ছবি: সংগৃহীত
কোনো ধরনের কেমিক্যাল ছাড়াই চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে বরই চাষে সফল হয়েছেন মো. মুসলিম উদ্দিন। প্রথমবারই সফলতার মুখ দেখেছেন তিনি। প্রতিদিন বিক্রি করছেন বাগানের বরই। তিনি উপজেলার কাটাছড়া ইউনিয়নের পূর্ব কাটাছড়া গ্রামের মরহুম মৌলভী মাঈন উদ্দিনের ছেলে। তিনি এইচএসসি পাস করার পর কৃষিকে পেশা হিসেবে বেছে নেন।
সরেজমিনে জানা গেছে, ৫০ শতক জায়গায় গড়ে তোলা বরই বাগান পুরোটা নেট দিয়ে ঘেরা। ভেতরে প্রবেশ করে গাছে ঝুলতে দেখা যায় সবুজ-হলুদ ও লালচে বলসুন্দরী বরই। বিক্রির জন্য মুসলিমসহ কয়েকজন গাছ থেকে বরই তুলে ব্যাগে রাখছেন। সাধারণত সেপ্টেম্বর মাসে গাছে ফুল আসে। ডিসেম্বরের মাঝামাঝি থেকে পাকতে শুরু করে। আকারে বড় ও স্বাদে সুমিষ্ট হওয়ায় বাগানেই বিক্রি হয়ে যায় সব বরই।
কৃষক মুসলিম উদ্দিন বলেন, ‘৬ বছর ধরে কৃষিকাজ করছি। উপজেলা কৃষি অফিসের একটি টিমের সঙ্গে ফটিকছড়ি উপজেলার হেঁয়াকো এলাকায় বরই বাগান ভিজিট করি। এসেই বরই বাগান করার চিন্তা করেছি। গত বছরের এপ্রিল মাসে বাড়ির পাশে প্রথমে ২০ শতক জায়গায় বলসুন্দরী জাতের ৪৫টি বরই গাছ লাগাই।’
আরো পড়ুন: পটুয়াখালীতে শসা চাষে ঘুরছে কৃষকের ভাগ্যের চাকা
তিনি বলেন, ‘এরপরে আরও ৩০ শতক জায়গায় চাষ বাড়াই। মেহেরপুর থেকে চারা সংগ্রহ করেছি। প্রতি কেজি বরই ১৪০ টাকা দরে এ পর্যন্ত ২০ হাজার টাকা বিক্রি করেছি। গাছে যে পরিমাণ বরই আছে, আশা করছি লাখ টাকা বিক্রি করতে পারবো।’
মুসলিম বলেন, ‘বাগান গড়তে ২৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। বাগানের পরিধি আরও বাড়াবো। ৬ বছর ধরে বিভিন্ন সবজি চাষ করে যাচ্ছি। প্রথমে ৫ শতক জায়গায় আগাম টমেটো চাষ শুরু করে এখন ৮৫ শতক জমিতে টমেটো চাষ করেছি। এ বছর প্রায় দেড়লাখ টাকার টমেটো বিক্রি করেছি। আরও ৫০ হাজার টাকা বিক্রি করতে পারবো।’
তিনি আরও বলেন, ‘এছাড়া পেঁপে, কলা, মরিচ, বাঁধাকপি, তিতকরলা, তরমুজ ও সরিষা আবাদ করেছি। সারাবছরই জমিতে কাঁচা মরিচ ও টমেটো চাষ করা হয়। এজন্য উপজেলা কৃষি অফিস প্রশিক্ষণের পাশাপাশি নানা ভাবে সহযোগিতা করে থাকে।’
মিরসরাই উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা প্রতাপ চন্দ্র রায় বলেন, ‘কম খরচ ও পরিচর্যায় বেশি ফলন পাওয়ায় বরই চাষে আগ্রহ বাড়ছে স্থানীয় চাষিদের। বলসুন্দরী জাতের বরই অনেক সুস্বাদু। মুসলিম উদ্দিন এ জাতের বরই চাষ করে প্রথম বছরই সফল হয়েছেন।’
এসি/ আই.কে.জে/