মঙ্গলবার, ২২শে জুলাই ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
৬ই শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ

*** সংসদে সংরক্ষিত আসন চায় দলিত সম্প্রদায় *** উত্তরায় বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় নরেন্দ্র মোদির শোক *** সাগরিকার হ্যাটট্রিকে নেপালকে উড়িয়ে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ *** উত্তরায় বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর শোক *** হাসপাতাল এলাকায় অহেতুক ভিড় না করার অনুরোধ প্রধান উপদেষ্টার *** নিরীহদের হয়রানি না করতে অনুরোধ গোপালগঞ্জ জেলা বিএনপির *** পাইলট বিমানটিকে জনবিরল এলাকায় নেওয়ার চেষ্টা করেন: আইএসপিআর *** বিসিবির সিদ্ধান্ত বদল, স্টেডিয়ামে খাবার নিয়ে ঢুকতে মানা *** বিমান দুর্ঘটনা থেকে অল্পের জন্য বাঁচলেন অভিনেত্রী সানা *** জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের আলোচনা মুলতবি

সয়াবিন তেলের কৃত্রিম সংকট, দাম বাড়ানোর পায়তারা

উপ-সম্পাদকীয়

🕒 প্রকাশ: ১২:১৫ পূর্বাহ্ন, ৬ই মার্চ ২০২৫

#

ছবি: সংগৃহীত

প্রতি বছর রমজানের সময় একশ্রেণির ব্যবসায়ী তেলের দাম বাড়ানোর জন্য 'সংকট' তৈরি করেন। পাইকারি ও খুচরা বাজারে সয়াবিন তেলের সরবরাহ কমিয়ে এক ধরনের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করেন তারা। পরে দাম বাড়িয়ে দেন। এবারের রমজানেও নিত্যপণ্যের বাজারে রীতিমতো 'সয়াবিন তেল আতঙ্ক'। সরবরাহ কমিয়ে দাম বাড়ানোর পায়তারা চলছে।

দেশে প্রতি বছর ভোজ্যতেলের ২৩ থেকে ২৪ লাখ টন চাহিদা থাকে। এর মধ্যে মাত্র আড়াই লাখ টন তেল দেশে উৎপাদিত হয়। বাকি ২০ থেকে ২১ লাখ টন ভোজ্যতেল আমদানি করা হয়। এর মধ্যে রমজান মাসে  ৩ থেকে সাড়ে ৩ লাখ টনের চাহিদা থাকে। 

ট্যারিফ কমিশন সূত্র বলছে, চলতি অর্থবছরের ৫ই জানুয়ারি পর্যন্ত দেশে ১০ লাখ ৯৫ হাজার ৫২৫ টন সয়াবিন ও পাম তেল আমদানি হয়েছে। এর মধ্যে অপরিশোধিত সয়াবিন তেল ৩ লাখ ৮৪ হাজার ৮০ টন ও পাম তেল ৭ লাখ ১১ হাজার ৪৪৪ টন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের এক প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, গত অক্টোবর থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত সময়ে ৫ লাখ ৯৮ হাজার ২৫২ মেট্রিক টন সয়াবিন তেল আমদানি হয়েছে। যা আগের বছর একই সময়ের তুলনায় ৩৪ শতাংশ বেশি। কিন্তু এর কোনো ইতিবাচক প্রভাব নেই বাজারে। অথচ সরবরাহ সংকটের কথা বলে দফায় দফায় দাম বাড়ানো হচ্ছে। রমজানের শুরুতেই আরেক দফা দাম বাড়ানো হয়েছে।

সরকারের বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্য বলছে, রাজধানীর খুচরা বাজারে প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেল ১৮৫ থেকে ১৯০ টাকায় বিক্রি হয়, যা আগের সপ্তাহের তুলনায় লিটারে পাঁচ টাকা বেশি। আর দুই লিটারের বোতলজাত সয়াবিন তেল দুই থেকে পাঁচ টাকা বেড়ে ৩৬০ থেকে ৩৬৫ টাকায় এবং এক লিটারের বোতলজাত তেল দুই টাকা বেড়ে ১৭৮ থেকে ১৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

রাজধানীর বিভিন্ন বাজারের খুচরা বিক্রেতারা সয়াবিন তেলের সরবরাহ স্বাভাবিক না হওয়ার অভিযোগ করছেন। তাদের অভিযোগ, কোম্পানির ডিলাররা পর্যাপ্ত তেল সরবরাহ করছেন না। শুধু তা-ই নয়, বোতলজাত সয়াবিনের সঙ্গে নানা ধরনের পণ্য নেওয়ার শর্ত জুড়ে দিচ্ছেন। ভোক্তা অধিকারের অনুসন্ধানেও বিষয়টি বেরিয়ে এসেছে। সম্প্রতি রাজধানীর বড় চারটি বাজার পর্যবেক্ষণ করে ভোক্তা অধিকার বলেছে, ডিলার ও পাইকারি ব্যবসায়ীরা খুচরা বাজারে সয়াবিনের সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছেন।

এতে খুচরা দোকানগুলোতে তেলের সরবরাহ কমে গেছে। এছাড়া তেলের সঙ্গে খুচরা ব্যবসায়ীদের অন্য পণ্য নেওয়ার শর্ত জুড়ে দেওয়ার বিষয়টির সত্যতা পাওয়া গেছে। ভোক্তাদের প্রশ্ন—তাহলে সুস্পষ্ট অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও কেন এখন পর্যন্ত এই সংকট তৈরির পেছনের চক্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না? গুটিকয়েক কোম্পানি মূলত সয়াবিন তেল আমদানি করে। তারাই মূলত দাম বাড়ানোর জন্য বাজারে সরবরাহ কমিয়ে সংকট তৈরি করে।

ভোজ্যতেলের দাম সহনীয় পর্যায়ে রাখতে সরকার গত ১৬ই ডিসেম্বর সয়াবিন, পামঅয়েল আমদানিতে শুল্ক, রেগুলেটরি ডিউটি ও অগ্রিম আয়কর শতভাগ অব্যাহতি দিয়েছে। পাশাপাশি ভ্যাট ১৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ করে। এসব করেও বাজারে কোনো প্রভাব পড়েনি। বরং বাজার আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে অস্থিতিশীল হয়েছে।

কনজ্যুমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) এর মতে, বেশ কিছুদিন ধরেই ভোজ্যতেলের বাজারে অস্থিরতা বিরাজ করছে। এখনো সরবরাহ স্বাভাবিক হয়নি। সরকারের উচিত হবে, রমজান মাসজুড়ে কঠোরভাবে বাজারে অভিযান পরিচালনা করা।

এইচ.এস/


সয়াবিন তেল

সুখবর এর নিউজ পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

খবরটি শেয়ার করুন