ছবি: সংগৃহীত
স্থানীয়দের সাথে বুদ্ধ পূর্ণিমা উদযাপন করতে গত শনিবার অরুণাচল প্রদেশের তাওয়াং এর সঙ্গীতসার হ্রদের কাছে তক্তসাং গোম্পায় আসেন ভারতীয় সেনাবাহিনীর কর্মকর্তারা।
এ অনুষ্ঠানে সহায়তা করার পাশাপাশি স্থানীয়দের সাথে অনুষ্ঠানে অংশ নেন ভারতীয় সেনাবাহিনী।
গোম্পায় প্রার্থনার মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়। এ অনুষ্ঠান উপলক্ষ্যে ভারতীয় সেনাবাহিনী একটি মেডিকেল ক্যাম্পের আয়োজন করে, যেখানে স্থানীয়রা মেডিকেল চেকআপ করানোর সুযোগ পায়।
গোম্পার ছাত্রদের জন্য চেয়ারের ব্যবস্থাও করেন তারা। খ্রিষ্টীয় ৮ম শতাব্দীতে গুরু পদ্মসম্ভব যে তিনটি জায়গায় ধ্যানে বসেন, তার মধ্যে একটি এই তক্তসাং গোম্পা।
১২,৫০০ ফুট উঁচুতে পাহাড়ে ঘেরা এই গোম্পা। এটি শুধুমাত্র স্থানীয়দের কাছেই বিখ্যাত নয়, অনেক পর্যটক এই গোম্পা দর্শনের জন্যেও আসেন।
বিশ্বাস করা হয়, গুরু পদ্মসম্ভব ভারতের বিখ্যাত নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ছিলেন। বৌদ্ধধর্ম প্রচারের জন্য তিব্বতে যাওয়ার আগে এই গোম্পাতেই ধ্যানে বসেন তিনি।
৮ম শতাব্দীতে তিব্বতের রাজা ত্রিসং দেতসেন গুরু পদ্মসম্ভবকে বৌদ্ধধর্ম প্রচারের জন্য তিব্বতে আমন্ত্রণ জানান। গুরু পদ্মসম্ভবেরই নেতৃত্বে সেখানে প্রথম বৌদ্ধ মঠ প্রতিষ্ঠিত হয়।
গুরু পদ্মসম্ভব তার আধ্যাত্মিক শক্তির মাধ্যমে তিব্বতের সবার মন জয় করে তাদেরকে বৌদ্ধধর্মের পথে নিয়ে আসেন।
তিনি আধ্যাত্মিক বৌদ্ধধর্মের এক নতুন রূপের প্রবক্তা। তার অনুসারীরা নাইংমা বা নাইংমা পাস নামে পরিচিত। ভারতের কেন্দ্র থেকেই উদ্ভূত বলে হিন্দুধর্মের সাথে বৌদ্ধধর্মের অনেক মিল পরিলক্ষিত হয়।
হিন্দুধর্মে যেভাবে হনুমানকে অমর বলে বিবেচনা করা হয়, ঠিক তেমনি বৌদ্ধরা মনে করেন গুরু পদ্মসম্ভব এখনও তার তামার প্রাসাদে জীবিত আছেন।
তক্তসাং গোম্পাকে জ্যাংডক পালরি বা তামার রঙের প্রাসাদও বলে। এ মঠটি এত আধ্যাত্মিকতায় পরিপূর্ণ যে দর্শনার্থী সকলেরই হৃদয় মন পবিত্র করে দেয়।
আরো পড়ুন: লিঙ্গ পরিবর্তন নিয়ে যুগান্তকারী আইন আনছে জার্মানি
তাওয়াং শহর থেকে প্রায় ৪০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত তক্তসাং গোম্পা। শহর থেকে সেখানে যেতে প্রায় দুই ঘন্টার মতো সময় লাগে।
তক্তসাং গোম্পার পাশের সঙ্গীতসার হ্রদ, মাধুরী হ্রদ নামেও পরিচিত। ১৯৯৬ সালে বলিউড চলচ্চিত্র 'কয়লা'র একটি গানের জন্য এখানে আসেন বিখ্যাত অভিনেত্রী মাধুরী দীক্ষিত। তার নাম থেকেই এ হ্রদকে অনেকে মাধুরী হ্রদ বলে।
এম এইচ ডি/ আইকেজে
খবরটি শেয়ার করুন