বৃহস্পতিবার, ৪ঠা ডিসেম্বর ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
২০শে অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ

*** কিশোরগঞ্জের ইউএনও হিসেবে নিয়োগ পেলেন সাবেক লাক্স সুন্দরী *** ডোনাল্ড ট্রাম্পের মুখে ‘বর্ণবাদের দুর্গন্ধ’ *** আগামীকাল সকালে দেশে পৌঁছানোর চেষ্টা করবেন জোবাইদা রহমান *** তেলের দাম বাড়ানো ব্যবসায়ীদের ‘কারণ দর্শানোর’ নোটিশ দিয়ে বৈঠকে ডেকেছে সরকার *** ৭ দিন নীরবতার পর ইমরানের টুইট, ভেঙে দিলেন দলের রাজনৈতিক কমিটি *** তারেক রহমানের দেশে ফেরা নিয়ে দৃশ্যমান দ্বিধা ও অদৃশ্য বাধা *** আরও ৩৬ আসনে বিএনপির প্রার্থী ঘোষণা *** খালেদা জিয়ার সঙ্গে যাবেন ১৪ জন, থাকবেন পুত্রবধূ শামিলা, ছয় চিকিৎসক *** অন্তর্বর্তী সরকারের শপথ বৈধ, আপিল বিভাগে হাইকোর্টের রায় বহাল *** দেশে আসছেন জোবাইদা রহমান, খালেদা জিয়াকে লন্ডনে নেওয়ার প্রস্তুতি

সব মরিচই ঝাল নয়, কেউ কেউ একেবারেই আগুন

লাইফস্টাইল ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ০২:২৬ অপরাহ্ন, ২০শে সেপ্টেম্বর ২০২৫

#

ছবি: সংগৃহীত

লোকমুখে শুনে থাকবেন, ছোট মরিচের ঝাল বেশি। যদিও কথাটা একটু ফোড়ন কেটেই একজন অন্যজনকে বলে থাকেন। কিন্তু জানেন, ঝাল কীভাবে মাপা হয়? আপনি মরিচের জগতে নতুন হলে জেনে রাখুন, ঝালের মাত্রা মাপা হয় একটি নির্দিষ্ট এককে। যার নাম স্কোভিল হিট ইউনিটস (এসএইচইউ)। এর মাধ্যমেই মাপা হয়, কোন মরিচ ঠিক কতটা ঝাল। যদি ভাবেন, আপনার খাওয়া মরিচটা ভীষণ ঝাল ছিল, তাহলে একটু দাঁড়ান! কারণ, হয়তো এখনো ‘মরিচ দুনিয়ার দানবদের’ সঙ্গে আপনার পরিচয় হননি। সর্বোচ্চ ঝালসম্পন্ন মরিচের খেতাব বর্তমানে পেপার এক্স নামের মরিচের ঘরে। এটি তৈরি করেছেন দক্ষিণ ক্যারোলাইনার পাকারবাট পেপার কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা ইডি কোরি। এর আগে ২০১৩ সালে তার তৈরি ক্যারোলাইনা রিপার নামের মরিচ বিশ্ব রেকর্ড অর্জন করে। সূত্র: টেস্টিং টেবিল, স্টার্স ইনসাইডার। 

ইডি কোরির তৈরি পেপার এক্স আসলে শুধু মরিচ নয়, একে একটি ভয়ংকর মরিচও বলা চলে। ক্যারোলাইনা রিপার ঝালের মাত্রা গড়ে ছিল প্রায় ১৬ দশমিক ৪ লাখ এসএইচইউ। সেখানে পেপার এক্স পৌঁছেছে একেবারে ২৬ দশমিক ৯ লাখ এসএইচইউতে। তাই গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস থেকে এটিকে বিশ্বের সবচেয়ে ঝাল মরিচের খেতাব দেওয়া হয়েছে।

নাশতায় খাওয়ার মতো মরিচগুলো

ঝালের মধ্যে যে মাত্রা আপনি নাশতার খাবারে দিতে পারবেন, এমন মরিচও আছে। যাদের ঝালের মাত্রা ১ লাখ থেকে ৩ লাখ ৫০ হাজার এসএইচইউ পর্যন্ত হয়। এই ঝাল খেলে বেঁচে ফেরার সম্ভাবনা আছে। প্রথমেই বলি জ্যামাইকান হট চকলেট মরিচের নাম।

না, চকলেট নাম শুনে কিন্তু মিষ্টি ভাববেন না। জ্যামাইকার পোর্ট অ্যান্টোনিওর বাজার থেকে উঠে আসা এই মরিচে আছে স্মোকি ক্যারিবিয়ান ঝাল। স্কচ বননেট নামের মরিচে অবশ্য ঝালের সঙ্গে হালকা মিষ্টি ভাবও আছে। এজি চম্বো নামের মরিচটি প্যানামানিয়ান খাবারে অহরহ দেখা যায়। দক্ষিণ আমেরিকার সুরিনাম নামের একটি ছোট দেশ থেকে আসা মরিচ ম্যাডাম জিনেট। রান্নায় একে গোটা গোটা ফেলা হয়, যাতে প্রতিটা কামড়ে আগুন ছড়িয়ে পড়ে গোটা মুখে।

এবার এই মাত্রার একটি গোটা গোত্রের কথা জানুন। ক্যাপসিকাম চিনেন্স প্রজাতির একটি তীব্র ঝাঁজালো ও সুগন্ধযুক্ত মরিচের প্রজাতি হাবানেরো। এটি মূলত মেক্সিকোর ইউকাটান উপদ্বীপ থেকে এসেছে। এই পরিবারের সবচেয়ে বিরল মরিচ হোয়াইট হাবানেরো। গুপ্তধনের মতো করে মেক্সিকান ঝাল ঝাল স্যুপে এই রাজকীয় মরিচের ব্যবহৃত হয়। আমাজন থেকে উঠে আসে এই গোত্রের আরও একটি মরিচ—রেগুলার হাবানেরো। এরপর আছে হাবানেরোর আপগ্রেডেড ভার্সন ক্যারাবিয়ান রেড হাবানেরো; যা সস বা সালসায় দুই ফোঁটা দিলেই কাঁদতে পারেন। এই গোত্রেও চকলেটের মতো দেখতে আছে চকলেট হাবানেরো; যা কনগো ব্ল্যাক নামেও পরিচিত। দেখতে চকলেট, খেতে মারাত্মক ঝাল।

যে মরিচের ডিএনএতেই আগুন

এবার বলি, ৩ লাখ ৫০ থেকে ১০ লাখ এসএইচইউ মাত্রার ঝালের গল্প। এই পর্যায়ে এলে পানি নয়, বরফ খুঁজবেন। প্রথমে বলব, যেগুলোকে ল্যাবে তৈরি করা হয়েছে তাদের নাম। বৈজ্ঞানিকভাবে তৈরি টাইগারপা এনআর-এর ঝালকে হাবানেরোর দাদাও বলতে পারেন। মাত্র দুই সপ্তাহের জন্য ‘বিশ্বের সবচেয়ে ঝাল মরিচ’ ছিল ইনফিনিটি চিলি। এটি ব্রিটিশ বিজ্ঞানীদের একটি জাদু। স্প্যানিশ নাগা নামে পরিচিত মরিচ জিব্রাল্টার। ইউকে-তে তৈরি এই মরিচ খাওয়ার আগে নিজের উইল লিখে রাখতে পারেন।

দক্ষিণ এশিয়ার আগুন

এই অঞ্চলের মরিচের ঝালের মাত্রা ১ লাখ থেকে ১৫ লাখ এসএইচইউ। প্রথমে বলি বাংলাদেশ ও ভারতের গর্ব নাগা মরিচের কথা। এই ঝাল খেতে হলে সাহস থাকা চাই। উত্তর-পূর্ব ভারতের একটি স্বতন্ত্র হাইব্রিড মরিচ ভূত জলোকিয়া। লাল, হলুদ, কমলা বা চকলেট রঙের এই মরিচকে ঘোস্ট পেপারও বলা হয়; যা মুখে দিলে আত্মা মুখ দিয়ে পালিয়ে যাবে। এর চকলেট রঙের ভূত জলোকিয়া চকলেট নামের মরিচটি স্বাদে কিছুটা মিষ্টি হলেও ঝালে সমান।

মরিচ দানব কারা

এই ক্যাটাগরির মরিচগুলোর গড় ঝাল ১০ লাখ থেকে ২২ লাখ এসএইচইউ। এখানে লুকিয়ে আছে এক আগুনঝরা পরিবার। তাদের বলতে পারেন ত্রিনিদাদ সিরিজ। এই পরিবারের সবচেয়ে কম ঝালের মরিচ সেভেন পট। কিন্তু এর একটাই সাত পাত্র ভর্তা বানাতে যথেষ্ট। এর চেয়ে একটু ঝাল এবং একটু তিতা সেভেন পট ব্যারাকপোর। এই গোত্রেও চকলেটের মতো আছে সেভেন পট ডগলাহ। এর চেয়ে একটু বেশি ঝাল সেভেন পট প্রিমো। একে নাগার বাচ্চা বলতে পারেন। এর পরের লেভেলের ঝাল পাবেন ক্যারিবিয়ান কৃষি গবেষণার আবিষ্কার ত্রিনিদাদ স্করপিয়ন সিএআরডিআইতে। এরপর যার নাম আসে, তা রান্নায় ব্যবহার করতে গেলে ব্যবহার করতে হবে মাস্ক, গ্লাভস আর হ্যাজম্যাট স্যুট। ত্রিনিদাদ স্করপিয়ন বুচ টি নামের এই মরিচ খালি হাতে পড়লে হাত দুদিন অবশ হয়েও থাকতে পারে।

এবার বলি ঝালের বাপের গল্প, যার নাম ত্রিনিদাদ মোরুগা স্করপিয়ন। উনি ইতিহাসে প্রথম মরিচ, যার ঝালের পরিমাণ ২ মিলিয়ন এসএইচইউ ছাড়িয়েছে।

জে.এস/

মরিচ

সুখবর এর নিউজ পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

খবরটি শেয়ার করুন

Footer Up 970x250