ছবি: সংগৃহীত
ফকির লালন শাহ-এর ১৩৫তম তিরোধান দিবস উপলক্ষে তিন দিনব্যাপী স্মরণোৎসব আজ শুক্রবার (১৭ই অক্টোবর) কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার ছেঁউড়িয়ার আখড়াবাড়ীতে শুরু হচ্ছে। এ বছরই প্রথম রাষ্ট্রীয়ভাবে আয়োজন করা হচ্ছে লালন স্মরণোৎসব। খবর বাসসের।
এ বছর সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় লালন একাডেমি ১৭ই থেকে ১৯শে অক্টোবর পর্যন্ত তিন দিনব্যাপী লালন উৎসবের আয়োজন করেছে। রাষ্ট্রীয়ভাবে লালন উৎসব আয়োজন করায় খুশি লালনের ভক্ত ও অনুসারীরা। সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী আজ সন্ধ্যায় এই উৎসবের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন।
জানা যায়, ১২৯৭ বঙ্গাব্দের পহেলা কার্তিক উপমহাদেশের আধ্যাত্মিক সাধক পুরুষ ফকির লালন শাহের মৃত্যুর পর প্রথমে তার অনুসারীরা লালন স্মরণে উৎসব পালন করতেন। পরে লালন একাডেমি ও কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসন যৌথভাবে প্রতি বছর এ উৎসব পালন করে আসছে।
‘মানুষ ভজলে সোনার মানুষ হবি’ ফকির লালন শাহ’র এই আধ্যাত্মিক বাণীকে ধারণ করে এ বছর জাতীয়ভাবে পালিত হচ্ছে উৎসব। ইতোমধ্যেই আধ্যাত্মিক গুরু ফকির লালনকে স্মরণ ও তার দর্শন লাভ, অচেনাকে চেনা, জ্ঞান সঞ্চয়, আত্মার শুদ্ধি ও মুক্তির লক্ষ্যে এবং আত্মিক প্রশান্তির প্রয়াসে দেশ বিদেশ থেকে লালন অনুসারী, ভক্ত, অনুরাগী ও দর্শনার্থীরা সাঁইজির ধামে আসতে শুরু করেছেন। সাধু সঙ্গে ও পুণ্য সেবায় আসতে পেরে খুশি তারা।
কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক আবু হাসনাত মোহাম্মদ আরেফিন বাসসকে বলেন, প্রতিদিনই রাতে আখড়াবাড়ীর মূলমঞ্চে আলোচনা সভার পাশাপাশি অ্যাকাডেমির শিল্পী ও দেশবরেণ্য লালন শিল্পীরা লালন ফকিরের আধ্যাত্মিক গান পরিবেশন করবেন।
নিরাপত্তা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আখড়াবাড়ী চত্বরে কালী নদীর তীরে মাঠে বসেছে বিশাল লালন মেলা। আর এই উৎসবকে নির্বিঘ্ন করতে সিসি টিভি, ওয়াচ টাওয়ারসহ কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
মরমি সাধক লালনের জীবনকর্ম, জাতহীন মানব দর্শন, অসাম্প্রদায়িক চিন্তা চেতনার আদর্শিক বিষয় নিয়েই চলে আসছে প্রতি বছর এ উৎসব। ধর্ম-বর্ণ জাত-পাত ও সাম্প্রদায়িকতার ঊর্ধ্বে উঠে লালনের দর্শন নিয়ে অসম্প্রদায়িক সোনার বাংলাদেশ গড়ার আহ্বান সাধু বাউলদের। আগামী ১৯শে অক্টোবর রোববার রাতে এ বছরের মতো লালন উৎসব শেষ হবে।
খবরটি শেয়ার করুন