ছবি: সংগৃহীত
রাজশাহীর পদ্মা নদীর বিচ্ছিন্ন চরাঞ্চলে বাম্পার ফলন হচ্ছে ফসলের। এতে চাঙা হয়েছে এই অঞ্চলের অর্থনীতি। কৃষি জমিতে ফসল উৎপাদন করে সুদিন ফিরেছে শত শত পরিবারে। অনেকে ভিন্ন ব্যবসায় লোকসান গুনে এসে ঝুঁকছেন ফসলের জমি আবাদে।
জানা গেছে, জেলায় মোট ৯ উপজেলার মধ্যে পবা, গোদাগাড়ী, চারঘাট ও বাঘা চরের আওতায়। এসব উপজেলায় চর রয়েছে ১৪টি। এর মধ্যে পবার চর মাজারদিয়াড় ও চর খিদিরপুর, গোদাগাড়ীর চর আষাড়িয়াদহ ও চর দিয়াড় মানিকচর এবং চারঘাটের টাংগন উল্লেখযোগ্য। প্রায় ৫ হাজার ৮১৬ হেক্টর জমির আয়তন নিয়ে সবচেয়ে বড় চর পবার চর মাজারদিয়াড় ও চর খিদিরপুর। গত অর্থবছরে ১৪টি চরের অন্তর্ভুক্ত মোট জমি ছিল ১৪ হাজার ৮৫৩ হেক্টর। এর মধ্যে ১০ হাজার ১৮৭ হেক্টর জমিতে ফসল আবাদ হয়। মসুর, গম, সরিষা, শাকসবজি, ভুট্টা, পেঁয়াজ, রসুন, আদা, আলু, মাসকলাই, চিনাবাদাম ও ধনিয়াপাতা চাষে বেশি আগ্রহ কৃষকদের। গত বছর সবচেয়ে বেশি গম চাষ হয়েছে ২ হাজার ৬৯৫ হেক্টর জমিতে।
কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, জেলায় বিচ্ছিন্ন চর এলাকার ১১টি ব্লকে মোট জমি রয়েছে ১৪ হাজার ৪৪ হেক্টর। এর মধ্যে ৭ হাজার ৯৪৮ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়ে থাকে। আর ১৫ হেক্টর জমি পতিত রয়েছে। চরাঞ্চলের ২ হাজার ৭৯ হেক্টর জমিতে বছরে এক ফসল হয়। আর ৪ হাজার ১৭০ হেক্টর জমিতে দুই ফসল এবং বাকি ১ হাজার ৮১৯ হেক্টর জমিতে আবাদ হচ্ছে তিন ফসল।
সরেজমিনে চর মাজারদিয়াড়ে গিয়ে দেখা যায়, ভারত সীমান্ত ঘেষা বিস্তৃর্ণ মাঠে মাসকলাই, টমেটো ও কাঁচামরিচ চাষ করেছেন চরাঞ্চলের বাসিন্দারা। চাষাবাদে লেগেছে আধুনিকতার ছোঁয়া। পাওয়ার টিলার রাখা হয়েছে জমিতে। কাঁটা তারের বেড়ার পাশেই অনেকটা জীবনের ঝুঁকি নিয়েই কাজ করছিলেন স্থানীয় কৃষকরা। আর সীমান্তের দুপাশে বিজিবি ও বিএসএফ সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছিলেন। তবে অভ্যস্ত হয়ে যাওয়ায় ভীতি কাজ করে না কৃষকদের মাঝে।
ভারত সীমান্তের পিলারের কাছে মাঠে টমেটোর জমিতে নিড়ানি দিচ্ছিলেন পঞ্চাষোর্ধ এক কৃষক। তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, আগে ভাঙাড়ির ব্যবসা করতাম। কয়েক বছর আগে ওই ব্যবসায় সাড়ে ৮ লাখ টাকা লস খেয়ে একেবারে নিঃস্ব হয়ে যাই। পরে চরে ফিরে এসে জমিতে ফসল করা শুরু করি। ওই কৃষক বলেন, টমেটো, ধান, গম আর আলুর ওপর দিয়েই আমার সংসার চালাচ্ছি। এই টাকায় মেয়ের বিয়ে দিয়েছি। এই আবাদ করে খেয়ে-দেয়ে বিক্রি করি। দুবিঘা জমিতে আমার সব খরচ বাদ দিয়ে বছরে ৫-৭ লাখ টাকা লাভ থাকে। আমার আর কোনো অভাব নাই।
আরও পড়ুন: ময়মনসিংহে আমনের ভালো ফলন ও দামে খুশি চাষিরা
এসি/ আই.কে.জে/
খবরটি শেয়ার করুন