সোমবার, ২৩শে ডিসেম্বর ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
৯ই পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পরকীয়া সম্পর্ক দিন দিন বাড়ছে! কারণ ও প্রতিকার কী?

লাইফস্টাইল ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ০১:১৬ অপরাহ্ন, ১লা জুলাই ২০২৪

#

প্রতীকী ছবি (সংগৃহীত)

সামাজিক মাধ্যমে প্রায়ই পরকীয়ার কথা শুনা যায়। পরকীয়া হচ্ছে বিবাহিত সঙ্গী থাকা সত্ত্বেও অন্য কোনো নারী বা পুরুষের সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়া। বেশির ভাগ পরকীয়া সম্পর্ক গড়ে ওঠে নারী বা পুরুষের শারীরিক ও মানসিক চাহিদা মেটানোর জন্য। আবার এ সম্পর্কের জন্য স্বামী স্ত্রীকে বা স্ত্রী স্বামীকেও হত্যা করছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই এই হত্যাকাণ্ড আবেগবশত হঠাৎ করে ঘটিয়ে ফেলা হয় তা নয়। রীতিমতো পরিকল্পনা করে আটঘাট বেঁধেই হত্যাকাণ্ডগুলো ঘটানো হচ্ছে। তবে কেন পরকীয়া সম্পর্ক দিন দিন বাড়ছে? এটি প্রতিরোধ বা প্রতিকারের উপায় কী? নিম্নে পরকীয়ায় জড়ানোর প্রধান কয়েকটি কারণ তুলে ধরা হলো—

অল্প বয়সে বিয়ে 

আবেগের বশবর্তী হয়ে অনেক তরুণ-তরুণী কম বয়সে বিয়ে করে ফেলে। এই সময়ে ছেলে বা মেয়ের মধ্যে মানসিক বুদ্ধি-চিন্তা কাজ করে না। যুক্তির চেয়ে আবেগই বড় হয়ে দেখা দেয়। যার কারণে বিয়ের কিছুদিন পরই সেইসব স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে বিভিন্ন রকমের মতবিরোধ সৃষ্টি হয় এবং এই সময়েই সেই স্বামী বা স্ত্রী পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। ফলে, অনেক সময় এমন বিবাহিত জীবন ডিভোর্সের পর্যায়ে চলে যায়।

শারীরিক সমস্যা

বিবাহিত জীবনে এটি হচ্ছে প্রধান সমস্যা। এই সমস্যাটি তখনই দেখা দেয়, যখন স্বামী ও স্ত্রী সমবয়সী হয় অথবা স্বামীর থেকে স্ত্রী যদি বয়সে বড় হয়ে থাকে। যার কারণে সেসব স্বামী বা স্ত্রী বাইরের অন্য কারো সাথে পরকীয়ায় আসক্ত হয়ে পড়ে।

আরো পড়ুন : বৃষ্টিতে ছাতা নাকি রেইনকোট, কোনটি ব্যবহার করবেন?

বিয়ের ক্ষেত্রে ভুল মানুষকে নির্বাচন

মূলত এই সমস্যাটি অনেক বেশি বেশি দেখা যায়। অনেক সময় অভিভাবকরা তাদের নিজেদের কথাই ভাবেন এবং ভাল-মন্দ কোনো কিছু না দেখে-শুনে অনেক তাড়াহুড়ো করেই তাদের সন্তানদের বিয়ে দিয়ে দেন। কিন্তু ছেলে-মেয়ের পছন্দ বা মতামতকে তারা প্রাধান্য দেন না। ফলে এসব ছেলে-মেয়েদের বিবাহিত জীবন সুখের হয় না। আর তখন মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে পরবর্তীতে তারা পরকীয়ার দিকে অগ্রসর হতে থাকে।

বিয়ের অল্প কিছুদিন পরই অভিভাবক হওয়া

কথাটি বেশ কড়া হলেও এটাই বাস্তব, বিয়ের পর স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যের মধুর সম্পর্কে তখনি ব্যাপক পরিবর্তন আসে, যখন তারা অভিভাবক হয়ে যান। একটা সন্তান পরিবারে আসার পর মূলত সন্তানের দিকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়। সন্তানকে নিয়ে অতি ব্যস্ত থাকায় স্বামী-স্ত্রী কেউই একে অপরকে সময় দিতে পারছে না। যার কারণে আগের মত সেই মায়া, ভালবাসা থাকে না। তখনই সেসব পুরুষ বা নারীদের মন বাইরে চলে যায় অর্থাৎ পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ে।

ক্যারিয়ার অ্যাডভান্সমেন্ট

খুব দুঃখজনক হলেও এটা অনেক ক্ষেত্রেই সত্যি যে, কিছু পুরুষ বা নারী তার ক্যারিয়ারে দ্রুত প্রমোশনের জন্য তার কর্মস্থলের ম্যানেজার কিংবা উপরের লেভেলের বসদের সাথে পরকীয়া সম্পর্কে লিপ্ত হন। কারণ তারা মনে করেন এতে করে তারা চাকরি ক্ষেত্রে বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা পাবেন। কিন্তু এটা সম্পূর্ণই ভুল চিন্তা! উল্টো এটা একজন মানুষের ব্যক্তিস্বত্তা, তার চরিত্র স্বত্তাকে ধ্বংসের মুখে নিয়ে যায়। এসব সম্পর্কও যেমন বেশিদিন টিকে না, তেমনি চাকরি হারানোরও আশঙ্কা থাকে। পরবর্তীতে এগুলোর প্রভাব পড়ে পরিবারের সন্তানদের উপর। বিশ্বাস, ভালোবাসা, সম্মান সবকিছুই বিনষ্ট হয়ে যায়, এই সাময়িক পরকীয়া সম্পর্কের কারণে।

সমাধানের উপায়

অন্যান্য দেশের মতো আমাদের দেশেও যেহেতু এই সমস্যা ব্যাপকভাবে বেড়ে গিয়েছে, সুতরাং এগুলো দ্রুত প্রতিকারও করতে হবে। একমাত্র মানুষ নিজেই পারেন এই সমস্যার সমাধান করতে। আবেগ দিয়ে নয়, বরং বিবেক দিয়ে প্রতিটি সিদ্ধান্ত নিতে হবে। পরিবারের মধ্যে ভালোবাসার সম্পর্ক সৃষ্টি করতে হবে। সঙ্গীকে সময় দিতে হবে। যে কোনো পরিস্থিতিতে ধৈর্য্য ধারণ করতে হবে। পরিবারে স্বামী-স্ত্রী সবারই দায়িত্বশীল হতে হবে। নিজের এবং ছেলে-মেয়ের মানসম্মান ও ভবিষ্যৎ সম্পর্কে ভাবতে হবে। কোনো ভুল বোঝাবুঝি হলে আলোচনার মাধ্যমে মিটিয়ে ফেলতে হবে। মা-বাবা, শ্বশুর-শাশুড়ি পরিবারের সঙ্গে থাকলে সে পরিবার অনেকটা নিরাপদ থাকে। সর্বোপরি মনে রাখতে হবে পরকীয়া একটি অভিশাপ। তাই এই অভিশাপ সমাজ থেকে দূর করতে উপরে উল্লেখিত সমস্যাগুলো সম্পর্কে সর্বদা সতর্ক থাকতে হবে।

এস/ আই.কে.জে/

পরকীয়া

সুখবর এর নিউজ পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

খবরটি শেয়ার করুন