ছবি: সংগৃহীত
লেবাননের বিখ্যাত গায়ক ফাদেল শাকের এক দশকেরও বেশি সময় ধরে আত্মগোপনে থাকার পর অবশেষে গতকাল রোববার (৫ই অক্টোবর) দেশটির সামরিক গোয়েন্দা সংস্থার কাছে আত্মসমর্পণ করেছেন। ২০১৩ সালে লেবাননের সাইদা শহরে সেনাবাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে অংশগ্রহণের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে মামলা চলছিল। খবর দ্য ন্যাশনালের।
ফাদেল শাকের ২০১২ সালে সংগীতজীবন ছেড়ে দিয়ে ‘হাজি শাকের’ নাম গ্রহণ করেন এবং সুন্নি ধর্মীয় নেতা শেখ আহমেদ আল-আসিরের অনুসারী হন। ওই সময় আল-আসিরের নেতৃত্বে লেবাননের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে সংঘর্ষে ১৮ জন সেনা নিহত হয়। অভিযোগ রয়েছে, শাকের সেই সংঘর্ষে অস্ত্র হাতে অংশ নিয়েছিলেন।
২০২০ সালে শাকেরকে অনুপস্থিত অবস্থায় ২২ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এরপর তিনি দক্ষিণ লেবাননের আইন আল-হিলওয়ে শরণার্থীশিবিরে আশ্রয় নেন বলে ধারণা করা হয়। ওই শিবিরটি কার্যত স্বশাসিত একটি এলাকা, যেখানে লেবাননের পুলিশ বা সেনাবাহিনীর প্রবেশ নিষিদ্ধ ছিল বহু বছর ধরে।
রোববার সন্ধ্যায় সামরিক গোয়েন্দারা শাকেরকে শিবিরের একটি প্রবেশদ্বার থেকে হেফাজতে নেয় বলে জানিয়েছে অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি)। সূত্রমতে, মধ্যস্থতাকারী ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিদের আলোচনার পর তিনি স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পণ করেন। এ অবস্থায় তার আগের সাজা বাতিল করা হতে পারে এবং নতুন অভিযোগের ভিত্তিতে তাকে পুনরায় জিজ্ঞাসাবাদ ও বিচার করা হবে।
শাকের বরাবরই দাবি করে এসেছেন, তিনি কখনো রক্তপাতের পক্ষে ছিলেন না এবং সাইদা সংঘর্ষে অংশ নেননি। গত এক দশক তিনি জনসম্মুখে দেখা দেননি। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পালিয়ে থাকা অবস্থায়ই তিনি আবার সংগীতজগতে ফিরেছেন। তার নতুন গান আহলা রাসমা, এল হোব ও বাস, হাওয়া আল-জানুব, রুহ এল বাহর এবং ছেলের সঙ্গে করা ডুয়েট কিফেক আ ফ্রাকে ইউটিউবে মিলিয়ন ভিউ পেয়েছে।
২০১৮ সালে ইসলামি সংগীত রেকর্ড করার মাধ্যমে গানের জগতে নতুন করে তার প্রত্যাবর্তন শুরু হয়। পরে ইসলামি সংগীতের বদলে আবারও জনপ্রিয় সংগীতে ফেরা নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। শাবআন মিন আল তামথিল নামে তার একটি গান ভাইরাল হলেও সমালোচনার মুখে তা একটি টেলিভিশন নাটক থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়।
সম্প্রতি তার জীবনভিত্তিক প্রামাণ্যচিত্র ‘ইয়া গায়েব... ফাদেল শাকের’ প্রকাশের পরও সমালোচকেরা অভিযোগ করেন, এতে তার অপরাধের বিষয়টি হালকাভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।
তবে ফাদেল শাকেরের জনপ্রিয়তা এখনো অক্ষুণ্ন। তার আইনি জটিলতা কাটলে সংগীতজগতে পূর্ণাঙ্গ প্রত্যাবর্তনের সম্ভাবনা উজ্জ্বল বলে মনে করছেন অনেকে।
জে.এস/
খবরটি শেয়ার করুন