ছবি: সংগৃহীত
শিক্ষা-গবেষণায় গৌরবোজ্জ্বল ও কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে লেখক ও বুদ্ধিজীবী বদরুদ্দীন উমরকে দেশের সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় পুরস্কার স্বাধীনতা পুরস্কারে সম্মানিত করা হয়। তবে তিনি এ সম্মাননা গ্রহণ করবেন না বলে আগেই ঘোষণা দেন।
চলতি বছর স্বাধীনতা পুরস্কারের জন্য সরকারের মনোনীত বিশিষ্টজনদের নাম সংবাদমাধ্যমে প্রচারিত-প্রকাশিত হওয়ার পরই বদরুদ্দীন উমর বিবৃতি দিয়ে বলেন, এ পুরস্কার গ্রহণ করা তার পক্ষে সম্ভব নয়। আজ মঙ্গলবার (২৫শে মার্চ) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে এ বছরের স্বাধীনতা পুরস্কার প্রদান করা হয়। বদরুদ্দীন উমর আগের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তা গ্রহণ করেননি।
তবে পুরস্কার গ্রহণ না করলেও বদরুদ্দীন উমরকে রাষ্ট্রীয় সম্মান দিতে পেরে গর্বিত বলে বক্তব্যে উল্লেখ করেছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও নোবেলজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এ বছর স্বাধীনতা পুরস্কারপ্রাপ্ত বদরুদ্দীন উমরসহ অন্য ব্যক্তিদের ‘বাংলার সূর্যসন্তান’ উল্লেখ করে তাদের কর্মময় জীবনের ওপর আলোকপাত করেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস।
রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে স্বাধীনতা পুরস্কার-২০২৫ প্রদান অনুষ্ঠানে দেওয়া প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ‘তার (বদরুদ্দীন উমর) সম্মাননা স্মারক আমাদের পরের প্রজন্মের জন্য অনুপ্রেরণা হিসেবে জাতীয় জাদুঘরে সংরক্ষিত থাকবে।’
প্রধান উপদেষ্টা স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্তদের কথা উল্লেখ করে অনুষ্ঠানে বলেন, ‘তারা আমাদের জাতিকে মহান উচ্চতায় নিয়ে গেছেন। পুরস্কার দিয়ে শুধু তাদের সম্মানিত করছি না, বরং জাতি হিসেবে নিজেদের সম্মান তাদের মাধ্যমে পাচ্ছি। তারা প্রত্যেকে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে বহুল পরিচিত। তারা জাতির জন্য অনেক কিছু দিয়ে গেছেন। তাদের কথা জীবদ্দশায় স্মরণ করতে না পারলে অকৃতজ্ঞ জাতি হিসেবে চিহ্নিত হয়ে যাব। যাদের এ সম্মান দিতে চাই, যথাসময়ে সেটা যেন দিই।’
স্বাধীনতা পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানের সঞ্চালক মন্ত্রিপরিষদ সচিব শেখ আবদুর রশিদ বলেন, ‘বদরুদ্দীন উমর পুরস্কার গ্রহণে অপারগতা প্রকাশ করায় তার জন্য পদক তৈরি করা হয়নি। তবে পদকের রেপ্লিকা জাতীয় জাদুঘরে সংরক্ষণ করা হবে।’
গত ৬ই মার্চ রাতে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বদরুদ্দীন উমর বলেন, ‘১৯৭৩ সাল থেকে আমাকে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা থেকে পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। আমি সেগুলোর কোনোটি গ্রহণ করিনি। এখন বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার আমাকে স্বাধীনতা পুরস্কার দেওয়ার ঘোষণা করেছে। এ জন্য তাদের ধন্যবাদ। কিন্তু তাদের দেওয়া এ পুরস্কারও আমার পক্ষে গ্রহণ করা সম্ভব নয়।’
এর আগে ১৯৭২ সালে বদরুদ্দীন উমরকে বাংলা একাডেমি পুরস্কার দেওয়া হয়। তবে তিনি তা তাৎক্ষণিক প্রত্যাখ্যান করেন। ১৯৭৪ সালে তিনি ইতিহাস পরিষদের পুরস্কার পান এবং তা প্রত্যাখ্যান করেন।
সরকার ১৯৭৭ সাল থেকে প্রতিবছর স্বাধীনতা দিবসের প্রাক্কালে এ পুরস্কার দিয়ে আসছে। স্বাধীনতা পুরস্কারের ক্ষেত্রে পুরস্কারপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে পাঁচ লাখ টাকা, স্বর্ণপদক, পদকের একটি রেপ্লিকা ও একটি সম্মাননাপত্র দেওয়া হয়। মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানিয়েছেন, এখন পর্যন্ত ৩২টি প্রতিষ্ঠান ও ৩২৪ জন এ পুরস্কার পেয়েছেন।
এইচ.এস/
খবরটি শেয়ার করুন