ছবি: সংগৃহীত
সাবেক এমপি আব্দুর রহমান বদির সহযোগী টেকনাফ উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান জাফর আহম্মদকে রাজধানী ঢাকা থেকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। শুক্রবার (১লা নভেম্বর) রাতে ঢাকার বাসাবো এলাকা থেকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-১৫।
র্যাব-১৫ এর কক্সবাজারের সিনিয়র সহকারী পরিচালক (আইন ও গণমাধ্যম) অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. কামরুজ্জামান গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ইয়াবা সিন্ডিকেটের টেকনাফের মাদক সম্রাট আব্দুর রহমান বদি ওরফে ইয়াবা বদির সহযোগী হিসেবে পরিচিত ছিল সাবেক চেয়ারম্যান জাফর আহম্মদ। ২০২২ সালের ডিসেম্বরে এক হাজার ২৭৫ জন মাদক কারবারিকে তালিকাভুক্ত করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। সেই প্রতিবেদনে আব্দুর রহমান বদি ও তার ঘনিষ্ঠ সহচর জাফরকে ইয়াবা সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণের অন্যতম মূল হোতা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। ২০১৯ সালে আত্মসমর্পণকারী মাদক কারবারীরা পুনরায় জামিনে বের হয়ে জাফরের নেতৃত্বে আবার সঙ্গবদ্ধ হয়ে ইয়াবা মাদক ব্যবসার ব্যাপক প্রসার ঘটিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, গত ৫ই আগস্ট সরকার পতনের পরপর টেকনাফের ঝর্নাচত্বর এলাকায় ছাত্র জনতার উপর জাফরের নেতৃত্বে নির্বিচারে গুলি চালায় জাফরসহ তার সন্ত্রাসীরা। হামলার সময় তাদের হাতে দুটি শর্টগান ও একটি পিস্তল দেখা গেছে বলে প্রত্যক্ষদর্শী এবং স্থানীয় সূত্র জানায়। গত ১৮ই আগস্ট ছাত্র-জনতার ওপর হামলার ঘটনায় দায়ের করা হত্যাচেষ্টা মামলার অন্যতম আসামি জাফর আহম্মদ। এই মামলার প্রধান আসামি আব্দুর রহমান বদি আগেই র্যাবের হাতে আটক হলেও তার বিশ্বস্ত সহযোগী জাফর এতদিন অধরাই ছিল। অবশেষে ব্যাপক তথ্য সংগ্রহ ও গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধির মাধ্যমে র্যাব-১৫ এবং র্যাব-৩ এর যৌথ আভিযানিক দল জাফরকে র্যাবের গ্রেফতার করে।
আরও পড়ুন: সেনা-পুলিশের গাড়িতে আগুনের ঘটনায় ৩ জন আটক
তিনি আরও বলেন, গত ৫ই আগস্ট রাতে টেকনাফে বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে জাফর এবং তার তিন ছেলের নেতৃত্বে টেকনাফের আলো শপিং কমপ্লেক্স, হোটেল নাফ কুইন ও আব্দুল্লাহ ব্রাদার্স ফিলিং স্টেশনে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয়। এসব ঘটনায় পৃথকভাবে তিনটি মামলা করা হয়। আর সবকটিতেই জাফর আহম্মদকে আসামি করা হয়েছে।
জিজ্ঞাসাবাদে জাফর র্যাবকে জানায়, তিনি প্রথম জীবনে ছিলেন পান বাজারের শ্রমিক। সেখান থেকে হয়ে উঠেন শ্রমিক নেতা। পরে টেকনাফ সদর উপজেলা পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর থেকে তার আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি। এরপর টেকনাফ সদর ইউপি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ওয়ান ইলেভেনের সময় জাফর গ্রেফতার হয়ে কারাগারে গেলে আব্দুর রহমান বদির সঙ্গে তার সখ্যতা গড়ে ওঠে। এরপর রাজনৈতিক মতাদর্শ পরিবর্তন করে আব্দুর রহমান বদির সঙ্গে যুক্ত হন। বদির সহায়তায় চতুর্থ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন জাফর। এরপর জেলা পরিষদ সদস্য ও ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আবারও উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন তিনি।
গ্রেফতার জাফরের বিরুদ্ধে মাদক, অস্ত্র, দুদকের মামলাসহ প্রায় এক ডজন মামলা রয়েছে। এর কয়েকটিতে তিনি জামিনে থাকলেও অধিকাংশ মামলাই বিচারাধীন। ২০২১ সালের ২১শে জানুয়ারি দুর্নীতি দমন কমিশনের দায়ের করা এক মামলায় আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের দায়ে আদালত তাকে কারাগারে পাঠায়।
এসি/কেবি
খবরটি শেয়ার করুন