ছবি: সংগৃহীত
বলিউডের অন্যতম জনপ্রিয় সঙ্গীতশিল্পী অলকা ইয়াগনিক। কলকাতাতেই গুজরাতি পরিবারে জন্ম অলকার। মা শুভা ইয়াগনিকের কাছে প্রথম শাস্ত্রীয় সঙ্গীত শিখেছেন। এরপর ১০ বছর বয়সে চলে যান মুম্বাইতে। সেখানে গিয়েই বলিউডে নিজের ক্যারিয়ার গড়েন।
ক্যারিয়ারে ১৬টি ভাষায় ২০০০ গান গেয়েছেন তিনি। ১৯৮০ সালে প্রথম প্লেব্যাক করেন ‘পায়েল কি ঝঙ্কার’ ছবিতে। তার কণ্ঠ এতটাই দর্শকেরা পছন্দ করেন যে, এরপর আর পেছনে ফিরতে হয়নি।
এক সময় লতা মঙ্গেশকর এবং আশা ভোঁসলের সঙ্গে টক্কর শুরু হয় অলকার। কুমার শানু এবং উদিত নারায়ণের সঙ্গে একাধিক হিট গান রয়েছে এই গায়িকার।
এমনকি কুমার শানু ও উদিত নারায়ণের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে বলে খবরও রটে। কিন্তু অলকার প্রেম শুধুই নীরজের জন্যই থেকেছে। যা তিনি নিজেই প্রমাণ করেছেন।
শিলংয়ের ব্যবসায়ী নীরজ কাপুরকে বিয়ে করেছিলেন এই সংগীতশিল্পী। অথচ বিয়ের পর ৩৫ বছর ধরে তিনি স্বামীর সঙ্গে থাকেন না। এই সুযোগে দুই গায়কের সঙ্গে তার সম্পর্কের গুঞ্জন রটেছে বহুবার।
ক্যারিয়ারের চাপের ছায়া কখনও ব্যক্তিগত জীবনে পড়তে দেননি। তাই স্বামীর থেকে অনেক দূরে থেকেও কখনও তাদের মধ্যে দূরত্ব তৈরি হয়নি।
১৯৮৯-এ শিলংয়ের ব্যবসায়ী নীরজ কাপুরের সঙ্গে বিয়ে হয় অলকার। কর্মসূত্রে বছরের বেশির ভাগ দিন অলকাকে মুম্বাইয়েই থাকতে হয়। আর ব্যবসার প্রয়োজনে তার স্বামী নীরজ কুমার থাকেন শিলংয়ে।
এমন পরিস্থিতিতে বিচ্ছেদ হওয়ার সম্ভাবনাই প্রবল ছিল। তবে অলকা-নীরজের ক্ষেত্রে তেমনটা হয়নি। তাদের মধ্যে বোঝাপড়া এমনই। কারণ দুজনের পরিচয়টাই সিনেমার মতো।
মায়ের সঙ্গে একবার দিল্লি গিয়েছিলেন অলকা। স্টেশনে তাদের নিতে আসেন নীরজ। তারা কেউই একে অপরকে চিনতেন না। নীরজ ছিলেন অলকার মায়ের বন্ধুর আত্মীয়। প্রথম দেখাতেই ভালো লেগে যায় একে অপরকে। সেখান থেকে বন্ধুত্ব এবং প্রেম। ব্যবসার প্রয়োজনে মুম্বাই এলে অলকার বাড়িতেও আসতেন নীরজ। অলকা তখন ক্যারিয়ারের শীর্ষে। যে কারণে মুম্বাই ছেড়ে শিলংয়ে গিয়ে থাকা অসম্ভব ছিল।
আরও পড়ুন: শ্রোতাদের হৃদয়ে বেঁচে থাকবেন কণ্ঠশিল্পী জুয়েল
আর নীরজের পক্ষেও ব্যবসা ছেড়ে এই শহরে চলে আসা সম্ভব নয়। তাই দুজন যখন বাড়িতে বিয়ের কথা জানিয়েছিল, তাদের পরিবার রাজি হয়নি। এ সম্পর্ক টিকবে না, এমন আশঙ্কাই প্রকাশ করেছিলেন পরিবারের লোকজন। তাদের সেই বাধা শোনেননি অলকা-নীরজ। বিয়ে করে নেন এই জুটি।
এক সাক্ষাৎকারে অলকা বলেন, ‘আমি অন্য কোনও পুরুষের প্রতি আকর্ষিত হইনি তা নয়। তবে আমার শিক্ষা এবং নীতি অন্য ধরনের। আমি স্রোতে ভেসে যাইনি। বরং বারবার ভেবেছি আমি নীরজকে ভালোবাসি। এই ভালোবাসা আর বিশ্বাসের জোরেই চলছে আমাদের সম্পর্ক।’
তার সংযোজন, ‘তাছাড়া নীরজ মুম্বাইয়ে ব্যবসা করার চেষ্টাও করেছে। তবে ও ছোট টাউনের সরল ছেলে। এখানে ব্যবসা করতে গিয়ে ঠকেছে। আমি চাইনি আমার জন্য বারবার প্রতারিত হোক। তাই ওকে শিলংয়ে থাকার পরামর্শ দিয়েছি।’
মাঝে অলকা এবং নীরজের জীবনেও ঝড়ঝাপটা এসেছিল। তারা পাঁচ বছর সেপারেটেড ছিলেন। যদিও পরে একসঙ্গে কথা বলে সমস্যা মিটিয়ে নিয়েছিলেন।
নীরজ মাঝেমধ্যে মুম্বাইয়ে এসে অলকার সঙ্গে থাকেন। আর বছরে একবার বেশ কিছুদিনের জন্য অলকা শিলংয়ে যান। পারিবারিক জীবন কাটান সেখানে। ৩৫ বছর ধরে বিবাহিত হয়েও আলাদা থেকে সুখেই রয়েছেন এই দম্পতি।
এসি/ আই.কে.জে/