ছবি: সংগৃহীত
গত কয়েক দিনের উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে আজ শনিবার (২৪শে মে) সন্ধ্যার পর বিএনপি ও জামায়াতের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বৈঠকে বসছেন। সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় এ বৈঠক শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।
এর আগে নির্বাচনসহ নানা ইস্যুতে রাজনৈতিক পরিস্থিতি ক্রমেই উত্তপ্ত হয়ে উঠছিল। বিশেষ করে নির্বাচন নিয়ে বিএনপির পক্ষ থেকে সরকারের ওপর চাপ বাড়ছিল। এর মধ্যে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের তাগিদ দিয়ে সেনাপ্রধানের বক্তব্য প্রথমে সোশ্যাল মিডিয়া এবং পরে মূল ধারার মিডিয়াতে আসার পর পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে ওঠে।
এ পরিস্থিতিতে প্রধান উপদেষ্টা পদত্যাগের ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন বলে খবর বের হয়। বিষয়টি প্রথমে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নাহিদ ইসলামের মাধ্যমে গণমাধ্যমে আসে। গত বৃহস্পতিবার (২২শে মে) সন্ধ্যায় নাহিদ প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করেন। সেখানে উপস্থিত ছিলেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ ও মাহফুজ আলম। প্রধান উপদেষ্টা পদত্যাগের ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন—এমন খবর পেয়েই তিনি সাক্ষাৎ করতে গিয়েছিলেন বলে জানান নাহিদ।
এরপর সরকার ও রাজনৈতিক অঙ্গনে অস্থিরতা আরও বাড়ে। সোশ্যাল মিডিয়াতে একে অপরকে দোষারোপ করে বক্তব্য পোস্ট করা হয়। জামায়াত সর্বদলীয় বৈঠকের প্রস্তাব করে। চরমোনাই পীরের ডাকে এনসিপিসহ পাঁচটি দল বৈঠক করে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়, তারা প্রধান উপদেষ্টার পদত্যাগ চান না।
সর্বশেষ আজ প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (একনেক) বৈঠক শেষে পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা পদত্যাগ করছেন না। তিনি আমাদের সঙ্গেই থাকছেন।’
এ পরিস্থিতিতে নজর এখন যমুনায় বিএনপি ও জামায়াতের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার অনুষ্ঠেয় বৈঠকের দিকে। ধারণা করা হচ্ছে, এ বৈঠক থেকে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত আসবে। কী ঘোষণা আসতে পারে তা নিয়ে চলছে জল্পনা। চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতার প্রধান দুটি ইস্যু হলো—নির্বাচনের রোডম্যাপ এবং সরকারের তিন উপদেষ্টাকে নিয়ে বিতর্ক। এ ছাড়া সংস্কার, জুলাই সনদ, স্থানীয় নির্বাচন—এ ইস্যুগুলোও আলোচনার টেবিলে রয়েছে।
উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে গতকাল রাতে রাজধানীর রমনার একটি বাসায় বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপির নেতাদের উচ্চ পর্যায়ের একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। আনুষ্ঠানিকভাবে কেউ এ বৈঠকের কথা স্বীকার না করলেও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘ সময়ের রাজনৈতিক মিত্র থাকলেও বর্তমানে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে ওঠা বিএনপি ও জামায়াত নির্বাচনের ব্যাপারে একক সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পেরেছে।
তারা ডিসেম্বর অথবা বড় জোর আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সরকারকে সময় দিতে রাজি। তবে এনসিপি তাদের অবস্থানের ব্যাপারে এখনো কিছুটা অনমনীয়। তারা নির্বাচনের আগে জুলাই সনদ ঘোষণা, সংস্কার, স্থানীয় নির্বাচন ও গণপরিষদ নির্বাচন চায়। সেই সঙ্গে নির্বাচন কমিশনেরও পুনর্গঠন চেয়েছে এনসিপি।
এইচ.এস/