ছবি : সংগৃহীত
চলছে ভালোবাসার সপ্তাহ। আগামী ১৪ই ফেব্রুয়ারি বিশ্ব ভালোবাসা দিবস ও বসন্ত উৎসবকে ঘিরে জমে উঠেছে ফুলের রাজধানী খ্যাত যশোরের গদখালীতে পাইকারি ফুলের বাজার। রোববার (১১ই ফেব্রুয়ারি) ভোর থেকে জমজমাট কেনাবেচা শুরু হয়েছে এ বাজারে। এদিন অন্যান্য ফুলের তুলনায় বাজারে ভালোবাসার প্রতীক গোলাপ ফুলের পরিমাণ অনেক বেশি দেখা গেছে।
কৃষকরা বলছেন, চলতি বছরে আবহাওয়াজনিত কারণে গোলাপের বাগানে ভাইরাসের আক্রমণ হয়। ফলে গোলাপ ফুলের উৎপাদন কম হওয়ায় চড়া দাম পাচ্ছেন। তবুও লোকসানের শঙ্কায় রয়েছে।
অন্যদিকে ব্যবসায়ীরা বলছেন, সারাদেশে গদখালীর ফুলের চাহিদা অনেক বেশি। তবে এবার গোলাপ ফুলের উৎপাদন কম এবং বাজারে আমদানি কম হওয়ায় চাহিদা অনুযায়ী গোলাপ ফুল সরবরাহ করতে পারছেন না তারা।
আরো পড়ুন : বাসর রাতেই জানতে পারলেন স্ত্রী ৮ মাসের গর্ভবতী
সরজমিনে রোববার (১১ই ফেব্রুয়ারি) সকালে গদখালীর ফুলের বাজার ঘুরে দেখা যায়, এ বাজারে গোলাপ বিক্রি হচ্ছে প্রতি পিস ২৫-৩০ টাকা, চায়না গোলাপ প্রতি পিস ৪০ টাকা, গ্লাডিওলাস প্রতি পিস ১৭ থেকে ১৮ টাকা, জারবেরা প্রতি পিস ১৫-১৬ টাকা, রজনীগন্ধা ১৩-১৫, গাদা প্রতি হাজার ৩০০-৮০০ টাকা, চন্দ্রমল্লিকা প্রতি পিস ৩-৫ টাকা। ভালোবাসা দিবস ও বসন্ত উৎসবকে কেন্দ্র করে বেশিরভাগ বেপারীরা গোলাপ ফুলের কেনাবেচা নিয়ে বেশি ব্যস্ত রয়েছেন।
নীলকন্ঠ নগরে গ্রামের এক চাষি জানান, গোলাপ নিয়ে এসেছি ৫০০ পিস। বেপারীরা দাম বলেছে ২৫-৩০ টাকা। এতে আমরা সন্তুষ্ট। তবে ভাইরাস না লাগলে আমাদের উৎপাদন বেশি হতো।
ঈশ্বরদীর থেকে গদখালীর বাজারে ফুল কিনতে এসেছে এক ব্যবসায়ী। তিনি বলেন, আমি ২৫ বছর ধরে এ বাজার থেকে ফুল কিনে নিয়ে যাই। এতো কম ফুল কোনদিন দেখিনি। অন্যান্য বছর গোলাপে বাজার লাল হয়ে যায়। কিন্তু এ বছর ভাইরাস লাগায় বাজারে গোলাপের সংখ্যা কম। তবে দাম ভালো।
গদখালী থেকে ফুল কিনে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পাঠান কালাম। তিনি বলেন, গদখালীর ফুলের চাহিদা সারাদেশেই আছে। কিন্তু এবার ফুল কম আমরা চাহিদা মোতাবেক ফুল সরবরাহ করতে পারছি না।
অনলাইনে দেশের বিভিন্ন জেলায় ফুল সরবরাহ করেন এক কলেজছাত্র। তিনি বলেন, বিগত দুইদিন আগে থেকে ফুলের চাহিদা প্রচুর পরিমাণে বেড়ে গেছে। বিশেষ করে গোলাপের চাহিদা বেড়েছে। দামেও ভালো। আমরা অনলাইনে অর্ডার নিচ্ছি আর ফুল সরবরাহ করছি।
যশোর ফুল উৎপাদন ও বিপণন সমবায় সমিতির সভাপতি কৃষক নেতা আব্দুর রহিম বলেন, গদখালিতে এবার গোলাপ ফুলের সংখ্যা কম। তবে কৃষকেরা ভালো দাম পাচ্ছে। আগামী দুই তিনদিন ভালোবাসা দিবসকে কেন্দ্র করে এমন চড়া দামে ফুল বিক্রি হলে তারা একটু ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে পারব। এ বছর বিশ্ব ভালোবাসা দিবস ও বসন্ত উৎসবকে কেন্দ্র করে প্রায় ৪০ কোটি টাকার ফুল বিক্রি হবে বলে আমরা ধারণা করছি।
ঝিকরগাছা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাসুদ হোসেন পলাশ জানান, এ বছর ঝিকরগাছার ১৫০ হেক্টর জমিতে গোলাপের চাষ হয়েছে। আবহাওয়া বিপর্যয়, অতিরিক্ত বৃষ্টির কারণে গোলাপের ক্ষেতে এক ধরণের ছত্রাকের আক্রমণ হয়েছে। আমরা কৃষকদের সঙ্গে প্রতিনিয়ত যোগাযোগ রাখছি এবং তাদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিচ্ছি।
এস/ আই. কে. জে/
খবরটি শেয়ার করুন