ছবি: সংগৃহীত
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের মালামাল নিয়ে জাহাজ এম.ভি ইয়ামাল অরলান সরাসরি রাশিয়া থেকে মোংলা বন্দরে ভিড়েছে। মেশিনারি পণ্য নিয়ে আসা জাহাজটি মঙ্গলবার দুপুর আড়াইটায় বন্দরের ৮ নম্বর জেটিতে ভিড়ে। জেটিতে পণ্য খালাস শেষে তিন দিন পর জাহাজটির মোংলা বন্দর ত্যাগ করার কথা রয়েছে।
জাহাজটির স্থানীয় শিপিং এজেন্ট কনভেয়ার শিপিং লাইন্স’র খুলনার ম্যানেজার (অপারেশন) সাধন কুমার চক্রবর্তী জানান, গত ২৮ মার্চ রাশিয়ার নভোরোসিয়েস্ক বন্দর থেকে ২ হাজার ৫২২ মেট্রিক টন মেশিনারি পণ্য নিয়ে মোংলা বন্দরের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসে বিদেশি জাহাজ এম,ভি ইয়ামাল অরলান। এরপর মঙ্গলবার (২৫ এপ্রিল) দুপুর আড়াইটায় মোংলা বন্দরের ৮ নম্বর জেটিতে ভিড়ে রাশিয়ান পতাকাবাহী জাহাজটি। দুপুর থেকেই জাহাজটি হতে ১ হাজার ৩৬০ প্যাকেজে আসা মেশিনারি পণ্য খালাসের কাজ শুরু হয়। আপাতত খালাসকৃত পণ্য জেটিতে রাখা হচ্ছে। পণ্য খালাস শেষে শুক্রবার জাহাজটি রাশিয়ার উদ্দেশ্যে মোংলা বন্দর ছেড়ে যাবে। খালাসের তিন দিন পর সড়ক পথে সব পণ্য বন্দর জেটি থেকে নেয়া হবে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে।
এর আগে গত ৫ এপ্রিল রাশিয়া থেকে সরাসরি রূপপুরের মালামাল নিয়ে মোংলা বন্দরে এসেছিল এম,ভি ড্রাগনবল। তারও আগে আসে বিদেশি জাহাজ এম,ভি আনকাসান ও এম,ভি কামিল্লা।
এর আগে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা ইস্যুতে রাশিয়া থেকে সরাসরি আসতে না পারায় ভারত ট্রানজিট হয়ে মোংলা বন্দরে আসে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিভিন্ন মালামালের কয়েকটি চালান।
ইউক্রেন যুদ্ধ পরিস্থিতিতে রাশিয়ার সাত জাহাজ কোম্পানির ৬৯টি জাহাজ মার্কিন নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়ে যায়। যেগুলোতে রূপপুরের পণ্য পরিবহন করা হচ্ছিল। যার ফলে নিষেধাজ্ঞার বাইরে থাকা জাহাজগুলো রাশিয়া থেকে রূপপুরের পণ্য নিয়ে সরাসরি মোংলা বন্দরে আসছে। আর নিষেধাজ্ঞার তালিকায় থাকা জাহাজগুলো রাশিয়া থেকে পণ্য নিয়ে ভারতের হলদিয়া বন্দরে খালাস করছে, পরে তা বাংলাদেশ-ভারত ট্রানজিট চুক্তির আওতায় আসছে মোংলা বন্দরে। আবার কোনো কোনো পণ্য হলদিয়া বন্দর থেকে সড়ক পথেও আসছে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা শিপিং এজেন্ট।
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মীর এরশাদ আলী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঐকান্তিক প্রচেষ্টা ও নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের বাস্তবমুখী পদক্ষেপ এবং দিকনির্দেশনার ফলে মোংলা বন্দরে এখন স্বর্ণযুগ চলছে। এ বন্দর দিয়েই রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, ঢাকা মেট্রোরেল, বঙ্গবন্ধু রেলওয়ে সেতু ও রামপাল তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রসহ দেশের বিভিন্ন মেগা প্রজেক্টের পণ্য আসছে। এর আগে এসেছে পদ্মা সেতুর মালামালও। এ ছাড়া পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় চট্টগ্রামের তুলনায় মোংলা বন্দর থেকে রাজধানী ঢাকার দূরত্ব ১ শ কিলোমিটার কমে গেছে। ফলে এখন মাত্র তিন থেকে সাড়ে তিন ঘণ্টায় মোংলা বন্দর থেকে ঢাকাসহ আশপাশের এলাকায় আমদানি পণ্য পৌঁছে যাচ্ছে, আবার একই সময়ের মধ্যে রপ্তানি পণ্যও আসছে মোংলা বন্দরে। আর রেল চালু হলে বন্দরের কর্মযজ্ঞ আরো বেড়ে যাবে।
তিনি বলেন, সরকারের সদিচ্ছায় বন্দরকে ঘিরে নানা প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে। বন্দরের আমদানি-রপ্তানীকারকসহ সংশ্লিষ্ট সব শ্রেণি-পেশার মানুষের সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে মোংলা বন্দরকে আরো এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।
এমএইচডি/ আই. কে. জে/
আরো পড়ুন:
আজ থেকে মুক্তভাবে চলাচল করতে পারব: আবদুল হামিদ
রাশিয়া বিদ্যুৎ রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ
খবরটি শেয়ার করুন