বৃহস্পতিবার, ২৮শে আগস্ট ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
১৩ই ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ

*** তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফিরলে কখন থেকে কার্যকর হবে—প্রশ্ন প্রধান বিচারপতির *** শাহবাগে এসে শিক্ষার্থীদের কাছে ডিএমপি কমিশনারের ‘দুঃখ প্রকাশ’ *** ২৮ তারিখ নয়, রাকসুর ভোট গ্রহণ ২৫শে সেপ্টেম্বর *** গাজা যুদ্ধের কভারেজ নিয়ে ক্ষুব্ধ সাংবাদিক ঘোষণা দিয়ে রয়টার্স ছাড়লেন *** ৩১ বিলিয়ন ডলার ছাড়াল রিজার্ভ *** জুলাই সনদের অঙ্গীকারনামা সংশোধন করবে কমিশন *** পান্নুন হত্যাচেষ্টার ষড়যন্ত্রে জড়িত ‘র’–এর সাবেক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দিল্লিতে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা *** বেসরকারি খাতে যাচ্ছে নগদ, এক সপ্তাহের মধ্যে বিজ্ঞপ্তি: গভর্নর *** নেপালের বিপক্ষে এগিয়ে থেকে বিরতিতে বাংলাদেশ *** চন্দ্রনাথ পাহাড় ঘিরে উসকানির চিহ্ন দেখামাত্র ব্যবস্থা নিতে তিন উপদেষ্টার নির্দেশ

জিন সম্পাদনায় নতুন সাফল্য, ডায়াবেটিস রোগীদের আর ইনসুলিন নিতে হবে না

স্বাস্থ্য ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ০৫:২৬ অপরাহ্ন, ২৬শে আগস্ট ২০২৫

#

ছবি: সংগৃহীত

বিশ্বে প্রথমবারের মতো টাইপ-১ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত একজন পুরুষ রোগী নিজের শরীরে স্বাভাবিকভাবে ইনসুলিন উৎপাদনে সক্ষম হয়েছেন। জিন এডিট (জিন সম্পাদন) করা কোষ প্রতিস্থাপনের মাধ্যমে এই সফলতা এসেছে। এমন জিন প্রতিস্থাপনের পর সাধারণত যেসব রোগীকে সারা জীবন রোগ প্রতিরোধে ওষুধ সেবন করতে হয়, এই রোগীকে সেটিও করতে হচ্ছে না। তথ্যসূত্র লাইভ সায়েন্স।

চিকিৎসা বিজ্ঞানের এই যুগান্তকারী সাফল্যের ঘটনা সম্প্রতি নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অব মেডিসিন-এ প্রকাশিত হয়েছে।

বিশ্বজুড়ে ৯৫ লাখ মানুষ টাইপ-১ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। এ রোগে শরীরের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা প্যানক্রিয়াসে অবস্থিত আইলেট কোষ ধ্বংস করে ফেলে। এসব কোষ ইনসুলিন তৈরি করে।

তাই টাইপ-১ ডায়াবেটিসে আক্রান্তদের প্রতিদিন ইনসুলিন ইনজেকশন নিতে হয়। তবে রোগটি এখনো পর্যন্ত সম্পূর্ণ নিরাময়যোগ্য নয়।

আইলেট কোষ প্রতিস্থাপন চিকিৎসার একটি সম্ভাব্য পন্থা হলেও, এতে প্রধান বাধা হলো—রোগীর শরীর নতুন প্রতিস্থাপিত কোষকে ‘বহিরাগত’ মনে করে আক্রমণ করে বসে। এ ধরনের জটিলতা এড়াতে এখন পর্যন্ত রোগীদের সারাজীবন ইমিউনোসাপ্রেসিভ (রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দমনকারী) ওষুধ সেবন করতে হয়। তবে এতে সংক্রমণের ঝুঁকি বেড়ে যায়।

এই সমস্যার সমাধান করতেই সুইডেন ও আমেরিকার একদল গবেষক সিআরআইএসপিআর বা ক্রিস্পার (CRISPR) প্রযুক্তি ব্যবহার করে দাতার প্যানক্রিয়াস থেকে নেওয়া আইলেট কোষকে জিনগতভাবে পরিবর্তন করেন, যাতে রোগীর শরীর তা সহজে প্রত্যাখ্যান না করে।

এই প্রথমবারের মতো জিন-সম্পাদিত কোষ মানবদেহে প্রতিস্থাপন করা হলো। প্রতিস্থাপনের ১২ সপ্তাহ পরও রোগীর শরীর ইনসুলিন উৎপাদন করে চলেছে এবং এতে কোনো রোগ প্রতিরোধী প্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি।

গবেষকরা তাদের প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন, ‘প্রাথমিক হলেও এই গবেষণার ফলাফলে প্রতিস্থাপিত কোষ বা অঙ্গকে শরীরের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এড়াতে জিন সম্পাদনার কৌশল যে কার্যকর, তা প্রতীয়মান হয়েছে।’

গবেষণায় ক্রিস্পার প্রযুক্তির মাধ্যমে দাতার কোষে তিনটি জিনগত পরিবর্তন আনা হয়। এর মধ্যে দুটি পরিবর্তনে কোষের ওপর থাকা এমন প্রোটিনের পরিমাণ কমিয়ে দেওয়া হয়। এসব প্রোটিন শরীরের শ্বেত রক্তকণিকাকে সংকেত দেয় কোন কোষ বহিরাগত। তৃতীয় পরিবর্তনে সিডি ৪৭ নামে একধরনের প্রোটিনের উৎপাদন বাড়ানো হয়, যা শরীরের অন্যান্য প্রতিরক্ষা কোষকে কোষটি আক্রমণ না করার সংকেত দেয়।

এই জিন-সম্পাদিত কোষ রোগীর হাতে ইনজেকশনের মাধ্যমে প্রবেশ করানো হয়। রোগীর শরীর কোষগুলোকে ‘বহিরাগত’ হিসেবে চিহ্নিত করেনি এবং তারা স্বাভাবিকভাবেই ইনসুলিন উৎপাদন করেছে।

যদিও পরীক্ষামূলকভাবে রোগীকে এখনো ইনসুলিন নিতে হচ্ছে এবং তার অল্পমাত্রায় কোষ প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। তবে চিকিৎসকেরা বলছেন, এই পদ্ধতি নিরাপদ এবং ভবিষ্যতের চিকিৎসায় এটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে পারে।

গবেষক দল এখন পরবর্তী ধাপে যাচ্ছেন—দীর্ঘ মেয়াদে এই কোষগুলো টিকে থাকে কি না, তা পর্যবেক্ষণ করবেন। পাশাপাশি অন্য রোগীদের ওপর একই পদ্ধতি কার্যকর কি না, সেটিও যাচাই করা হবে।

এই সাফল্যের মধ্য দিয়ে টাইপ-১ ডায়াবেটিসের চিকিৎসায় এক নতুন আশার দ্বার খুলল।

জে.এস/

ডায়াবেটিস ইনসুলিন

সুখবর এর নিউজ পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

খবরটি শেয়ার করুন