ছবি: সংগৃহীত
তীব্র গরমে পানির সংকট সবখানে। সারাদেশে প্রচণ্ড তাপপ্রবাহের কারণে মাঠে-খালে-বিলে কোথাও পানি নেই। পানির অভাবে কষ্ট পাচ্ছে পাখিরাও। তৃষ্ণার্ত পাখিদের কথা চিন্তা করে মন কাঁদে তাদের। তাই সপ্তাহ খানেক ধরে পাখির জন্য গাছে গাছে পানির পাত্র বাঁধছেন তারা। প্রতিদিন গড়ে ২০টি গাছে পাত্র বাঁধছেন নিজ খরচে। গত এক সপ্তাহে, ঘোপপাড়া বিন্নী, সাবেক বিন্নী, দরিবিন্নী, রাধানগর, সোনরদাড়ি, বাসুদেবপুর, তালবাড়িয়া গ্রামের প্রায় দুইশ গাছে বেধেছে পানির পাত্র।
পাখি বাঁচাও, প্রকৃতি বাঁচাও’- এ স্লোগানকে সামনে রেখে পাখির নিরাপদ আবাসস্থল নিশ্চিতের লক্ষ্যে কাজ করছে পরিবেশবাদী একটি সংগঠন।
ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডু উপজেলার চাদপুর ইউনিয়নের ঘোপপাড়া বিন্নী গ্রামের কলেজ পড়ুয়া তুষার, সোহাগ, বাপ্পি, হাসান, রাশিদুল, মনিরুল, লিমনদের কথা। পাখিদের প্রতি ভালোবাসা থেকেই তারা গড়ে তুলেছে “বন্য পাখি সুরক্ষা ক্লাব”, সেখানে তাদের মতো অর্ধশতাধিক ছাত্র এই কাজের সঙ্গী।
২০১৬ সালে পাখি প্রেমী শফিকুর রহমান বিপ্লব পাখি সুরক্ষায় গড়ে তোলেন এই ক্লাব। দীর্ঘ সময় ধরে তারা পাখিদের সুরক্ষায় কাজ করে আসছেন। ওই অঞ্চল এখন পাখিদের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে। গাছে গাছে শালিক, ঘুঘু, চড়ুই পাখির কিচিরমিচির শব্দে এলাকা মুখরিত। এই কাজে তারা যেমন প্রশংসিত হন তেমনি অনেকের তিরস্কারের পাত্রও হন। কারণ পাখি কৃষকের ফসল খেয়ে নষ্ট করে।
এই ক্লাবের সদস্যরা প্রায় সবাই শিক্ষার্থী হওয়ায় তারা নিজের পকেট খরচ ও টিউশনির টাকা বাঁচিয়ে পাখিদের জন্য এই গরমে পানির বোলত, দড়ি কিনে গাছে গাছে পানির পাত্র টানাচ্ছেন। তেমনি বর্ষার মৌসুমে পাখিদের জন্য ফলজ ও বনজ গাছ লাগান।
ক্লাবের সদস্য তুষার বলেন, পাখিদের প্রতি ভালোবাসা থেকেই আমি এই সংগঠনের সদস্য হয়েছি।পরিবার থেকে আমাকে যে হাত খরচ দেয় সেটা থেকে অল্প কিছু জমিয়ে পাখি রক্ষার কাজে ব্যয় করি। এ পর্যন্ত ২০০টি পানির পাত্রের ব্যবস্থা করেছি। ঘোপপাড়া গ্রামে ৬০টি, দরিবিন্নি ২০টি, রাধানগরে ৪০টি, সাবেক নিত্যনন্দপুরে ৪০টি ও সাবেক বিন্নিতে ৪০টি গাছে পাখির জন্য পানির ব্যবস্থা করেছি। যতদিন বৃষ্টি না হয় ততদিন আমাদের এই কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।
আরো পড়ুন: ট্রাফিক পুলিশের চোখ ফাঁকি দিতে গাড়িতে ভুয়া স্টিকার!
সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক শফিকুর রহমান বিপ্লব বলেন, এ বছর তীব্র গরম। পাশাপাশি পানির সংকট রয়েছে। মাঠে-খালে-বিলে কোথাও পানি নেই। পাখিরাও পানির জন্য কষ্ট পাচ্ছে। তাই পাখিদের জন্য পানির ব্যবস্থা করছেন। গাছে গাছে পানির কৌটা বাঁধতে শুরু করেছেন। একটি কৌটা বাঁধতে ২০ টাকা খরচ হচ্ছে। বাজারে বিভিন্ন জিনিসপত্র রাখা হয় যে কৌটায়, সেটাই তিনি পানির পাত্র হিসেবে ব্যবহার করছেন।
এসি/ আই.কে.জে