বুধবার, ৩রা জুলাই ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
১৮ই আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দেশে যক্ষ্মা রোগী শনাক্তে আসছে এআই প্রযুক্তি

স্বাস্থ্য ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ০৮:৫৭ অপরাহ্ন, ২৫শে মার্চ ২০২৪

#

ছবি: সংগৃহীত

দেশের যক্ষ্মা রোগী শনাক্তে ব্যবহার হবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা তথা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) প্রযুক্তি। এই বছরের মধ্য বা শেষভাগে ঢাকা মহানগরসহ ঢাকা জেলা, খুলনা ও পঞ্চগড়ে পরীক্ষামূলকভাবে এই পদ্ধতির ব্যবহার হবে। এই প্রযুক্তির ব্যবহারে যেকোনো ধরনের যক্ষ্মা রোগী খুব সহজেই শনাক্ত করা সম্ভব হবে। ফলে রোগীদের চিকিৎসার আওতায় এনে রোগ নির্মূলে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা সম্ভব হবে।

সোমবার (২৫শে মার্চ) রাজধানীর এক হোটেলে ইনস্টিটিউট অব অ্যালার্জি অ্যান্ড ক্লিনিক্যাল ইমিউনোলজি অব বাংলাদেশের (আইএসিআইবি) চেয়ারম্যান বিশিষ্ট অণুপ্রাণবিদ অধ্যাপক ডা. মোয়াজ্জেম হোসেন যক্ষ্মা বিষয়ক এক অনুষ্ঠানে এসব তথ্য জানান।

এতে জানানো হয়, স্বাস্থ্য অধিদফতরের জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির অধীনে ২০২৩ সালে বাংলাদেশে ৩ লাখ ১ হাজার ৫৬৪ জন যক্ষ্মা রোগী শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে চিকিৎসার আওতায় আছে ৮০ শতাংশ রোগী। বাকি প্রায় ২০ শতাংশ রোগী এখনও রয়েছে শনাক্তের বাইরে। শনাক্তের বাইরে থাকা এই রোগীরা যক্ষ্মার জীবাণু ছড়াচ্ছে এবং আরও রোগী বৃদ্ধির ঝুঁকি তৈরি করছে।

অধ্যাপক ডা. মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, কফ পরীক্ষার মাধ্যমে ফুসফুসের যক্ষ্মা রোগ নির্ণয় করা হয়। অনেক সময় রোগীর কফ দিতে কষ্ট হয়। পর্যাপ্ত কফ দেওয়াও সম্ভব হয় না। টেকনেশিয়ানরা অনেক সময় যক্ষ্মার জীবানু শনাক্তে ব্যর্থ হন। ফলে ‘ফলস নেগেটিভ’ আসে। আর এসব রোগী অন্যদের মধ্যে যক্ষ্মা ছড়ায়। এআই পদ্ধতিতে দ্রুত ও নির্ভুলভাবে রোগ নির্ণয় সম্ভব। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যক্ষ্মা রোগী শনাক্তে এআই পদ্ধতির ব্যবহার হলেও বংলাদেশে এখনও এই পদ্ধতি ব্যবহৃত হচ্ছে না। সেদিক দিয়ে আমরা প্রথম শুরু করব।

যক্ষ্মা রোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, দেশে ৫১ শতাংশ যক্ষ্মা রোগী খুব উচ্চ পরিবহন খরচের কারণে যক্ষ্মা রোগের ওষুধ নিতে কেন্দ্রে আসেন না। ফলে তারা নিয়মিত ওষুধ গ্রহণ থেকে বিরত থাকেন। এতে ওষুধ প্রতিরোধী যক্ষ্মা দেখা দেয়। দেশে মোট ১০ প্রকারের ওষুধ ব্যবহার করা হয়। একটি কাজ না হলে অপরটি ব্যবহার করা হয়। মোট ৫-৭টি ওষুধ যদি কারো শরীরে কাজ না করে তাহলে তাকে ওষুধ প্রতিরোধী যক্ষ্মা বলে। এছাড়া আরেক প্রকারের যক্ষ্মা রয়েছে যেখানে এই ১০টির কোনো ওষুধই কাজ করে না। তবে বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত এমন রোগী পাওয়া যায়নি।

ওষুধ সহজলভ্য করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, রোগীদের কাছাকাছি ফার্মেসিতে ওষুধ রাখা গেলে তারা সহজেই ওষুধ নেবেন। ওষুধ সেবন করে সুস্থ হবেন। এজন্য সংশ্লিষ্টদের সদিচ্ছার উপর গুরুতারোপ করেন তিনি।

আরও পড়ুন: মস্তিষ্ক নিরাপদ রাখতে এই অভ্যাসগুলো এড়িয়ে চলছেন তো?

এছাড়া যক্ষ্মা রোগী শনাক্ত এবং চিকিৎসা সেবা যাতে নিশ্চিত হয় সে জন্য এ বছরের শেষের দিকে চালু হতে যাচ্ছে কমিউনিটি লিড মনিটরিং (সিএলএম) পদ্ধতি। এই পদ্ধতিতে যক্ষ্মা রোগীরাই এই মনিটরিং কাজটি করবে বলে জানান স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার সাবেক এই পরিচালক। যে পদ্ধতিতে রোগীরা তাদের চিকিৎসা বিষয়ে নিজেরাই মন্তব্য করতে পারবেন। রোগীদের এসব মন্তব্য সরাসরি মন্ত্রণালয়, অধিদফতর ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পারবেন।

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টার্স ফোরামের (বিএইচআরএফ) সভাপতি রাশেদ রাব্বি, সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেল, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব রফিকুল ইসলাম মিলন প্রমুখ।

এসকে/ 

এআই যক্ষ্মা রোগী

খবরটি শেয়ার করুন