রবিবার, ২২শে ডিসেম্বর ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
৮ই পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আক্কেলপুরে সমতল ভূমিতে চাষ হচ্ছে সুমিষ্ট কমলা

নিউজ ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ০৯:২০ পূর্বাহ্ন, ৪ঠা ডিসেম্বর ২০২৪

#

ছবি: সংগৃহীত

দূর থেকে মনে হয়, গাছের পাতার ফাঁকে আলো জ্বলছে। কমলার বাগান দেখতে ভিড় করছে মানুষ। ঘন সবুজ পাতার ফাঁকে ফাঁকে থোকায় থোকায় দুলছে কমলা। ছবিও তুলছেন অনেকেই। এমনই দৃশ্য দেখা যায় জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার ভিকনী গ্রামে ইমরান-সুমি দম্পত্তির কমলা বাগানে। এরই মধ্যে ভালো ফলন দেখে অনেকেই কমলা চাষে আগ্রহী হচ্ছেন।

আক্কেলপুর উপজেলার গোপীনাথপুর ইউনিয়নের ভিকনী গ্রামের ইমরান হোসেন প্রায় পাঁচ বছর আগে ১ বিঘা জমিতে বারি-২ জাতের কমলার বাগান করেন। সেই বাগানে প্রথমে কয়েকটি কমলার চারা রোপণ করেন। সেখান থেকে গ্রাফটিং করে আরও চারা রোপণ করেন। এবারই প্রথম গাছগুলোতে বেশি ফল এসেছে। সমতল ভূমির এ কমলা বাগানে পাকা কমলা এরই মধ্যে বিক্রি শুরু হয়েছে।

ইমরান-সুমি দম্পত্তির বাগানে গিয়ে দেখা গেছে, গাছগুলোয় থোকায় থোকায় কমলা ধরে আছে। কোনোটা পেকে হলুদ হয়ে গেছে, আবার কোনোটা সবুজ রয়ে গেছে। তিনি ও তার স্ত্রী মিলেই পরিচর্যা করছেন বাগান। অনেক গাছের ডাল রসালো কমলার ভারে নুয়ে পড়েছে। সেসব ডালে আবার বাঁশের ঠেকা দেওয়া হয়েছে।

ইমরান হোসেন জানান, ২০২০ সালের দিকে ১ বিঘা জমিতে প্রথমে রোপণ করেন কয়েকটি কমলার চারা। সেই চারা থেকে গ্রাফটিং করে চারা বাড়িয়ে এখন বাগানে ১৩০টি গাছ আছে। এর জাত বারি কমলা-২। ১৩০টি গাছের মধ্যে প্রায় ৮০টি গাছে কমলা আছে। প্রতিটি গাছে ১৫-৪০ কেজি পর্যন্ত কমলা ধরেছে। এখন ব্যবসায়ীরা প্রতি কেজি কমলা পাইকারিতে ২০০-২২০ টাকা দরদাম করছেন।

উদ্যোক্তা ইমরান হোসেন বলেন, ‘আমি কৃষিতে এসে সহজে বেশি লাভবান কিভাবে হতে পারি, এই চিন্তা করতাম। এরপর ইউটিউব দেখে কমলা চাষে উদ্বুদ্ধ হই। বর্তমানে এই জমিতে কমলা চাষ করে সফল হয়েছি। কমলা বিক্রি করে বেশ ভালো দাম পাচ্ছি। কৃষি বিভাগ থেকে পরামর্শসহ সহযোগিতা করা হচ্ছে। যারা বেকার যুবক আছেন, তারা এই কমলা চাষে উদ্বুদ্ধ হবেন। এর চেয়ে সহজ কোনো চাষ নেই।’

আরও পড়ুন: রাজশাহীর চরাঞ্চলে ফসলের বাম্পার ফলন, চাঙা অর্থনীতি

ইমরানের স্ত্রী সুমি বেগম  বলেন, ‘অনেক পরিশ্রমের ফলে এ সুফল পেয়েছি। অনেকেই অনেক কথা বলেছিল। যে কমলা পাহাড়ে হয়, এখানে হবে না। হলেও তিতা হবে, ছোট হবে। কিন্তু না, এমনটার কিছুই হয়নি। এই কমলা অনেক ভালো এবং সুমিষ্ট। আমি গৃহিণী, সংসারের পাশাপাশি এই বাগানের পরিচর্যা করি।’

চারা কিনতে আসা শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘কমলা বাগানটি দেখে আমার খুব ভালো লেগেছে। বাংলাদেশের আবহাওয়ায় এমন কমলা হবে, তা ধারণা ছিল না। এই কমলা মিষ্টিও বটে। আমি এখানকার উদ্যোক্তার বাগানে এসে দশটি কমলার চারা কিনেছি। যারা কমলা চাষে উদ্বুদ্ধ হতে চান; তারা এখান থেকে চারা সংগ্রহ করে চাষ করেন। এতে দেশের মাটিতেই কমলা উৎপন্ন হবে।’

আক্কেলপুুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ইমরান হোসেন বলেন, ‘পাহাড়ি অঞ্চলে চাষ করা কমলা সমতলেও হচ্ছে। ইমরান কমলা বাগান করে বেকার তরুণ-তরুণীর জন্য একটা পথ করে দিয়েছেন। কেউ উদ্যোক্তা হয়ে এগিয়ে এলে সুফল পাবেন।’

এসি/ আই.কে.জে

কমলা চাষ

সুখবর এর নিউজ পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

খবরটি শেয়ার করুন