শুক্রবার, ৫ই জুলাই ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
২১শে আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পঞ্চগড়ে স্বপ্ন জাগাচ্ছে কফি চাষ

নিউজ ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ১১:৩৭ পূর্বাহ্ন, ২৬শে ফেব্রুয়ারি ২০২৪

#

ছবি: সংগৃহীত

পঞ্চগড়ে চায়ের পাশাপাশি অর্থকরি ফসল হিসেবে সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে কফি চাষের। গড়ে উঠেছে ছোট-বড় বেশকিছু বাগান। আবাদি জমি দখল করে নয়, চাষ হচ্ছে ছায়াযুক্ত বাগানে সাথী ফসল হিসেবে।

আব্দুল হালিম প্রধানের বাড়ি পঞ্চগড় সদর উপজেলার হাফিজাবাদ ইউনিয়নের বিষমুনি গ্রামে। দুই বছর আগে কৃষি বিভাগের সহযোগিতায় তার বাড়ি সংলগ্ন ছায়াযুক্ত সুপারি বাগানে ১৩৫টি কফি চারা রোপণ করেন। অল্প সময়ের মধ্যেই ফল এসেছে গাছগুলোতে। তার মতো জেলার আরো ৪৭ জন কৃষক কফি চাষ করেছেন। তার দাবি, বাজারজাত সহজ হলে সাথী ফসল হিসেবে যেমন বাড়তি আয় হবে, তেমনি বাড়বে চাষের পরিধিও।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সারি সারি সুপারি গাছের ফাঁকে ফাঁকে একেকটি কফি গাছ। কৃষক আব্দুল হালিম প্রধান পরিচর্যা করছেন কফি গাছগুলো। অধিকাংশ গাছের ডালে থোকায় থোকায় ঝুঁলে আছে কফি ফল। পরিপক্ব ফলগুলো উত্তোলন করে ঘরে রাখা হচ্ছে। এই ফলগুলোই প্রক্রিয়াজাত করে তৈরি হবে পানযোগ্য কফি।

কফি চাষি আব্দুল হালিম প্রধান বলেন, একদিন কৃষি বিভাগের লোকজন আমাকে এসে বলেন সুপারি বাগানে কফি চাষের কথা। পরে তারা আমাকে ৩৩ শতক জমির জন্য ১৩৫টি কফির চারা দেন। পরে তাদের পরামর্শে চারাগুলোর যত্ন শুরু করি। আলহামদুলিল্লাহ দুই বছরের মধ্যে গাছগুলোতে ফল এসেছে। অনেক গাছে ফুল ফুটেছে। কিছু গাছে ফল পাকতে শুরু করেছে। আমি কিছু ফল গাছ থেকে তুলেছি নিজে কফি বানিয়ে খাওয়ার জন্য। আর বাকিগুলো কয়েকদিনের মধ্যে তুলব। যদি বাজারজাত করা যায় আর দাম ভালো পাই, আশা করি লাভের মুখ দেখতে পারব।

কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, ২০২১ সালের শেষের দিকে ‘কফি ও কাজু বাদাম গবেষণা, উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ প্রকল্পের’ আওতায় জেলার তিন উপজেলায় রোবাস্টা জাতের কফি চাষ শুরু হয়েছে। জেলার মাটি ও আবহাওয়া কফির জন্য উপযোগী হওয়ায় সুপারিসহ বিভিন্ন বাগানের ছায়াযুক্ত ফাঁকা জায়গায় গড়ে উঠছে কফি বাগান।

চাষিদের কফি বীজ ও কারিগরী সহায়তাসহ নানা পরামর্শ দেয় কৃষি বিভাগ। চারা রোপণের দুই থেকে আড়াই বছরের মধ্যেই ফল আসা শুরু হয় গাছগুলোতে। এটি দীর্ঘ মেয়াদি ফসল। প্রতি বিঘা বাগানে ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা খরচ করে বছরে দেড় থেকে দুই লাখ টাকার কফি বিক্রির সম্ভাবনা রয়েছে। জেলার ৪৭ জন কৃষক ১২ দশমিক ২৬ হেক্টর জমিতে গড়ে তুলেছেন ৭৪টি কফি বাগান।

আরো পড়ুন: প্রথমবারেই গাজর চাষে সফল নূর আলম

সদর উপজেলার হাফিজাবাদ ইউনিয়নের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মাহাবুবুল আলম বলেন, কফি চাষের জন্য ছায়াযুক্ত স্থানের প্রয়োজন। যেখানে ছায়া থাকে সেখানেই কফি ভালো হয়। বাড়তি কোনো জমি এবং তেমন কোনো পরিচর্যার প্রয়োজন হয় না। শুধুমাত্র আগাছানশক স্প্রে এবং ছত্রাক নাশক স্প্রে করায় এ পানীয় চাষে কৃষকের খরচ কম হয়।

পঞ্চগড় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের অতিরিক্ত উপপরিচালক (শস্য) শাহ্ আলম মিয়া বলেন, কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের পাশে থেকে চারা, কীটনাশক ও কারিগরি প্রশিক্ষণসহ সব ধরনের পরামর্শ দিচ্ছে। কফির বাজার ব্যবস্থাপনা ও ফল সংরক্ষণ বিষয়ে তাদের প্রশিক্ষণও দেওয়া হয়। পঞ্চগড়ের আবহাওয়া কফি চাষে অনুকূল হওয়ায় কৃষকরা লাভের মুখ দেখতে পারবেন বলে আশা করেন তিনি।

এসি/ আই. কে. জে/


পঞ্চগড় কফি চাষ

খবরটি শেয়ার করুন