সোমবার, ৮ই জুলাই ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
২৩শে আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিলাওয়ালকে প্রধানমন্ত্রী করতে নওয়াজকে শর্ত দিল পিপিপি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ০৫:০৭ অপরাহ্ন, ১১ই ফেব্রুয়ারি ২০২৪

#

ছবি: সংগৃহীত

পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) চেয়ারম্যান বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারিকে প্রধানমন্ত্রী বানানোর শর্তে পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজের (পিএমএল-এন) দলের সাথে পিপিপি সমঝোতায় রাজি আছে বলে জানিয়েছেন দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট ও বিলাওয়ালের পিতা আসিফ আলী জারদারি। 

এমনকি প্রধানমন্ত্রীর পদ ছাড়াও আরও কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয় পিপিকে দেওয়া হলে শেহবাজ শরিফের দলের সাথে পিপিপি জোট সরকার গঠন করবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজের (পিএমএল-এন) চেয়ারম্যান শাহবাজ শরিফ রবিবার (১১ই ফেব্রুয়ারি) গণমাধ্যমকে এসব শর্তের কথা জানিয়েছেন। 

পিপিপির প্রস্তাবের প্রতিক্রিয়ায় এখনো কিছু জানায়নি পিএমএল-এন। দলটি আরেক গুরুত্বপূর্ণ পার্টি মুত্তাহিদা কাউমি মুভমেন্টের (এমকিউএম-পি) সঙ্গে সরকার গঠনের সফল আলোচনা শেষ করেছে বলে জানা গেছে। 

পাকিস্তানের ৮ই ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, ২৬৪ আসনের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ১০১ আসনে জয় পেয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। এরপরই পাকিস্তান মুসলিম লিগ–নওয়াজ (পিএমএল-এন) ৭৫ আসনে, পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) ৫৪ ও মুত্তাহিদা কওমি মুভমেন্ট পাকিস্তান (এমকিউএম) ১৭ আসনে জয়ী হয়েছে। এ ছাড়া অন্যান্য দল পেয়েছে ১৭টি আসন।

দেশটিতে এককভাবে সরকার গঠনের জন্য দরকার ১৩৪টি। সেই হিসাবে এবার কোনো দল একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। 

বিদ্যমান পরিস্থিতিতে পিপিপির সঙ্গে জোটে পিএমএল-এন সরকার গঠন করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কিন্তু দুটি দল মিলিয়ে এখন পর্যন্ত আসন পেয়েছে ১২৭টি। এমকিউএম-পি যোগ দিলে মোট আসন হবে ১৪৪টি। অর্থাৎ তখন ইমরান খানে দলের স্বতন্ত্র প্রার্থীদের সরকার গঠন আর সম্ভব হবে না।

তবে পরিস্থিতি এখনো কোন দিকে যায় সেটা বোঝা যাচ্ছে না। কারণ তিনবারের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ বিলাওয়ালকে পদ ছেড়ে দিতে রাজি হবেন কিনা সেটা দেখার বিষয়। এ অবস্থায় দর কষাকষি করতে আরও সময় লাগতে পারে। 

রোববার সকাল পর্যন্ত আটটি আসনের ফল ঘোষণা বাকি ছিল। ফল ঘোষণায় দেরি হওয়ায় কারাবন্দি ইমরান খানের দলের চেয়ারম্যান গওহর খান রবিবার (১১ই ফেব্রুয়ারি) দেশজুড়ে বিক্ষোভের ডাক দিয়েছিলেন। পরবর্তীতে তা প্রত্যাহার করা হয়েছে। 

তবে দেশটির জামায়েত ইসলাম (জেআই), জামায়েত উলামায়ে ইসলাম এফসহ (জেইউআই-এফ) আরও কিছু ছোট দল দেশজুড়ে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভের ডাক দিয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৮ই ফেব্রুয়ারি) সকাল ৮টায় শুরু হওয়া ভোট বিকাল ৫টায় শেষ হয়। এবার দেশটিতে প্রায় ১২ কোটি ৮০ লাখ ভোটার। এর প্রায় অর্ধেকের বয়স ৩৫-এর নিচে। প্রার্থী ৫ হাজারের বেশি। নারী ৩১৩ জন। ৯০ হাজার ৬৭৫ কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ চলে।

বৃহস্পতিবার ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার প্রায় ৯ ঘণ্টা পর শুক্রবার ভোরে প্রথম ফল ঘোষণা করা হয়। ফল ঘোষণায় দেরি হওয়ায় কারচুপি ও জালিয়াতিসহ বিভিন্ন অভিযোগ উঠছে।

পাকিস্তান সেনাবাহিনী এবার পিএমএল-এনকে সমর্থন করছে বলে শোনা যাচ্ছে। দেশটির রাজনীতিতে সেনাবাহিনীর ভূমিকা অত্যন্ত শক্তিশালী। 

আরও পড়ুন: পাকিস্তানে নির্বাচনের সব আসনের ফলাফল ঘোষণা

শনিবার দেশটির সেনাপ্রধান অসিম মুনির বলেছেন, আমাদের নির্ভরযোগ্য নেতা দরকার। রাজনৈতিক নৈরাজ্য থেকে বের হওয়ার জন্য দরকার একটি জাদুকরী ছোঁয়া অতিপ্রয়োজন হয়ে পড়েছে। 

এদিকে নির্বাচনে কারচুপি ও জালিয়াতির অভিযোগ খতিয়ে দেখার আহ্বান জানিয়েছে আমেরিকা। তা ছাড়া দেশটির প্রতিনিধি পরিষদ ও সিনেটের কিছু সদস্য এখনই পাকিস্তানের কোনো সরকারকে স্বীকৃতি না দিতে প্রেসিডেন্ট বাইডেনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

সূত্র : দ্য ডন, জিওনিউজ

এসকে/ 

প্রধানমন্ত্রী পাকিস্তানের নির্বাচন

খবরটি শেয়ার করুন