প্রতীকী ছবি
চ্যাটজিপিটির মতো জেনারেটিভ আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স অ্যাসিস্ট্যান্ট অনলাইনে প্রচলিত সার্চ ট্রাফিক কমিয়ে দিচ্ছে। এতে সংবাদের ওয়েবসাইট পাঠক হারাচ্ছে এবং বিজ্ঞাপন থেকে আয় ব্যাহত হচ্ছে। টিকে থাকার লড়াইয়ে থাকা সংবাদ খাতের ওপর এটি আরও একটি বড় আঘাত।
বোস্টন গ্লোব মিডিয়ার গবেষণা ও উন্নয়ন বিভাগের ভাইস প্রেসিডেন্ট ম্যাট ক্যারোলিয়ান সতর্ক করে বলেছেন, ‘প্রকাশকদের জন্য আগামী তিন-চার বছর অত্যন্ত কঠিন হতে যাচ্ছে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ভিত্তিক সারসংক্ষেপের ঝড় থেকে কেউই রেহাই পাবে না।’ খবর এএফপির।
ক্যারোলিয়ান আরও বলেন, ‘প্রকাশকেরা নিজেদের সুরক্ষার বন্দোবস্ত করতে না পারলে তাদের এই ঝড়ে ভেসে যাওয়ার ঝুঁকি থাকবেই।’ সীমিত পরিমাণ তথ্যের ভিত্তিতে পিউ রিসার্চ সেন্টারের সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, গুগল সার্চে নিয়মিত আসা এআই-ভিত্তিক সারসংক্ষেপ ব্যবহারকারীদের মূল লেখায় ক্লিক করার আগ্রহ কমাচ্ছে।
এআইভিত্তিক সারসংক্ষেপ থাকলে ব্যবহারকারীরা সাধারণ সার্চের তুলনায় প্রস্তাবিত লিংকে আগের তুলনায় ৫০ শতাংশ কম ক্লিক করেন। বিজ্ঞাপন থেকে আয় ও সাবস্ক্রিপশন বৃদ্ধির জন্য ট্রাফিকের ওপর নির্ভরশীল অনলাইন সংবাদমাধ্যমের জন্য এটি একটি ভয়াবহ লোকসান।
নর্থইস্টার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জন উইহবে বলেছেন, ‘এ ধরনের প্রবণতা আরও দ্রুত বাড়বে এবং খুব শিগগিরই আমরা একদম নতুন ধরনের ওয়েব দেখতে পাব।’
ইতিমধ্যে গুগল ও মেটার মতো বড় প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠান অনলাইন সংবাদমাধ্যমে বিজ্ঞাপন থেকে আয় ব্যাপকভাবে কমিয়ে দিয়েছে। ফলে প্রকাশকদের এখন সাবস্ক্রিপশনের ওপর আরও বেশি নির্ভর করতে হচ্ছে।
তবে উইহবি বলেছেন, সাবস্ক্রিপশনও ট্রাফিকের ওপর নির্ভরশীল। প্রধান গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানগুলোকে চালিয়ে নেওয়ার জন্য শুধু পেইড সাবস্ক্রাইবার যথেষ্ট নয়।
বোস্টন গ্লোব গ্রুপ এখন চ্যাটজিপিটির মাধ্যমে সাবস্ক্রাইবার পাওয়ার কাজ শুরু করেছে। ক্যারোলিয়ান জানান, এটি সম্ভাব্য পাঠকদের সঙ্গে নতুন ধরনের সংযোগ স্থাপনের সুযোগ তৈরি করছে।
তবে ক্যারোলিয়ান বলছেন, ‘সাবস্ক্রাইবারের এই সংখ্যা অন্যান্য প্ল্যাটফর্ম, এমনকি ছোট ছোট সার্চ ইঞ্জিনের তুলনায় খুবই সামান্য।’ অন্যদিকে পারপ্লেক্সিটির মতো অন্যান্য এআই–ভিত্তিক টুল থেকে নতুন সাবস্ক্রিপশনের পরিমাণ আরও কম বলে জানান ক্যারোলিয়ান।
অনেকে এই পরিবর্তনকে অবশ্যম্ভাবী মনে করছেন। তাই সংবাদ প্রকাশনার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান টিকে থাকতে জেনারেটিভ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশনের (জিইও) ব্যবহার শুরু করেছে। এটি এখন পুরোনো এসইওর জায়গা নিচ্ছে।
এআই মডেলের উপযোগী করার জন্য কনটেন্টে (আধেয়) স্পষ্ট লেবেল, পরিষ্কার গঠন ও সহজ ভাষা ব্যবহার করতে হয়। পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও রেডিটের মতো ফোরামে সক্রিয় উপস্থিতিও জরুরি। এআই কোম্পানিগুলো এসব নিয়মিত স্ক্যান করে।
তবে একটি মৌলিক প্রশ্ন রয়েই যায়। অপটিমাইজেশন (সর্বোচ্চ দক্ষতা অর্জনের প্রক্রিয়া) স্টার্টআপ অটারলিএআইয়ের প্রধান নির্বাহী টমাস পেহাম প্রশ্ন তুলেছেন, ‘আপনার কি ওপেনএআইয়ের স্বয়ংক্রিয় স্ক্যানিং বটকে আপনার ওয়েবসাইট ও কনটেন্ট স্ক্যান করার অনুমতি দেওয়া উচিত?’
খবরটি শেয়ার করুন