সোমবার, ৬ই অক্টোবর ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
২১শে আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ

*** ফানুস উৎসবে বর্ণিল চট্টগ্রামের আকাশ *** এখন থেকে যেকোনো ভিসা নিয়ে ওমরাহ পালন করা যাবে: সৌদি আরব *** মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষা ১২ই ডিসেম্বর *** বুলবুলই ফের বিসিবির সভাপতি, সহসভাপতি পদে চমক *** ইতিহাস গড়ে সোনার ভরি দুই লাখের ওপরে *** বিএনপির সরকার ভারতের সঙ্গে ‘সবার আগে বাংলাদেশ’ পররাষ্ট্রনীতি অনুসরণ করবে *** বিএনপি ক্ষমতায় গেলে নোয়াখালীকে বিভাগ করা হবে: বরকতউল্লা *** অগ্নিকাণ্ডে ফায়ার সার্ভিস কর্মী নুরুলের মৃত্যুর ১২ দিন পর সন্তান জন্ম দিলেন স্ত্রী *** সৌদি আরবে বাংলাদেশি সাধারণ শ্রমিক নিয়োগে ‘মাইলফলক’ চুক্তি *** নিজেকে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের ‘মাস্টারমাইন্ড’ মনে করেন না তারেক রহমান

বাংলাদেশ মিশনের উদ্যোগে ভারতে প্রথম জামদানি প্রদর্শনী

নিজস্ব প্রতিবেদক

🕒 প্রকাশ: ০৪:৪৩ অপরাহ্ন, ২০শে সেপ্টেম্বর ২০২৫

#

ছবি: সংগৃহীত

ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লির ন্যাশনাল ক্রাফটস মিউজিয়ামে প্রথমবারের মতো জামদানি প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে বাংলাদেশ হাইকমিশন। এর ফলে দর্শনার্থীরা বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী ও প্রসিদ্ধ বস্ত্রশিল্প জামদানির বিরল নান্দনিকতা সরাসরি দেখার সুযোগ পাচ্ছেন। খবর বাসসের।

পাঁচ দিনের এ প্রদর্শনী গতকাল শুক্রবার (১৯শে সেপ্টেম্বর) উদ্বোধন করা হয়। এটি আগামী ২৩শে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।

প্রদর্শনীটি ভারতের কারুশিল্প ও বস্ত্র সংরক্ষণকর্মী চন্দ্রশেখর ভেদার তত্ত্বাবধানে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এতে বাংলাদেশের খ্যাতনামা কারিগরদের বোনা অপরূপ জামদানি প্রদর্শিত হচ্ছে। প্রদর্শনীতে রয়েছে দেড়শ’ বছরের পুরনো দুটি দুর্লভ জামদানিও।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভেদা বলেন, ‘এগুলো মেশিনে তৈরি করা সম্ভব নয়। এর স্বচ্ছতা ও সূক্ষ্মতা এমন যেন বাতাসে বোনা।’

বাংলাদেশের হস্তশিল্প পুনর্জাগরণ আন্দোলনের অগ্রপথিক এবং আড়ংয়ের সাবেক ডিজাইন প্রধান চন্দ্রশেখর সাহা বলেন, ‘একসময় বাংলার মসলিন বিশ্বসেরা ছিল। সেই ধারার ওপর দাঁড়িয়ে জামদানি আজও মর্যাদার প্রতীক। এটি এমন এক শিল্প, যাকে দেখা ও অনুভব করা যায়।’

অনুষ্ঠানে ভারতের সাংস্কৃতিক অঙ্গনের বিশিষ্টজনরাও জামদানি নিয়ে মত প্রকাশ করেন। পদ্মশ্রী জয়ী ডিজাইনার সুনীতা কোহলি বলেন, জামদানি ‘হাওয়ায় বোনা’। সম্রাটরা একে লালন করেছেন, বণিকরা সমুদ্রপথে বহন করেছেন এবং কবিরা এর সূক্ষ্মতা বর্ণনায় হিমশিম খেয়েছেন। ইউনেস্কো এটিকে ‘অমূর্ত সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য’ ঘোষণা করেছে। আমি এটিকে বলি ‘অমূর্ত বিলাসিতা’, যা মূল্য দিয়ে নয়, ধৈর্য, সময় ও মানুষের হাতের কৌশল দিয়ে পরিমাপ করা হয়।’

খ্যাতনামা চলচ্চিত্র নির্মাতা ও ডিজাইনার মুজাফফর আলি বলেন, ‘জামদানি আলো ও বুননের এক অনন্য সৌন্দর্য, যা কারুশিল্পের প্রতি সম্মিলিত ভালোবাসার মাধ্যমে জাতিগুলোকে এক করতে পারে।’

প্রদর্শনীর মূল পরিকল্পনাকারী ভারতে বাংলাদেশের হাইকমিশনার এম. রিয়াজ হামিদুল্লাহ বলেন, ‘এ বছরের স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে জামদানি প্রদর্শনীতে মানুষের বিপুল সাড়া দেখে এই উদ্যোগের অনুপ্রেরণা পাই। আমরা চাই, প্রদর্শনীর মাধ্যমে আরও বেশি মানুষ জামদানির অনন্ত সৌন্দর্য আবিষ্কার করুক।’

জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত জামদানি কারিগর মোহাম্মদ জামাল হোসেন ও মোহাম্মদ সজীব প্রদর্শনীর সময় সেখানে বসেই জামদানির বুনন প্রক্রিয়া দেখাচ্ছেন। ফলে দর্শনার্থীরা শিল্পটির সূক্ষ্মতা সম্পর্কে বাস্তব ধারণা পাচ্ছেন।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে কূটনীতিক, শিল্পী, চলচ্চিত্র নির্মাতা ও দেশি-বিদেশি বস্ত্রবোদ্ধারা অংশ নেওয়ায় মিলনমেলায় পরিণত হয় প্রদর্শনীটি। মনে হয়েছে যেন দু’দেশের সাংস্কৃতিক সেতুবন্ধন এবং ঐতিহ্যের সম্মিলিত উদযাপন চলছে।

ভারত-বাংলাদেশ জামদানি প্রদর্শনী

সুখবর এর নিউজ পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

খবরটি শেয়ার করুন

Footer Up 970x250