের কারণে এক-চতুর্থাংশ শান্তিরক্ষী কমাচ্ছে জাতিসংঘ *** খালেদা জিয়ার সেফ এক্সিটের দরকার পড়েনি: রিজভী

ঋণ নিতে গিয়ে ঘুষ না দেওয়ায় কৃষককে মারধর, শাস্তি দাবি

নিউজ ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ১১:১৬ অপরাহ্ন, ১৯শে সেপ্টেম্বর ২০২৩

#

ছবি: সংগৃহীত

ব্যাংক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে ঘুষ ও হয়রানীর অভিযোগ করায় গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে তদন্তের কথা বলে কৃষককে ডেকে নিয়ে ব্যাংকের মধ্যে ২ ঘণ্টা আটকে রেখে বহিরাগতদের দিয়ে মারধরের অভিযোগ ওঠেছে।

সোমবার (১৮) সেপ্টেম্বর দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে উপজেলার রামদিয়া কৃষি ব্যাংকে এ ঘটনা ঘটে। মারধরের একটি ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।

মারধরের শিকার ষাটোর্ধ্ব কৃষক দেনায়েত সরদার উপজেলার ফুকরা গ্রামের বাসিন্দা। তার সঙ্গে থাকা ছেলে তাকবীর সরদার (২৭) ও জামাতা মোতাকাব্বির মুন্সীকেও (২৫) মারধর করা হয়। পরে তাদের কাছ থেকে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ জোরপূর্বক সাদা কাগজে স্বাক্ষর রেখে ছেড়ে দেন বলে জানা গেছে।

কৃষক দেনায়েত সরদার জানান, এক মাস আগে গাভী মোটাতাজাকরণ প্রকল্পের জন্য ৩ লাখ টাকা ঋণ নিতে রামদিয়া কৃষি ব্যাংকে যান তিনি। এ সময় তিনি জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি ও এক কপি ছবি ব্যাংকে জমা দিয়ে আসেন। ২০ আগস্ট ব্যাংকের ইনভেস্টিগেশন অফিসার (আইও) রাফিজুল ইসলাম ওই কৃষকের বাড়িতে সরেজমিনে তদন্তে যান। পরে মিষ্টি খাওয়ার কথা বলে কিছু উৎকোচ দাবি করেন। কিন্তু দেনায়েত সরদার উৎকোচ দিতে রাজি না হওয়ায় নানা কারণ দেখিয়ে ঋণের আবেদন বাতিল করে দেন ওই কর্মকর্তা। এ বিষয়ে গত ৭ সেপ্টেম্বর কৃষক দেনায়েত সরদার বাংলাদেশ ব্যাংকের অভিযোগ সেলে ই-মেইলের মাধ্যমে একটি অভিযোগ দায়ের করেন। যার পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে গত সোমবার (১৮ সেপ্টেম্বর) গোপালগঞ্জ আঞ্চলিক শাখা ব্যবস্থাপক আব্দুল আজিজ ও তার সহযোগী অভিযোগের বিষয়টি তদন্তের জন্য রামদিয়া কৃষি ব্যাংকে যান। 

কৃষক আরও জানান, তদন্ত চলাকালে তদন্ত দলের সঙ্গে তার জামাতা মোতাকাব্বির মুন্সীর কথা কাটাকাটি হয়। তদন্তের জন্য ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপক ইলিয়াস হোসেন পূর্ব থেকে স্থানীয় কিছু লোকজন সাজিয়ে রাখেন। তদন্ত চলাকালে স্থানীয় ওই লোকজন অতর্কিতভাবে ব্যাংকের মধ্যে প্রবেশ করে অভিযোগকারী, তার ও সঙ্গে থাকা ছেলে এবং জামাতার সঙ্গে বাকবিতন্ডায় জড়িয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে তারা ব্যাংকের সবগুলো গেট ও দরজা লাগিয়ে এবং ব্যাংকের সিসি ক্যামেরা বন্ধ করে অভিযোগকারী ও তার লোকজনকে তদন্ত কর্মকর্তার সামনেই উপর্যপুরি কিলঘুষি, লাথি মেরে ফ্লোরে ফেলে পা দিয়ে আঘাত করে। পরে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ রামদিয়া তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশকে খবর দেয়। খবর পেয়ে ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের শনাক্ত ও তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে উল্টো ব্যাংক কর্তৃপক্ষ কৃষক ও তার লোকজনের কাছ থেকে সাদা কাগজে জোর করে স্বাক্ষর রেখে ছেড়ে দেয়।

এ বিষয়ে কাশিয়ানী থানা পুলিশের রামদিয়া তদন্ত কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘ব্যাংক কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে একজন গ্রাহক বাংলাদেশ ব্যাংক বরাবর ঘুষের অভিযোগ করেন। বিষয়টি তদন্ত করতে গোপালগঞ্জ থেকে কৃষি ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ব্যাংকে আসেন। তারা অভিযোগকারীর বক্তব্য শুনছিলেন। এ সময় অভিযোগকারীর জামাতা উত্তেজিত হলে ব্যাংকের গ্রাহকরা প্রতিবাদ করেন এবং তারা বাগবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। ব্যাংক কর্তৃপক্ষের কোনো অভিযোগ না থাকায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।’

ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপক মো. ইলিয়াস হোসেন ঘুষ চাওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘ঋণ চেয়ে না পেয়ে আমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন ওই কৃষক। তদন্ত কমিটি ব্যাংকে এলে বাদীপক্ষের লোকেরা অশোভন আচরণ করেন। পরে গ্রাহকরা এর প্রতিবাদ করে। পরিস্থিতি খারাপ দেখে ব্যাংকের গেট-দরজা লাগিয়ে পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। পুলিশ এসে তাদেরকে উদ্ধার করে।’

গোপালগঞ্জ কৃষি ব্যাংকের আঞ্চলিক শাখা ব্যবস্থাপক ও অভিযোগের তদন্ত কর্মকর্তা মো. আব্দুল আজিজ মারধরের কথা স্বীকার করে বলেন, ‘তদন্তের বিষয়টি ছিল তুচ্ছ একটি ঘটনা। আমি আমার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে তদন্তে গিয়েছিলাম। অভিযোগকারীর বক্তব্য শুনছিলাম। কিন্তু আমি বুঝতে পারিনি, ব্যাংকের মধ্যে এতো লোকজন ঢুকে পড়বে। আমি বিষয়টি কল্পনাও করিনি। যা সম্পূর্ণ অনাকাঙ্খিত। ঘটনাটি আমার নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গিয়েছিল। পরে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ এসেছিল।’

তবে কৃষককে মারধরের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করে শাখা ব্যবস্থাপকসহ জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন সাধারণ মানুষ।

এস/ আই.কে.জে

কৃষক ঋণ কৃষি ব্যাংক

সুখবর এর নিউজ পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

খবরটি শেয়ার করুন

Footer Up 970x250