ছবি: সংগৃহীত
অবৈধ সম্পদ অর্জন ও গোপন করার অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের মামলার একদিন পর জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সদস্য মোহাম্মদ বেলাল হোসাইন চৌধুরীকে কাস্টমস, এক্সাইজ ও মূসক ট্রাইব্যুনালের প্রেসিডেন্ট পদে বদলি করা হয়েছে।
আজ বুধবার (৮ই অক্টোবর) অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ এ আদেশ জারি করে মোহাম্মদ বেলাল হোসাইন চৌধুরীকে সদস্য (মূসক বাস্তবায়ন ও আইটি) থেকে ট্রাইব্যুনালে বদলি করে। 'জারিকৃত এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে' বলে উল্লেখ করা হয়।
গতকাল ৫ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন ও গোপনের অভিযোগে দুদকের উপপরিচালক মো. সাইদুজ্জামান বাদী হয়ে সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকায় এ মামলা করেন।
কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট আপিল ট্রাইব্যুনাল এনবিআরের অধীনে একটি আধা-বিচারিক প্রতিষ্ঠান। যার মূল কাজ হলো আপিল শুনানি ও নিষ্পত্তি। সারাদেশের কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট সংক্রান্ত বিষয়ে কমিশনার (আপিল) বা অন্যান্য কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তে অসন্তুষ্ট করদাতারা বা ব্যবসায়ীরা এখানে আপিল করতে পারেন।
ট্রাইব্যুনালের প্রেসিডেন্ট আপিল শুনানি পরিচালনা ও রায়ের মাধ্যমে শুল্ক ও ভ্যাট সংক্রান্ত বিরোধ নিষ্পত্তি করেন।
দুদকের মামলার সঙ্গে বদলির সম্পর্ক রয়েছে কি না—জানতে চাইলে অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সচিব ও এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান বলেন, 'বদলি একটি দপ্তরের নিয়মিত কাজের অংশ। তবে এখানে দুদকের মামলারও একটা ভূমিকা আছে।'
এ বিষয়ে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, 'সুনির্দিষ্ট অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে মামলা হওয়ার পর কাউকে অন্যত্র বদলি করা গ্রহণযোগ্য নয়। এ ধরনের বদলির মানে হলো, তার অপকর্মের ক্ষেত্র পরিবর্তন করে নতুন করে সুযোগ দেওয়া।'
তিনি বলেন, 'সরকারের উচিত হবে, দুদকের মামলার বিচারকার্য শেষ না হওয়া পর্যন্ত ওই কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করে রাখা। ন্যায় ও সুশাসনের স্বার্থে অবশ্যই অভিযুক্ত কর্মকর্তাকে বদলির আদেশ স্থগিত করে সাময়িক বরখাস্ত করতে হবে।'
সম্প্রতি প্রশিক্ষণের সরকারি আদেশ (জিও) ব্যবহার করে অস্ট্রেলিয়ায় ভ্রমণ করায় বিতর্কিত হন এনবিআর সদস্য বেলাল চৌধুরী। এ নিয়ে কারণ দর্শানোর নোটিশের জবাব দিতে সময় বৃদ্ধির আবেদনও করেছেন তিনি।
তার বিরুদ্ধে দুদকের মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, দায়িত্ব পালনকালে তিনি অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে বিপুল অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন, সম্পদ বিবরণীতে মিথ্যা তথ্য দিয়েছেন এবং প্রায় ৫ কোটি টাকার সম্পদ গোপন করেছেন।
তদন্তে ঢাকা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও নোয়াখালীতে তার নামে জমি, ফ্ল্যাট, প্লট ও কোম্পানির শেয়ার কেনার তথ্য পাওয়া গেছে বলে দুদকের মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে।
খবরটি শেয়ার করুন