ছবি: সংগৃহীত
মানুষের সঙ্গে সাধারণত কুকুর, বিড়াল, পাখি বা বিভিন্ন গৃহপালিত প্রাণীর বন্ধুত্ব দেখা যায়। তবে মাগুরায় বেজির সঙ্গে সখ্য গড়ে তুলে রীতিমতো তাক লাগিয়েছেন ভ্যান-সাইকেলমিস্ত্রি সাত্তার মোল্লা। বেজি ও মানুষের মাঝে বন্ধুত্বের এমন নজির দেখতে ভিড় করছেন অনেকে। প্রাণীর প্রতি মানুষের ভালোবাসা থেকে এমন সম্পর্ক গড়ে ওঠেছে বলে মনে করেন প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা।
ভ্যান-সাইকেলমিস্ত্রি সাত্তার মোল্লার বাড়ি মাগুরা সদর উপজেলার কুচিয়ামোড়া ইউনিয়নের কুল্লিয়া গ্রামে। তার সঙ্গে বন্য প্রাণী বেজির বন্ধুত্ব এলাকাবাসীর নজর কেড়েছে।
জানা গেছে, প্রায় দুই বছর আগে গ্রামের পুকুরপাড়ে অসুস্থ অবস্থায় পড়ে থাকা বেজির একটি ছানা দেখেন সাত্তার মোল্লা। প্রাণীটির প্রতি মায়া হওয়ায় বাড়িতে নিয়ে আসেন তিনি। স্থানীয়ভাবে পরিচর্যা করে ধীরে ধীরে সুস্থ করে তোলেন। তখন থেকে সেটি তার সঙ্গে রয়েছে।
বেজির সঙ্গে সখ্যের বিষয়ে সাত্তার মোল্লা বলেন, প্রাণীটাকে প্রথমে খাঁচায় আটকে তাকে পুরোপুরি সুস্থ করেছি। ভেবেছিলাম, বন্য প্রাণী বনেই থাকা ভালো। তাই একাধিকবার ছেড়েও দিয়েছি। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হলো, প্রতিবার এটি ফিরে এসেছে। পরে ভালোবেসে তার নাম রেখেছি ‘লালু’। লালু বলে ডাক দিলেই সে যেখানেই থাকে, সেখান থেকে ছুটে আসে। এভাবেই লালুর সঙ্গে আমার বন্ধুত্ব হয়ে গেছে।
সাত্তার মোল্লা আরও বলেন, ‘শুরুর দিকে পরিবারের লোকজন বেজি পালনে আপত্তি জানিয়েছিল। তাদের ভয় ছিল, প্রাণীটি হয়তো একসময় আমার ক্ষতি করতে পারে। এখন পরিবারও প্রাণীটির সঙ্গে মানিয়ে নিয়েছে। পরিবারের সদস্যরা আগে নিরুৎসাহিত করত, এখন তারাও বেজিটাকে খাওয়ায়, আদর করে।’
স্থানীয় ও আশপাশের গ্রামের অনেক মানুষ প্রতিদিন সাত্তারের দোকানে ভিড় করছেন বেজিটিকে একনজর দেখার জন্য। কেউ ছবি তুলছেন, কেউ ভিডিও করছেন।
স্থানীয় বাসিন্দা সজিব শেখ বলেন, বেজি সাধারণত কামড় দেয়। কিন্তু এই বেজি একেবারেই আলাদা। সাত্তারের সঙ্গে ওর সত্যিকারের বন্ধুত্ব হয়েছে।
মহম্মদপুর উপজেলার প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা সুব্রত কুমার সেন বলেন, প্রাণী ও মানুষের মাঝে ভালোবাসা গড়ে ওঠা স্বাভাবিক। ভালোবাসা ও যত্ন পেলে প্রাণীরাও মানুষের প্রতি গভীরভাবে সাড়া দেয়।
জে.এস/
খবরটি শেয়ার করুন