ছবি: সংগৃহীত
পটুয়াখালীর কৃষকরা সারাবছরই শসা চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন। চাহিদা ও দাম ভালো পাওয়ায় অনেক কৃষক শসা চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছেন, জেলায় বাড়ছে শসার চাষও। ফলে এলাকার কৃষকদের আর্থ-সামাজিক অবস্থার যেমন উন্নতি হচ্ছে, পাশাপাশি জেলার বাইরেও পটুয়াখালীর শসা সরবরাহ করা হচ্ছে।
পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার গোলখালী আঞ্চলিক সড়কের পাশে ১১ একর জমি ইজারা নিয়ে শসা চাষ করেছেন কৃষি উদ্যোক্তা সীরাজ মীর। বাড়ি ভোলা জেলার নীলকমল ইউনিয়নে হলেও এবার তিনি এ এলাকায় শসা চাষ করে স্থানীয় কৃষকদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছেন। নিয়মিত পরিচর্যা ও আধুনিক পদ্ধতিতে চাষাবাদের কারণে ফলনও হয়েছে বেশ ভালো।
সীরাজ মীর বলেন, ‘আমাদের এলাকার সাথে সড়ক যোগাযোগ ভালো না। তাই এই এলাকায় শসা আবাদ করছি। এখানে বিকেলে শসা তুলে তা রাতের মধ্যেই দেশের বিভিন্ন বাজারে পাঠানো যায়। বিশেষ করে ঢাকার বাজার ধরতেই বেশি চেষ্টা করি। এখানে নারী-পুরুষসহ অনেক কৃষিশ্রমিক পাওয়া যায়। যে কারণে কৃষিকাজের পরিবেশ ভালো।’
এবার এলাকায় ১১ একর জমিতে শসা আবাদে প্রায় ২৩-২৪ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। যদি প্রতি কেজি শসা ২০ থেকে ২৫ টাকার মধ্যে বিক্রি করা যায়, তবে অর্ধকোটি টাকার শসা বিক্রি করা সম্ভব। যদি শসার কেজি ১২ থেকে ১৩ টাকায় নেমে আসে, তাহলেও চালানের টাকা আসবে। ১০ টাকার নিচে দাম এলে লোকসান হবে বলে জানান এই কৃষি উদ্যোক্তা।
শুধু সীরাজ মীর নন, এলাকার অনেকেই তার দেখাদেখি শসা চাষে আগ্রহী হচ্ছেন। অনেকেই আধুনিক কৃষিতে নিজেদের নিয়োজিত করছেন। এছাড়া বাণিজ্যিকভাবে শসা চাষের কারণে কৃষি ক্ষেত্রে অনেকের কর্মসংস্থানেরও সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।
আরো পড়ুন: লাভ বেশি হওয়ায় রাজবাড়ীতে সরিষার আবাদ বেড়েছে
পটুয়াখালী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. নজরুল ইসলাম বলেন, ‘জেলায় শীতকালীন তরমুজের পাশাপাশি কৃষক হাইব্রিড জাতের ডেইজি, ময়নামতি, সুপ্রিম প্লাস ও সুমাইয়া জাতের শসা চাষ করছেন।
গত বছর জেলায় ৮ হেক্টর জমিতে শসা চাষ হলেও চলতি বছর ১৬৩ হেক্টর জমিতে শসা চাষ করা হয়েছে। ফলন ভালো হওয়ায় তা স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের অন্য জেলায় সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে।’
পটুয়াখালীর বাজারে বর্তমানে প্রতি কেজি শসা ৪০ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হয়। তবে কৃষকেরা মাঠপর্যায়ে এখন ২০ থেকে ২৫ টাকা কেজিতে শসা বিক্রি করছেন। আগামী রমজান মাসকে উদ্দেশ্য করে অনেকেই নতুন করে শসা চাষ করছেন।
এসি/ আই. কে. জে/