ছবি: সংগৃহীত
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব গ্রহণের দুই মাস পরও ভোগ্যপণ্যের বাজারে স্বস্তি এলো না। বরং অস্বস্তি আরো কয়েক গুণ বেড়েছে। বিগত সরকারের সময় সিন্ডিকেটের অভিযোগ ছিল। যার কারণে পণ্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছিল না।
দেশের সাধারণ মানুষ কষ্টে ছিলেন। যার ক্ষোভ গণআন্দোলনের সময় দেখা গেছে।মানুষ এই পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পেতে প্রতীক্ষায় ছিল। মানুষের ধারণা ছিল নতুন সরকার এলে তাদের স্বস্তি হবে, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম কমবে। কিন্তু বর্তমান সরকারের দুই মাসে দাম তো কমেনি বরং জ্যামিতিক হারে বেড়েই চলছে। ফলে এখন আর কোনো পণ্যই সাধারণ মানুষের নাগালের মধ্যে নেই।
গরিব ও নিম্নমধ্যবিত্ত মানুষ মাছ-মাংস কেনার সামর্থ্য আগেই হারিয়েছে। তারা এখন ভাত ও সবজির উপর নির্ভরশীল।কিন্তু কয়েক দিনের ব্যবধানে চালের দাম কেজিতে বেড়েছে চার-পাঁচ টাকা।
সবজির দাম এতোটাই বেড়েছে যে সাধারণ ক্রেতাদের নাগালের বাইরে। সবজির কেজি কোনটিই একশ টাকার নিচে নেই। কিছু সবজির কেজি দেড়শ থেকে দুইশ টাকা। কাঁচা মরিচ সাড়ে তিনশ থেকে চারশ টাকা। প্রতিযোগিতা দিয়ে বাড়ছে ডিম, মুরগি ও মাছের দাম। গরু-খাসির মাংস আগে থেকেই উচ্চমূল্যে অবস্থান করছে।
আলু, আদা, রসুন, পেঁয়াজও নাগালের মধ্যে নেই। ডিমের দাম বাড়তে বাড়তে এখন প্রতি পিস হয়েছে ১৫ টাকা। সব মিলে নিত্যপণ্যের বাজার ক্রেতার কাছে এখনও দুর্বিষহ।
সরকারের সঠিক নজরদারির অভাবে এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ীরা নিত্যনতুন অজুহাতে দাম বাড়ানোর প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়। কোনো কোনো সময় কৃত্রিম সংকট তৈরি করেও পণ্যের দাম বাড়ানো হয়। সিন্ডিকেট চক্রই মূলত বাজার নিয়ন্ত্রণ করে। পরিস্থিতি এমন হয়ে দাঁড়িয়েছে কিছু অসাধু ব্যবসায়ীই বাজার নিয়ন্ত্রণ করে। কখন দাম বাড়বে, কখন কমবে সেটা তারাই নির্ধারণ করে। সরকারের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই।
জনগণের অনেক প্রত্যাশা ছিল নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দ্রব্যমূল্য ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে নিয়ে আসবে। জনগণ আশা করেছিল সিন্ডিকেট ভেঙে যাবে, জনগণ ন্যায্যমূল্যে পণ্য কিনতে পারবে। বাজার নিয়ন্ত্রণে ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তর কাজ করলেও দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি নেই। বরং সরকারের মনিটরিংয়ের অভাবে ব্যবসায়ীরা ইচ্ছামতো দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে।
সমন্বয়হীনতার কারণে কোনো জবাবদিহিতা নেই। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে কঠোর মনিটরিং দরকার। তা না হলে কোনোভাবেই দাম নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়।
ভোক্তার অস্বস্তি দিনদিন বেড়েই চলছে। বাজার কোনোভাবেই সাধারণ মানুষের নাগালের মধ্যে থাকছে না। মুদ্রাস্ফীতির কারণে নিম্ন থেকে মধ্যবিত্ত আয়ের মানুষ প্রচন্ড চাপের মধ্যে আছে। যার কারণে মানুষের জীবনযাত্রা কঠিন থেকে কঠিনতর হচ্ছে।
এসি/ আই.কে.জে/