বুধবার, ২রা এপ্রিল ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
১৯শে চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ

*** ড. ইউনূসের সেভেন সিস্টার্স নিয়ে বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিলেন হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ *** 'সেভেন সিস্টার্স' নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার মন্তব্যে 'ঝড়' থামছে না ভারতে *** বিমসটেক সম্মেলনে ড. ইউনূস ও নরেন্দ্র মোদির বৈঠক হচ্ছে *** 'সংখ্যালঘু সদস্য হিসেবে এখন কতটা নিরাপদ' প্রশ্নে যা বললেন দেবপ্রিয় *** ছেলে তারেকের পরিবারের সঙ্গে লন্ডনের পার্কে ঘুরতে বেরিয়েছেন খালেদা জিয়া *** ভারতের বদলে প্রধান উপদেষ্টার প্রথম দ্বিপাক্ষিক সফর চীনে কেন, ব্যাখ্যা দিলেন ড. দেবপ্রিয় *** মরণোত্তর অঙ্গদানে নিবন্ধন করেছেন ৭০ লাখের বেশি চীনা *** ইউনূস-মোদির বৈঠক হওয়ার যথেষ্ট সম্ভাবনা আছে *** চাঁদরাত উৎসব, ঈদ মিছিল প্রসঙ্গে যা বলছেন সংস্কৃতি উপদেষ্টা *** নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে ‘নতুন বাংলাদেশে উগ্রবাদ উত্থানের’ প্রসঙ্গে যা বলা হয়েছে

ভূমিকম্পের ঝুঁকিতে বাংলাদেশ

উপ-সম্পাদকীয়

🕒 প্রকাশ: ০৪:২০ অপরাহ্ন, ৯ই মার্চ ২০২৫

#

ছবি: সংগৃহীত

চলতি বছরে বেশ কয়েকবার ছোট ও মাঝারি ধরনের ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। যদিও সেগুলোর উৎপত্তিস্থল বাংলাদেশে ছিল না। ভারত, চীন, নেপাল, ভুটান ও মিয়ানমারে উৎপত্তিস্থল ছিল। তবে বাংলাদেশ বড় ধরনের ভূমিকম্পের ঝুঁকিতে রয়েছে।

সরকার সারাদেশকে ঝুঁকিপ্রবণ তিনটি ভাগে ভাগ করেছে। তার মধ্যে উচ্চ ঝুঁকিসম্পন্ন জেলাগুলো হলো- সিলেট, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, শেরপুর ও নেত্রকোনা। মধ্যম ঝুঁকিতে রয়েছে চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চল, টাঙ্গাইল, গাজীপুর, ঢাকা, মুন্সিগঞ্জ, বগুড়া, গাইবান্ধা, রংপুর ও কুড়িগ্রাম।

এর বাইরে দেশের অন্যান্য এলাকাগুলো কম ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। সেজন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জরুরি ভিত্তিতে এসব ঝুঁকিপ্রবণ স্থানগুলোর মানুষকে সচেতন করার পাশাপাশি করণীয় জানাতে হবে। ভূমিকম্প মোকাবিলার প্রস্তুতি ও প্রশিক্ষণ দিতে হবে।

জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনায় (২০২১-’২৫) বলা হয়েছে, বাংলাদেশে যদি বড় মাত্রার ভূমিকম্প হয়, তাহলে সারাদেশের ৬ কোটি ১২ লাখ মানুষ ক্ষতির মুখে পড়বে। সে অনুযায়ী, সরকারের প্রস্তুতি কোথায়? তাই ভূমিকম্পের সম্ভাব্য ঝুঁকি প্রশমনে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ ও সামাজিক সচেতনতা গড়ে তোলার এখনই সময়।

কয়েক বছর আগে তুরস্ক ও সিরিয়ায় ভয়াবহ ভূমিকম্পের ঘটনা বাংলাদেশের জন্য শিক্ষণীয় হতে পারে। বিশেষ করে, রাজধানী ঢাকার বেলায় আশঙ্কা সবচেয়ে বেশি। ভূতাত্ত্বিক বিশেষজ্ঞদের মতে, ভূতাত্ত্বিক গঠন অনুসারে ঢাকা মধুপুর ফল্ট বা বিভাজনের মধ্যে অবস্থিত। এখানে প্রতিনিয়ত মাটির গভীরে টেকটোনিক প্রতিক্রিয়া বিরাজমান।

ঢাকা বুড়িগঙ্গা নদী ও তুরাগ নদবেষ্টিত একটি শহর। এই দুইটি নদ-নদী মধুপুর টেকটোনিক বিভাজনের প্রতিক্রিয়ায় সৃষ্টি হয়েছে। প্রাকৃতিকভাবেই ঢাকা এবং এর পার্শ্ববর্তী এলাকায় টেকটোনিক প্রতিক্রিয়া চলমান থাকায় বড় ধরনের ভূমিকম্পের আশঙ্কা রয়েছে।

গত দুই দশকে ঢাকায় নগরায়ণ বেড়েছে ২৭ শতাংশ। জলাশয়ের আয়তন কমেছে প্রায় ২০ শতাংশ। এছাড়া ২০১১ সালে ঢাকায় এক কোটি ২০ লাখ লোকের বাসস্থান থাকলেও বর্তমানে তা প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। ফলে বড় ধরনের ভূমিকম্পে রাজধানী ঢাকার জানমালের ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হতে পারে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ ও গবেষণা কেন্দ্রের হিসাব অনুযায়ী, ২০১৭ সালে বাংলাদেশে এবং কাছাকাছি এলাকায় ২৮টি ভূমিকম্প হয়। ২০২৩ সালে এর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৪১টি এবং গত বছর ৫৩টি ভূমিকম্প হয়েছে। যা ছিল বিগত এক দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ।

এমতাবস্থায় বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ছোট ও মাঝারি ধরনের ভূকম্পনের কারণে যে কোনো সময় একটি বড় ভূমিকম্প হতে পারে। যদি সাত মাত্রার ভূমিকম্প সংগঠিত হয়, তাহলে রাজধানী ঢাকার ৪০ শতাংশ বাড়িঘর ধ্বংস হবে। 

মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএসজিএসের তথ্যমতে, বাংলাদেশ ভূকম্পনের সক্রিয় এলাকায় অবস্থিত। দুর্যোগ সূচক অনুযায়ী, বিশ্বব্যাপী ভূমিকম্পের জন্য সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ২০টি শহরের মধ্যে রয়েছে ঢাকা।

ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞরা আরো বলছেন, বার্মিজ প্লেট ও ইন্ডিয়ান প্লেটের পরস্পরমুখী গতির কারণেই ঘন ঘন ভূমিকম্প হচ্ছে। এই দুই প্লেটের সংযোগস্থলে প্রচুর পরিমাণে শক্তি জমে আছে, যা বের হয়ে আসার পথ খুঁজছে।

ভূমিকম্পের পূর্বাভাস দেওয়া যায় না। তাই তা হলে ক্ষতি নিশ্চিত। এক্ষেত্রে ক্ষয়-ক্ষতি কমিয়ে আনার প্রক্রিয়া বের করতে হবে। ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় ভূমিকম্প সহনশীল ভবন তৈরি করতে হবে। জনসচেতনতা তৈরি করতে হবে এবং করণীয় সম্পর্কে জানাতে হবে।

এইচ.এস/


ভূমিকম্প

সুখবর এর নিউজ পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

খবরটি শেয়ার করুন