ছবি : সংগৃহীত
আমাদের দেশের পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়ির কথা নিশ্চয়ই সবার জানা। বর্ষায় অচেনা এক রূপে সেজে ওঠে এই জনপদ। তাই এখানে ঘোরাঘুরির এটাই মোক্ষম সময়। হাতে একটু খানি সময় নিয়ে ঘুরে আসতে পারেন ঝর্ণার দেশে।
বষাকালে অনেকেই ঘুরতে যান সাজেক। তবে সাজেকের পাশাপাশি খাগড়াছড়িতে রয়েছে দারুণ পাহাড়ের বুনো সৌন্দর্য আর ঝর্ণা। এখানে মিলবে ছোট-বড় মোট ১০টি ঝর্ণা।
তৈদুছড়া ঝর্ণা: এখানে যেতে পুরোটা পথ ট্রেকিং করতে হয়। খাগড়াছড়ির দীঘিনালার জামতলী হয়ে ঢুকলে সহজ ট্রেইল পাওয়া যায়। এখানেই মিলবে ঝিরি আর উঁচু-নিচু পাহাড়ি পথ। তৈদুছড়ায় মিলবে দুটি ঝর্ণা। এখানে যাওয়ার পথটা বেশ ঝুঁকিপূর্ণ। ট্র্যাকিংয়ে সময় লাগবে প্রায় ৬-৮ ঘণ্টা।
সিজুক ঝর্ণা: সিজুক ঝরনা’র অবস্থান রাঙামাটি হলেও যাওয়ার রুট মূলত খাগড়াছড়ি’র দীঘিনালা হয়ে। দীঘিনালা থেকে চান্দের গাড়িতে নন্দরাম পর্যন্ত যেতে হবে। নন্দরাম গ্রাম থেকে পাহাড়ি ট্রেইল, বাঁশবন পেরিয়ে ঝিরি পথে সিজুক যেতে হবে। এখানেও রয়েছে দুটি ঝর্ণা। তবে ভরা বর্ষায় ঝিরিতে গলা পর্যন্ত পানি থাকে।
মাচালং ঝর্ণা: খাগড়াছড়ি থেকে চান্দের গাড়িতে সাজেক যাওয়ার পথে মাচালংয়ে ৮ নাম্বার থেকে পাহাড়ে পথে এখানে যেতে হয়। এটি ঝর্ণার উচ্চতার দিক থেকে এই বেল্টের সর্বোচ্চ। এখানে যেতে চাইলে অবশ্যই স্থানীয় কাউকে সঙ্গে রাখতে হবে।
আরো পড়ুন : বর্ষায় বেড়াতে যাবেন? সঙ্গে যা যা রাখবেন
হরিণমারা ঝর্ণা: এই ঝর্ণাটি একদমই নতুন। গত বছর হরিণমারা ঝর্ণার সন্ধান মেলে। বাঘাই হাট পুলিশ বক্সের আগে পাহাড়ের মেঠো পথ ধরে প্রায় ৫-৬ ঘণ্টার ট্রেকিং করতে হয়। বেশিরভাগ পথই সমতল। তবে ঝর্ণায় নামতে হলে খাঁড়া পাহাড় বেয়ে নিচে যেতে হয়। এখানে ট্র্যাকিংয়ে সময় লাগবে প্রায় ৪-৫ ঘণ্টা।
তোজেংমা ঝর্ণা: পাহাড়ের নতুন আর সবচেয়ে সুন্দর ঝর্ণা তোজেংমা। দুটি ঝর্ণা একই জায়গা এসে মিলেছে। তোজেংমার বেশিরভাগই ট্রেইল-ঝিরির পথ। তবে পুরো ট্রেইল বেশ মনোমুগ্ধকর। সবুজে মোড়ানো এমন ট্রেইল খুব কমই আছে। দীঘিনালা থেকে ঝর্ণা ঘুরে আসতে প্রায় ৪-৫ ঘণ্টা সময় লাগে।
বর্ণাল ঝর্ণা: মাটিরাঙ্গা’র বর্ণাল ইউনিয়নে এই ঝর্ণার অবস্থান। ঝরনার পথ খুব দীর্ঘ না হলেও বেশ ঝুঁকিপূর্ণ। ঝর্ণায় যাওয়ার একমাত্র পথ লতা বেয়ে খাঁড়া পাহাড় থেকে নেমে গিয়েছে। বর্ণাল ঝর্ণার বিশাল জলাধার আপনাকে মুগ্ধ করবে।
হাজাছড়া ঝর্ণা: সাজেকের পথে এই ঝর্ণা এখন বেশ জনপ্রিয়। ঝিরি পথ ধরে সহজ ট্রেইল, এত বিশাল সুন্দর ঝর্ণা খুব কমই আছে। রাস্তা থেকে পায়ে হেঁটে ২০ মিনিটেই যেতে পারবেন এই ঝর্ণার কাছে।
রিছাং ঝর্ণা: পাহাড়ি ঝিরি থেকে বয়ে আসা রিছাং খুবই জনপ্রিয় ঝর্ণা। শহরের খুব কাছাকাছি হওয়ায় এখানে প্রচুর পর্যটক আসে। রিছাং ঝরনার পিচ্ছিল পাথর খণ্ডে স্লাইডটা বেশ রোমাঞ্চকর।
কীভাবে যাবেন ও কোথায় থাকবেন
ঢাকা ও চট্টগ্রাম থেকে সরাসরি বাসযোগে খাগড়াছড়ি যেতে পারবেন। এখানে শ্যামলী, শান্তি, সৌদিয়া ও এসআলমসহ বিভিন্ন পরিবহন প্রতিদিন যাতায়াত করে। আর খাগড়াছড়িতে রাত্রি যাপনের জন্য অনেক হোটেল পেয়ে যাবেন। যেগুলোর মধ্যে অন্যতম হোটেল গাইরিং, ইকোছড়ি ইন, ম্যাউনন্টেন ইন, অরণ্য বিলাস ও হোটেল আল-আমিন।
প্রয়োজনীয় তথ্য
ঝর্ণায় বেড়াতে গেলে তার আশপাশটা পরিষ্কার রাখবেন। বিশেষ করে প্ল্যাস্টিকের প্যাকেট, বোতল, খাবার প্যাকেট এসব ফেলে আসবেন না। স্থানীয়দের সঙ্গে কোন বিরূপ আচরণ করা থেকে বিরত থাকবে।
এস/ আই.কে.জে/
খবরটি শেয়ার করুন